Ajker Patrika

৩৬ দিন ধরে নিখোঁজ স্কুলছাত্র, আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
৩৬ দিন ধরে নিখোঁজ স্কুলছাত্র, আসামীকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাগলা থানা এলাকায় নিখোঁজের ৩৬ দিন পরও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্র শান্ত মিয়া (১৪)। সেই সঙ্গে স্কুলছাত্রের পরিবার তিনজনকে আসামি করে আদালতের মাধ্যমে পাগলা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করলেও মামলার প্রধান আসামিকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাগলা থানা-পুলিশের বিরুদ্ধে। 

নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মা শিরিনা আক্তারের অভিযোগ করে জানান, গতকাল রোববার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন প্রধান আসামি গ্রাম পুলিশ খোকা মিয়াকে (৫০) আটক করে টাংগাব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। খবর পেয়ে শান্তর মা ও তার স্বজনেরা টাংগাব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের মাঠে গিয়ে উপস্থিত হন। একপর্যায়ে তাদের সামনেই আসামি খোকা মিয়াকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। এ সময় মামলার বাদী ও উপস্থিত লোকজন আসামিকে থানায় নিয়ে যাওয়ার দাবি জানালে ওই এসআই পুলিশ ধমক দিয়ে তাদের সরিয়ে দেন। উৎসুক জনতা মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা তাদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবি ও ভিডিও মুছে দেয়। 
 
দায়ের করা মামলা ও নিখোঁজের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাশিয়া গ্রামের সৌদিপ্রবাসী আতাউর রহমানের ছেলে শান্ত দত্তেরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। গত ২২ জুলাই (শুক্রবার) সকাল ১০টার দিকে টাংগাব ইউনিয়নের বামনখালি গ্রামে নানার বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে আসার সময় সে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় গত ২৩ জুলাই (শনিবার) পাগলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন শান্তর মা। ছেলের সন্ধান না পেয়ে গত ২৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) ময়মনসিংহ জেলা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিশাত জাহান চৌধুরীর আদালতে নালিশি দরখাস্ত দেন। গত ৪ আগস্ট আদালত নালিশি দরখাস্তটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে মামলা রুজু করার জন্য পাগলা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। গত ৯ আগস্ট বাশিয়া গ্রামের খোকা মিয়া, তার মেয়ে শরমিতা (২৮) ও পার্শ্ববর্তী বিরই গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪০) ও অজ্ঞাতনামা আরও ২-৩ জনকে আসামি করে পাগলা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘদিনেও স্কুলছাত্রের সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার দুশ্চিন্তায় রয়েছে। 

নিখোঁজ স্কুলছাত্র শান্তর মা শিরিনা আক্তার বলেন, ‘থানা-পুলিশের পরামর্শেই প্রথমে সাধারণ ডায়েরি করি। পরে আদালতের নির্দেশে থানা-পুলিশ অপহরণ মামলা নেয়। দীর্ঘদিনেও পুলিশ আমার ছেলে নিখোঁজের ব্যাপারে কিছু জানতে পারেনি। প্রধান আসামিকে আটক করেও ছেড়ে দিয়েছে। আসামিপক্ষ মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কামাল হোসেন বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ খোকা মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে আনা হয়েছিল। সম্ভবত গ্রাম পুলিশের মেয়ে শরমিতার (২৮) সঙ্গে শান্তর প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।’ 

এ বিষয়ে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘শান্তকে খুঁজে বের করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত