Ajker Patrika

সন্ধ্যা হলেই আমন খেতে চলে আসে বন্য হাতির পাল, দিশেহারা কৃষক

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে ফসলের খেত নষ্ট করছে বন্য হাতির পাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে ফসলের খেত নষ্ট করছে বন্য হাতির পাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ধ্যা হলেই খাবারের সন্ধানে ফসলের খেতে চলে আসছে ৩০-৩৫টি বন্য হাতি। গত কয়েকদিনে বন্য হাতির পালের তাণ্ডবে উপজেলার পশ্চিম সমশ্চুড়া এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ১৭ জন কৃষকের প্রায় ৮ একর ৪০ শতক আমন ধানখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় ওই গ্রামের কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

বন বিভাগ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত রোববার রাতে ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী পাহাড় থেকে ৩০-৩৫টি বন্য হাতি পশ্চিম সমশ্চুড়া জঙ্গলে নেমে আসে। গত তিন-চার দিন ধরে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে হাতির পালটি পাহাড়ের ঢালে আমনের ফসলে হানা দিয়েছে। হাতির দল ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে খেতের ফসল নষ্ট করে ফেলছে।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, পাহাড়ের ঢালে পশ্চিম সমশ্চুড়া গ্রামে শতাধিক কৃষক ১৫০ একর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় এখন তাঁদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। তাঁরা হাতি তাড়াতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

জানা গেছে, বন্য হাতির পালটি পশ্চিম সমশ্চুড়া এলাকার আক্কেল আলীর ৪০ শতক, সাইদ মিয়ার ৪০ শতক, মোশাররফ হোসেনের ৯০ শতক, শফিকুল ইসলামের ২৫ শতক, বধুমিয়ার ২৫ শতক, অনিল কোচের ১০০ শতক, রিপন মিয়ার ২৫ শতক, মামুন মিয়ার ২৫ শতক, সেলিম মিয়ার ৪০ শতক, আব্দুল মজিদের ২৫ শতক, আব্দুল মতিনের ৬০ শতক, বিল্লাল হোসেনের ১০০ শতক, ইজ্জত আলীর ২৫ শতক, বাবুল মিয়ার ৮০ শতক, হিটলার উদ্দিনের ১০০ শতক, আইয়ুব আলীর ১৫ শতক ও আব্দুল হকের ২৫ শতক জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আয়ুব আলী (৬৫) বলেন, ‘ফসল রক্ষায় গ্রামের লোকজনকে মিলে সারা রাত হাতি পাহারা দিতে হচ্ছে। রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আমার তিন একর ফসলের মধ্যে গতকাল রাতে এক একর জমির ফসল খেয়ে আর পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে হাতিগুলো।’

ওমর ফারুক নামের এক গ্রামবাসী বলেন, গত রোববার থেকে ৩০ থেকে ৩৫টি হাতির একটি পাল এসেছে। তারা আগের চেয়ে বেপরোয়া হয়ে গেছে। গতকাল রাতে হাতির তাণ্ডবে ভয়ে নারী-শিশুদের ঘর থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল। সন্ধ্যা হলেই গ্রামবাসী হাতি নিয়ে আতঙ্কে থাকছেন।

সমশ্চুড়া গ্রামের এলিফেন্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি আরফান আলী বলেন, ‘দিনে হাতির দল জঙ্গলে থাকে, সন্ধ্যার আগে তারা খাদ্যের সন্ধানে পাহাড়ের ঢালে আমনের খেতে নেমে আসে। তবে কেউ যেন হাতিকে আঘাত না করে, তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের টিম সতর্ক রয়েছে।’

ময়মনসিংহ বন বিভাগের সমশ্চুড়া বিট কর্মকর্তা মো. কাওসার বলেন, গত কয়েক দিন ধরে ৩০ থেকে ৩৫টি বন্য হাতির একটি দল পশ্চিম সমশ্চুড়া জঙ্গলে অবস্থান করছে। খাদ্যের সন্ধানে কৃষকদের ফসলে হানা দিয়েছে। এতে ১৫ থেকে ২০ জন কৃষকের প্রায় ৮-৯ একর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিপূরণের জন্য কৃষকদের বন বিভাগের কাছে আবেদন করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত