Ajker Patrika

রাজশাহীর ৯৯ ভাগ কীটনাশকের দোকানে নিষিদ্ধ ওষুধ, হুমকিতে পরিবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে বারসিকের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে বারসিকের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ কীটনাশক ও বালাইনাশক। সরকার নিষিদ্ধ করলেও নানা নামে এসব কীটনাশক বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ৯৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ ব্যবহারকারীই জানেন না এটি নিষিদ্ধ ও বিপজ্জনক।

চলতি বছর রাজশাহীতে ‘জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাববিষয়ক মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানমূলক সমীক্ষা’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমন চিত্র উঠে এসেছে। সমীক্ষাটি করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বারসিক)

আজ বুধবার রাজশাহী নগরীর একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক সমন্বয়ক শহিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রাজশাহীর আটটি উপজেলার ১৯টি কৃষিপ্রধান গ্রামাঞ্চলে মাঠপর্যায়ে তথ্য সংগ্রহ, ভুক্তভোগীদের কেস স্টাডি, স্থানীয় কীটনাশক ডিলার, দোকানদার, পরিবেশক, উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষাটি করা হয়েছে।

এতে দেখা গেছে, নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে শতকরা ৬৮ শতাংশ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর কীটনাশকের ৯৯ ভাগ দোকানেই দেশে নিষিদ্ধ হওয়া কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। এসব নাম দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নিষিদ্ধ, কিন্তু বোতলের গায়ে নিচের দিকে জেনেরিক নাম খুব ছোট করে লেখা থাকে।

দেশে-বিদেশে নিষিদ্ধ যেসব কীটনাশক এখনো বিক্রি হচ্ছে, সেগুলো হলো জিরো হার্ব ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), ফুরাডান ৫জি (কার্বোরাইল), এরোক্সান ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট), গ্যাস ট্যাবলেট (অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড), কার্বোফোরান ৩ জিএসিআই (কার্বোফোরান) ইঁদুর মারার বিষ (বডিফ্যাকোয়াম) ও তালাফ ২০ এসএল (প্যারাকোয়াট)।

এই প্যারাকোয়াট বা ঘাস মারার বিষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকে না বুঝে এগুলো আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে পান করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজারে অহরহ এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া যাচ্ছে, যেটির জন্য সরকারের কোনো তদারকি নেই। এসব নিষিদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক কীভাবে বাজারে বিক্রি হয়, কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী, সে বিষয়েও সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্ন তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিষিদ্ধ কিছু কীটনাশকও আনা হয়। এগুলো যে দোকান থেকে কেনা হয়েছে, তার রসিদও দেখানো হয়। এসব দেখিয়ে নির্বাহী পরিচালক পাভেল পার্থ বলেন, ‘এগুলো তো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কিনেছি। রসিদও আছে। কিন্তু এগুলো নিষিদ্ধ, অথচ আমরা এগুলো হাজির করতে বাধ্য হয়েছি। এই গবেষণা একটি ফৌজদারি অপরাধকে খুঁজে পেয়েছে। কিন্তু সে বিষয়ে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, সেটাই বড় প্রশ্ন।’

সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করা, কীটনাশক আইন ও বিধির প্রয়োগ করা, কীটনাশক-সম্পর্কিত স্বাস্থ্য তথ্য নিবন্ধন করা, কীটনাশকের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

সখীপুরে সন্তানদের সামনেই ছুরিকাঘাতে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী পলাতক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত