Ajker Patrika

ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের পথে পথে ভোগান্তি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৪৩
ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের পথে পথে ভোগান্তি

গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে ঈদের কোনো আমেজ ছিল না। এ বছর করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ বেড়েছে। সঙ্গে পথে পথে ভোগান্তিও বেড়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের যানজটে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গতকাল শুক্রবার থেকে ঘরমুখী যাত্রীদের চাপ বাড়তে থাকে। কিন্তু ধীরগতিতে যান চলাচলের কারণে সবচেয়ে বেশি যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ভালুকা বাসস্ট্যান্ড, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, বৈইলর সিএনজি স্ট্যান্ড, শিকারীকান্দা বাইপাস মোড়, পাটগুদাম ব্রিজ মোড় ও শম্ভুগঞ্জ মোড়ে সবচেয়ে বেশি যানজট রয়েছে। যানজট নিরসনে পুলিশ তৎপর থাকলেও ভোগান্তি কমছে না। 

একই সঙ্গে যাত্রীদের কাছ থেকে তিন থেকে চারগুণ বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চালকেরা বলছেন, যানজটের কারণে রাস্তায় বেশি সময় গাড়ি নিয়ে বসে থাকতে হয়। তাই তাঁরা ভাড়া একটু বেশি নিচ্ছেন। 

ঢাকা থেকে আসা নেত্রকোনার মোহনগঞ্জগামী যাত্রী মোস্তাকিম হোসেন বলেন, ‘ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে ট্রেনে স্বাভাবিক ভাড়া দিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন ময়মনসিংহ থেকে মোহনগঞ্জে যাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা ভাড়া চাইছে।’ মোস্তাকিম হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা গার্মেন্টসে কাজ করি। এত টাকা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করলে আমরা ঈদ করব কীভাবে?’ 

গার্মেন্টসকর্মী রকি হাসান বলেন, ‘বেতন-বোনাসসহ যে টাকা পেয়েছি, তা দেখছি গাড়ি ভাড়ায় চলে যাবে। ঈদে কোনো আনন্দ করতে পারব না। ভাড়া বেশি নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এ জন্য যাত্রীদের পথে পথে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’ 

ময়মনসিংহ থেকে শ্যামগঞ্জগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বরাবর সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে শ্যামগঞ্জে যেতে ভাড়া লাগে ৫০ টাকা। ঈদকে ঘিরে ভাড়া নিচ্ছে ২০০ টাকা। প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। উল্টো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। এদিকে প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন।’ 

বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে অটোরিকশাচালক আলমগীর হোসেন বলেন, ময়মনসিংহ থেকে শেরপুরে যাত্রী নিয়ে গেলেও আসতে হচ্ছে যাত্রী ছাড়া। সিএনজি স্টেশনে গ্যাস নিতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা চলে যাচ্ছে। এসব কারণে ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে। 

অটোরিকশাচালক আব্দুল কাদির বলেন, ‘যানজটের কারণে সারা দিনে একবার যাত্রী নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে কেন্দুয়ায় যেতে পারছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় বসে থাকতে হয়। ঈদের আগে যদি কয়েকটা টাকা বেশি আয় না করি, তাহলে কীভাবে বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে চলব?’ 

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে যানজট নিরসনে এবং যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা মাঠে থেকে কাজ করছি। অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার জন্য চালকদেরও বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রায় মানুষের খুব একটা ভোগান্তি হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত