Ajker Patrika

পাবনার চাটমোহর

রাজমিস্ত্রি থেকে কোটিপতি

  • টিনের ঘরের জায়গায় এখন কোটি টাকার তিনতলা বাড়ি।
  • ছিল না তেমন জমিজমা, বাবাও ছিলেন দিনমজুর।
শুভাষীশ ভট্টাচার্য, চাটমোহর­­শাহীন রহমান, পাবনা
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৭: ৫২
অভিযুক্ত নূর আলীর কোটি টাকার বিলাসবহুল বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযুক্ত নূর আলীর কোটি টাকার বিলাসবহুল বাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

দরিদ্র পরিবারের সন্তান নুর আলী (৪৭)। করতেন রাজমিস্ত্রির কাজ। জমিজমা তেমন ছিল না, বাবাও ছিলেন দিনমজুর। বাড়ি বলতে ছিল আধা পাকা টিনের ঘর। অথচ ১০ বছরের ব্যবধানে সেই ব্যক্তি কোটিপতি বনে গেছেন। শুধু তা-ই নয়। আধা পাকা টিনের ঘরের জায়গায় এখন বিশাল তিনতলা আলিশান বাড়ি। যার মূল্য কোটি টাকা।

অভিযোগ উঠেছে, এনজিওর ব্যবসা করে বিভিন্ন মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে তিনি এত সম্পদের মালিক হয়েছেন। প্রতারণার শিকার হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও সমবায় অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত নুর আলী পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত ছাকাত প্রামাণিকের ছেলে। তাঁর সঙ্গে জড়িত স্ত্রী লাইলী খাতুন (৩৩)।

অভিযোগে জানা গেছে, চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে পঞ্চম নুর আলী। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় পড়াশোনায় খুব একটা এগোতে পারেননি। অল্প বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয়। প্রথমে বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। তাঁর বাবাও দিনমজুরি করতেন। সংসার চলত টেনেটুনে। একপর্যায়ে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন নুর আলী। এভাবে চলার একপর্যায়ে ২০০৮ সালে ‘বোঁথড় ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের একটি এনজিও চালু করেন।

এরপরই যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান নুর আলী ও তাঁর স্ত্রী। কিস্তির মাধ্যমে ঘরের তৈজসপত্র বিক্রি ও ঋণদান কার্যক্রম শুরু করেন। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আসতে থাকে নগদ টাকা। সেই সঙ্গে লভ্যাংশ দেওয়ার নামে সঙ্গে নেন কয়েকজন অংশীদার। যাঁরা এনজিওটিতে লাখ লাখ টাকা লগ্নি করেন। সব মিলিয়ে কয়েক বছরেই ফুলেফেঁপে ওঠে নুর আলীর জীবন-জীবিকা। যাঁরা টাকা লগ্নি করেছিলেন, তাঁদের অনেককে কয়েক বছর লভ্যাংশ দেওয়ার পর বন্ধ করে দেন। কেউ চাকরি ছেড়ে দিলে তাঁর ডিপিএসের টাকা আটকে দেন। এর মধ্যে ২০১০ সালে একতলা আধা পাকা টিনশেড ঘরের জায়গায় কোটি টাকা খরচ করে তিনতলা আলিশান বাড়ির কাজ শুরু করেন নুর আলী। ব্যাংকেও জমতে থাকে টাকা। এর মধ্যে নিজ এলাকায় কিছু জায়গাও কেনেন প্রায় ৩০ লাখ টাকায়।

এনজিওটির দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৪ সালে তাঁদের মোট আয় ৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৪৭ টাকা। আর ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত তাঁদের দায়দেনা মূলধন ২৬ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৯ টাকা।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, নুর আলীর এনজিওতে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার আহ্বানে সেখানে সদস্য হয়ে পুঁজি বিনিয়োগ করেন বেড়া উপজেলার নাটিয়াবাড়ি গ্রামের মৃত আলহাজ মোকছেদ আলীর মেয়ে তাহমিনা খাতুন। প্রথমে এক লাখ ৬৮ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। ৫ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত তাহমিনাকে ঠিকমতো মুনাফা দিয়েছেন নুর আলী। পরবর্তী সময়ে বার্ষিক শতকরা ১২ টাকা লভ্যাংশের শর্তে ১৯-০৯- ২০২১ তারিখে ২৮ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট প্রকল্প (এফডিআর) এ জমা রাখেন তাহমিনা খাতুন।

তাহমিনা খাতুন বলেন, ‘এই ফিক্সড ডিপোজিটের টাকার ওপর কয়েক মাসের লভ্যাংশ দেওয়ার পর ২২ মাস ধরে লভ্যাংশ দিচ্ছেন না নুর আলী ও তাঁর স্ত্রী লাইলী খাতুন। আসল টাকা চাইলে তাও ফেরত দিচ্ছেন না। বারবার তাগাদা দিলেও তাঁরা কোনো কর্ণপাত করছেন না। সব মিলিয়ে চলতি বছরের গত মে মাস পর্যন্ত তাঁদের কাছে আমার পাওনা ৩৬ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ টাকা। পরে বাধ্য হয়ে পাবনা জেলা ও চাটমোহর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা এবং ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

চাটমোহর উপজেলার বোঁথড় গ্রামের খোকনের স্ত্রী মিনা রানী বলেন, ১৫-০৭-২০১৭ থেকে ০১-০২-২০২০ তারিখ পর্যন্ত নুর আলীর এনজিওতে মাঠকর্মীর চাকরি করতেন তিনি। চাকরিকালে জামানত হিসেবে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলে প্রতি মাসে তাঁর বেতনের ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা কেটে রাখতেন তাঁরা। সঞ্চয়ী বই নম্বর ১৪৭। সেই হিসাব নম্বরে মোট ৯ হাজার ৯০৮ টাকা জমা হয়। ঋণের কিস্তির টাকা তুলতে না পেরে নুর আলী ও তাঁর স্ত্রী মিনা রানীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে তাঁকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত মিনা রানীর সেই জামানতের টাকা ফেরত দেননি তাঁরা।

বোঁথড় গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা দেখেছি সে (নুর আলী) রাজমিস্ত্রির কাজ করত। খুব দুর্দিন গেছে একসময়। খেয়ে না খেয়ে দিন গেছে তাদের। আমি বিদেশ চলে যাই। ঘুরে এসে দেখি তার ওখানে তিনতলা বিশাল বাড়ি। পরপর দুইটা জমিও কিনেছে।’

স্থানীয় ইউনুস আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে সে আজ কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক। বাড়ির মূল্যই প্রায় ১ কোটি টাকা।’

জানতে চাইলে নুর আলীর স্ত্রী লাইলী খাতুন বলেন, ‘মিনা রানীর চাকরি আমরা বাদ দেই নাই। সে নিজের ইচ্ছায় ছেড়ে গেছে। সে এখন আসুক, আমার এখানে এক মাস কাজ করুক, এলাকাটা আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে যাক। ৩০ দিনের দিন ওর পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেব। আর যে জমি কিনেছিলাম সে জমি পরে টাকার প্রয়োজনে আমরা বিক্রি করে দিয়েছি।’

নুর আলী বলেন, ‘আমাদের সমিতির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। তাহমিনাও জানেন। করোনার পর থেকে আমরা খুব সমস্যায় পড়ে গেছি। ঋণ নিয়ে অনেক মানুষ টাকা দিচ্ছে না। অনেকে পালিয়ে গেছে। তাহমিনা টাকা পাবে, এটা সঠিক। তাদের কাছে ৬ মাস সময় চেয়েছি। ধীরে ধীরে টাকা পরিশোধ করে দেব। কিন্তু তারা মানছে না। আর আমার বাড়ি তো একবারে করি নাই। কয়েক বছর ধরে আস্তে আস্তে করেছি। কত টাকা খরচ হয়েছে বাড়ি করতে জানতে চাইলে নুর আলী বলেন, সেটা হিসাব করি নাই।’

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা সমবায় অফিসার মুর্শিদা খাতুন বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তা জেলা অফিসে অবগত করেছি। এ বিষয়ে জেলা থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে আমাদের অবগত করবে। তদন্তের পর সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে।’

ইউএনও মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা সমবায় অধিদপ্তরকে সংযুক্ত করে বিষয়টির তদন্ত ও পর্যালোচনা করব। তারপর অভিযোগের প্রমাণ পেলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আমাদের এখতিয়ার মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের মরদেহ উদ্ধার

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. ইউনুসের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালি সড়কের মাথার ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. ইউনুস (৫৫) টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলীপাড়া এলাকার হাছন আলীর ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘সকালে লেদা বাজার যাওয়ার পথে রঙিখালি ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে জানা যায়, মরদেহটি সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুস মেম্বারের।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত