Ajker Patrika

অসময়ে যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপারের মানুষ

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৫১
অসময়ে যমুনার ভাঙনে দিশেহারা নদীপারের মানুষ

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙনে দিশেহারা নদীপারের মানুষ। আকস্মিকভাবে নদীভাঙন শুরু হয়েছে প্রায় ১০ দিন হলো। চৈত্র মাসে শান্ত-স্নিগ্ধ যমুনা নদী হঠাৎ যেন যৌবন ফিরে পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহের ভাঙনে চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি ও ৩০টি বসতবাড়ি এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। 

বিনানই গ্রামের পাঁচটি ও চরসলিমাবাদ গ্রামের ২৫টি বসতবাড়ি যমুনায় গ্রাস করেছে মাত্র কয়েক দিনে। ভাঙন-আতঙ্কে পবিত্র রমজান ও ঈদকে ঘিরে বাঘুটিয়া ইউনিয়নবাসী। ঘর ও মালামাল হেফাজত করতে গিয়ে কর্মহীন হয়ে পরেছেন ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ। 

ভাঙন হুমকিতে পড়েছে মিটুয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিটুয়ানী হাইস্কুল, চরবিনানই সপ্রাবি, সম্ভুদিয়া সপ্রাবি, সম্ভুদিয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, সম্ভুদিয়া আজিজিয়া আলিম মাদ্রাসা, মঞ্জুর কাদের কলেজ সম্ভুদিয়া, বাঘুটিয়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চর সলিমাবাদ সপ্রাবি, চরসলিমাবাদ দাখিল মাদ্রাসা, চর সলিমাবাদ বাজার, ভূতের মোড় নৌঘাট, কবরস্থান, পয়লা দাখিল মাদ্রাসা, পয়লা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, চৌবাড়িয়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পয়লা সপ্রাবি, কাঁচাপাকা বিভিন্ন স্থাপনাসহ আবাদি জমি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, জমিতে লকলকে বেড়ে ওঠা বাড়ন্ত ধানসহ অন্যান্য খেতের অপ্রাপ্ত গাছগুলো কাটছেন চাষিরা।

এ নিয়ে কথা হয় ঘুশুরিয়া গ্রামের কৃষক ফজলুল হক ও ছামাদ সিকদারের সঙ্গে। তাঁরা জানান, প্রায় চার বছর আগে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন বিনানই ও চর সলিমাবাদ গ্রামে। এ নিয়ে পাঁচবার নদীভাঙনের কবলে পড়েছেন তাঁরা। একসময় পৈতৃক বসতবাড়ি আর কিছু জমি থাকলেও এখন তাঁরা ভূমিহীন উদ্বাস্তু। তাঁদের ভাগ্যকে যেন গ্রাস করেছে রাক্ষসী যমুনায়।

বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই গ্রামের বাসিন্দা জব্বার আলী জানান, এ মৌসুমে যমুনা নদীর এমন তাণ্ডবলীলা এলাকাবাসী দেখেনি আগে। চৈত্র-বৈশাখ মাসে যমুনা নদী মরুভূমি হয়ে থাকত, কিন্তু এ বছর ব্যাপক পানি বৃদ্ধি হয়েছে, ফলে শুরু হয়েছে তীব্র নদীভাঙন।

জব্বার আলী আরও বলেন, ‘দুর্গত মানুষের আহাজারি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সরকারি দপ্তরে পৌঁছাচ্ছে না। আর কত বাড়ি, প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি বিলীন হলে বেড়িবাঁধ ও স্রোতের মুখে ডাম্পিং করা হবে?’

সম্ভুদিয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাঘুটিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাহহার সিদ্দিকী বলেন, কয়েক বছর ধরে এলাকাবাসী নদীভাঙন রোধ প্রকল্পের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। তবু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। এভাবে চলতে শুরু আগামী কয়েক বছরেই চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চল সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (চৌহালী-বেলকুচি) দায়িত্বপ্রাপ্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিলটন হোসেন বলেন, জরুরি জিও ব্যাগ ডাম্পিং প্রকল্পের জন্য আবেদন দেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে জমা আছে, যা আগামী ২০ তারিখে মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে প্রকল্পটি উঠবে।

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত