Ajker Patrika

নির্বাচনী প্রচার মাইকে অতিষ্ঠ পরীক্ষার্থীরা

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৫৮
নির্বাচনী প্রচার মাইকে অতিষ্ঠ পরীক্ষার্থীরা

আগামী ২৮ নভেম্বর জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। বাকি রয়েছে মাত্র ছয় দিন। শেষ সময়ে পুরোদমে চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। আর এই প্রচারণার প্রতিযোগীয় বিধিবিধানের তোয়াক্কা করছেন না কেউই। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাইকে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। উচ্চশব্দের কারণে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারা। আর সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে চলতি এসএসসি ও আগামী ২ ডিসেম্বর অংশগ্রহণ করা এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। এই শোরগোলের মধ্যে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে তাদের। 

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ২৯ জন প্রার্থী। সাধারণ সদস্য (মেম্বার) পদে ১৯০ জন পুরুষ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৫৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, বেলা ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোটের প্রচারের নিয়ম থাকলেও তা চলছে সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। এতে অতিষ্ঠ চলমান পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকেরা। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, প্রার্থী আর তাঁদের সমর্থকেরা নির্বাচনী প্রচারে ততই বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। বিশেষ করে হাট-বাজার এলাকাগুলোতে প্রচার মাইকের শব্দ আর শব্দ। ফলে সন্তানদের ভালো পরীক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুর ১২টা থেকেই অধিকাংশ প্রার্থীর পক্ষে মাইকে ভোটের প্রচার চালানো হয়। রাত ৮টার পরেও মাইক বাজানো হয়। উপজেলা সদর, পলবান্ধা, গাইবান্ধা, গোয়ালেরচর, চরগোয়ালিনী, চরপুটিমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম একযোগে একাধিক মাইকে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাওয়া হচ্ছে। 

গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতের চর সরকারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট জিয়াউর রহমান জুয়েল জানান, সকাল থেকেই ভোটের মাইকের কারণে বিরক্ত তাঁরা। শব্দে বাড়িতে থাকাই দায় হয়ে পড়েছে তাঁদের। পরীক্ষার্থীরা ভালোভাবে পড়াশোনা করতে পারছেন না।

পরীক্ষার্থী রাজন, বেলাল, সুজন, শারমিন, আবিদা, সায়লা জানান, গভীর রাত পর্যন্ত চলে প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনী প্রচার মাইকের শব্দে পড়াশোনা করা মুশকিল হয়ে পড়ছে তাদের। 

গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মামারা গ্রামের আকবর আলী বলেন, তাঁর ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তাঁর ছেলের পড়াশোনায় সমস্যা হচ্ছে। এমনকি নামাজের সময়ও প্রচার মাইক বন্ধ করা হয় না। 

চরপুঁটিমারী ইউনিয়নের ডিগ্রিচর গ্রামের এইচএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক আবুল কালাম বলেন, দিনরাত উচ্চশব্দে মাইক বাজিয়ে মিছিল করা হচ্ছে। এতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের খুব ক্ষতি হচ্ছে। 

গাইবান্ধা ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আফছার আলী সরদার বলেন, `নির্বাচন অফিস থেকে প্রচারের বিষয়ে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা মেনেই প্রচার চালাচ্ছি। কিন্তু যারা সরকারদলীয় প্রার্থী, তাঁদের লোকজন প্রচারণায় নিয়ম মানছে না।' 

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোছা. হোসনে আরা বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ের বাইরে কেউ যেন ভোটের প্রচার চালাতে না পারেন, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন ভঙ্গ করে প্রচার চালানো হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত