Ajker Patrika

ইসলামপুরে নিত্যপণ্যের চড়া দাম, কাহিল নিম্নবিত্ত পরিবার

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মার্চ ২০২২, ১৪: ৩২
ইসলামপুরে নিত্যপণ্যের চড়া দাম, কাহিল নিম্নবিত্ত পরিবার

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস দেখা দিয়েছে। তেল থেকে শুরু করে সবজির দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অনেককেই অনাহারে বা অর্ধাহারে কাটাতে হতে পারে। 

অন্যদিকে, প্রতিদিন পণ্যের দাম হু-হু করে বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের তরফ থেকে বাজার তদারকির কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। এতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনধারণ স্বাভাবিক করার দাবি নিম্ন আয়ের মানুষের। 

উপজেলা প্রশাসন বলছে, পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। মনিটরিং টিম বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। জিনিসপত্রের দাম অতিমাত্রায় যারা বৃদ্ধি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

আজ শুক্রবার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, করলা ১১০, এক কেজির বেশি মধ্যম আকারের মিষ্টি কুমড়ার দাম ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকা। শজনে বিক্রি হচ্ছে দোকানভেদে ২০০ থেকে ২০৫ টাকায়। ডিমের হালি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৮ টাকা হয়েছে। হাটে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগির কেজি ৪৩০ টাকা। কেজিপ্রতি ১০০ টাকা দামে গ্রাম্য বাজারগুলোতে মিলছে শসা। 

উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের নাপিতেরচর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিক্রি ও লাভ দুটোই কমে গেছে। ১৯০ টাকা কেজি দরে শজনে কিনে বিক্রি করছি ২০০ টাকায়। ঢ্যাঁড়স ও করলা কিনেছি ১০০ টাকা কেজি। বিক্রি করতে হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। দোকানের ভাড়া আছে, বাজারের খাজনা আছে, আছে বিদ্যুৎ ও জেনারেটরের বিল। এসব খরচ অন্তর্ভুক্ত করেই আমাদের পণ্যের দাম ধরতে হয়।’ 

পোড়ারচর গ্রামের দিনমজুর আকবর হোসেন বলেন, ‘গরিবের অইছে মরণ। দুই সপ্তাহ আগে পেঁয়াজ কিনছি ৩০ টাকা কেজি। এখন ৭০ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে প্রতি লিটার ২০০ টাকায়। চিনি ৮৫ টাকা কেজি। মোটা মসুরের ডাল তা-ও ১০০ টাকার ওপরে।’ 

উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া মোড় এলাকার ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন, ‘বাজারে দেশি মাছ পাওয়াই দুষ্কর। চাষের মাছের দামও অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। ইলিশের নাম নিলেই ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি। একটু বড় সাইজের কিনলেই দাম গুনতে হয় কেজিপ্রতি ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা।’ 

বেলগাছা ইউনিয়নের জারুলতলা এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী বেলাল শেখ বলেন, ‘আমরা কম বেতনে চাকরি করি। আমাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়, সাধের সঙ্গে সাধ্য কোনোটারই সমন্বয় নেই। এ অবস্থা উত্তরণে কারও কোনো নজর নেই। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রেতাসাধারণের সাধ্যের মধ্যে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ 

গাইবান্ধার নাপিতেরচর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন সাদা মিয়া বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সরকার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ তাদের পকেটে নিয়ে নিচ্ছে।’ 

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জামাল আব্দুন নাছের বাবুল বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের তরফ থেকে তদারক করা হবে। কেউ পণ্য মজুত করে দাম বাড়ালে, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তানভীর হাসান রুমেন বলেন, ‘কেউ যদি সিন্ডিকেট গড়ে সরকারনির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে জিনিসপত্র বিক্রি করে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

ভারত–বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকেরা পাচ্ছেন গেজেটেড মর্যাদা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত