Ajker Patrika

উপ-উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করা শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বললেন রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাইন উদ্দিনসহ তিন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে যে শিক্ষার্থীরা লাঞ্ছিত করেছেন, তাঁদের সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিয়েছেন অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডাকা কর্মবিরতি চলাকালে রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি ‘ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তা না হলে টানা আন্দোলন কর্মসূচি চলবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।

তবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর যে রাকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তা এই আন্দোলন কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে বলেও মুক্তার হোসেন ঘোষণা দেন। বলেন, ‘রাকসু আমাদের অহংকার। আমাদের অফিসার্স সমিতির ৯০ শতাংশ এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। তাই রাকসু নির্বাচনের সব কর্মসূচি আমরা আন্দোলন থেকে বাইরে রেখেছি। অন্তর্ভুক্ত রাখি নাই। আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম চলাকালে রাকসু নির্বাচনের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে।’

শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির জন্য রাখা পোষ্য কোটা নিয়ে শনিবার জুবেরী ভবনে রাবি প্রশাসনে থাকা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি প্রসঙ্গেও তিনি কথা বলেন। মুক্তার হোসেন বলেন, ‘গতকাল একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা অনেকে দেখেছেন। আমরা প্রত্যক্ষদর্শী, অনেকে মিডিয়ায় দেখেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ দ্বিতীয় ব্যক্তি মাননীয় উপ-উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছুসংখ্যক নামধারী ছাত্রের যে কর্মকাণ্ড হয়েছে, তাতে কি এদের ছাত্র বলা যায়? এরা সন্ত্রাসী। এরা সন্ত্রাস করেছে এবং এদের উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক গতিকে অচল রাখার একটা চক্রান্তের অংশ।’

তিনি বলেন, ‘সেই সব সন্ত্রাসীর দ্বারা আমাদের তিনজন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। একজন শিক্ষককে আমাদের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। আমাদের ছাত্র ভাইদের বোঝা উচিত, তাদের সঙ্গে ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী আছে। তারা কি চায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হোক? যদি না চায়, তাহলে তাদেরও আমাদের সাইডে আসা উচিত। এখানে কোনো সন্ত্রাসী থাকতে পারবে না, কোনো চাঁদাবাজ থাকতে পারবে না।’

মুক্তার বলেন, ‘এসব ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যদি না হয়, আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাব।’

রাবিতে আগে থেকেই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। এই কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তা বাতিল ঘোষণা করে প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীও দফায় দফায় আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন তা বহাল করার জন্য। তাদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিটও করা হয়। এ অবস্থায় রাকসু নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) শর্ত সাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় (পোষ্য কোটা) কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এর পরই বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিনসহ তিনজন কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন। ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও পোষ্য কোটা-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সালাউদ্দিন আম্মার ফেসবুকে কিছু ছবি পোস্ট করে লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর গায়ে হাত তুলেছে। আসন্ন রাকসু নির্বাচনে আম্মার স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

বিকেলের ওই ঘটনার পর রাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। হল থেকে বের হয়ে আসেন ছাত্রীরাও। তাঁরা মাঝরাত পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। মাঝরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে ঘোষণা দেওয়া হয়, পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আজ রোববার সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দেড় বছরে পুলিশের যে ক্ষতি হয়েছে, ৫০ বছরেও পুনরুদ্ধার কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা

ফুটবলাররা পানি না গিলে কুলি করেন কেন

চট্টগ্রামে সিকদার বাড়িতে অভিযান, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বিদেশে সম্পদ অর্জনের ২৩ বস্তা আলামত জব্দ

নেপাল পুলিশের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নেই, জেন-জি বিক্ষোভে গুলি ছুড়ল কারা—ষড়যন্ত্রের অভিযোগ কে পি শর্মার

জাপাকে যে দোষ দেওয়া হচ্ছে, তার বড় ভাগীদার বিএনপি-জামায়াত: আনিসুল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত