Ajker Patrika

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

বনের রেলপথে ঝুঁকির যাত্রা

  • দুর্ঘটনায় বন্য প্রাণীর পাশাপাশি পর্যটক মারা গেছেন
  • ট্রেন ও যানবাহনের গতি ২০ কিলোমিটারে রাখার নির্দেশনা কেউ মানছে না
মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
আপডেট : ২২ জুন ২০২৫, ০৮: ৩৪
কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলা রেলপথে পর্যটক। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলা রেলপথে পর্যটক। সম্প্রতি তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বন্যপ্রাণীদের নিরাপদে বিচরণের জন্য ২০২৩ সালে ট্রেন ও সড়কপথে যানবাহনের গতিসীমা ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। তবে সেই নির্দেশনা শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ। কেউই তা মেনে চলছে না। দ্রুতগতিতে বনের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলাচলের কারণে নিয়মিত প্রাণীরা কাটা পড়ছে। সম্প্রতি এক পর্যটকেরও মৃত্যু হয়েছে। এর পরও রেলওয়ে ও বন বিভাগ বন্যপ্রাণী রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এমন পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলছে পরিবেশকর্মী ও পর্যটকদের।

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, বন্যপ্রাণীর নিরাপদে বিচরণের জন্য বন বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারকে বনের প্রতি আন্তরিক হতে হবে। উদ্যানের ভেতর দিয়ে চলা রেলপথ সুরক্ষার জন্য অন্তত ১ হাজার মিটার তারের পিঞ্জিরা দিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এ ছাড়া প্রাণীদের চলাচলের জন্য আন্ডারপাস ও ওভারপাস চালু করা যেতে পারে। এতে করে বনের প্রাণী ও পর্যটকেরা কিছুটা নিরাপদ থাকবে।

সম্প্রতি পর্যটকের মৃত্যু

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, উদ্যানের ভেতর দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-সিলেটের ১০ থেকে ১২টি ট্রেন চলাচল করে। রেলপথ দুর্ঘটনায় প্রতিবছর বনের অনেক প্রাণী মারা যাচ্ছে এবং অসংখ্য আহত হচ্ছে। ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচলের কারণে এসব দুর্ঘটনা হচ্ছে। সবশেষ ১১ জুন উদ্যানের ভেতরে আন্তনগর জয়ন্তিকা ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে শাহিন মিয়া (২৮) নামে স্থানীয় এক পর্যটকের মৃত্যু হয়।

অতিরিক্ত পর্যটক ক্ষতিকর

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকিট কাউন্টারের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঈদুল আজহার ছুটিতে প্রায় ৮ হাজার পর্যটক উদ্যানের ভেতরে প্রবেশ করেছে। এত পর্যটকের হট্টগোলের কারণে বনের প্রাণীরা ভয়ে ছোটাছুটি করে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ বছর পর্যটক কম হলেও সংরক্ষিত বনের জন্য পর্যটকদের এই সংখ্যাও অনেক বেশি।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ শ্রীমঙ্গলের রেঞ্জার কাজী নাজমুল হকের ভাষ্য, প্রাণীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলার কথা থাকলেও বিষয়টি কেউ মেনে চলেন না। শুধু ট্রেন নয়, সড়কপথেও গাড়িগুলো সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার গতিতে চলার কথা। এই আইন কেউ মানে না। এ ছাড়া অতিরিক্ত পর্যটক বন ও প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর।

কাগজ-কলমেই গতি ২০ কিলোমিটার

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, বন্যপ্রাণীর নিরাপদে চলাচলের জন্য বনাঞ্চল এলাকায় ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার রাখার জন্য ২০২২ সালে উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ। রেলওয়ের মহাপরিচালক ২০২৩ সালে একটা চিঠিতে লাউয়াছড়া বনাঞ্চল এলাকায় ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন। তবে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও রেলের গতি কমিয়ে আনা যায়নি। একই বছর বন বিভাগের পক্ষ থেকে সড়কপথে সর্বোচ্চ গতি ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়। তবে কোনো চালক এই উদ্যোগ মেনে চলেন না।

সূত্র আরও জানায়, বনের ভেতর অতিরিক্ত পর্যটক প্রবেশ, রেল ও সড়কপথে আইন অমান্য করে দ্রুতগতিতে ট্রেন ও যানবাহন চলাচলের কারণে বন ও প্রাণীর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। সবকিছু মিলে বনের পরিবেশ একসঙ্গে রক্ষা করা কঠিন। বন রক্ষা করতে হলে অবশ্যই সুনির্দিষ্ট কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।

পরিবেশকর্মী সাজু মার্চিং বলেন, বন্যপ্রাণী রক্ষায় বনের ভেতরে ট্রেন ও সড়কপথে গতি কমানোর সিদ্ধান্ত ভালো উদ্যোগ ছিল। তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। ট্রেন যদি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে বনাঞ্চল অতিক্রম করে, তাহলে অনেক বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভাষ্য

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর নিরাপদ চলাচলের জন্য বন বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। রেল ও সড়কে যানবাহন চলাচলের সর্বোচ্চ গতি ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে তা কেউ মেনে চলে না। বনে প্রাণীদের আবাসস্থল যাতে ধ্বংস না হয়, সেই দিকটি সবার আগে চিন্তা করতে হবে। আমরা মৌখিক আলোচনা করেছিলাম, বনের ভেতর দিয়ে যদি টানেল করে ট্রেনের লাইন করা যেত, তাহলে অনেক ভালো হতো। এ ছাড়া আন্ডারপাস ও ওভারপাস করা যায়, তবে এই বিষয়গুলো অনেক ব্যয়বহুল।

জানা গেছে, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি ও ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট থেকে নিখোঁজ ৪ শিশু ঢাকায় খাবার হোটেলে কাজ করছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি

‎সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া চার শিশুকে রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে রেলওয়ে কলোনির একটি খাবার হোটেল থেকে এদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

‎শাহজাহানপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার অধিযাচনপত্রের (রিকুইজিশন) ভিত্তিতে শাহজাহানপুর থানার একটি দল গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রেলওয়ে কলোনির একটি হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে ওই হোটেল থেকে চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

‎পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশুরা জানিয়েছে তারা সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পথ হারিয়ে ফেলে। এরপর ছয় দিন ধরে বিভিন্ন হোটেলে বয়ের কাজ করছিল।

‎উদ্ধারের পর শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জকিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন র‍্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।

গ্রেপ্তার হওয়া ইমরান আহমদ (৩০) জকিগঞ্জ উপজেলার নিদনপুর গ্রামের খছরুজ্জামানের ছেলে।

র‍্যাব-৯ জানায়, সিলেটের জকিগঞ্জ থানার বারহাল এহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী গত ২৬ জুলাই সকালে জকিগঞ্জ থানাধীন ফারুক মিয়ার পরিত্যক্ত আদিম ব্রিকস ফিল্ডে ঘুরতে যাওয়ার পর আসামিরা গোপনে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর ছবি তোলে। আসামিরা ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে বলে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখায় এবং অনৈতিক প্রস্তাব করে। ভিকটিম তাতে রাজি না হলে আসামিরা তাকে ও তার বন্ধুকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ব্রিকস ফিল্ডের ভেতরে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বন্ধু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে প্রাণে হত্যার ভয় দেখায় এবং তাকে আটকে রাখে।

পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দলবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং ভিকটিমকে ওই বিষয়টি কাউকে বা পুলিশকে না জানানোর জন্য হত্যার হুমকি দেয়।

বিষয়টি ভিকটিম ভয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু পরে অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজনকে জানানোর পর ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে।

পরবর্তী সময়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি শাকের আহমদকে গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ আরও জানান, পরবর্তী আইনিব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তার আসামিকে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‍্যাব-৯-এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা সীমান্ত থেকে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা সেক্টরের সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পৃথক অভিযানে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সীমান্তঘেঁষা এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় খাদ্যসামগ্রী।

লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচার প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জব্দ করা পণ্যগুলো আইনিপ্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা, তদন্তে ডিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৯
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে কাজী মুকিতুজ্জামান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহাদী হাসান জুয়েল জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে নিয়ে মন্তব্য করায় এই মামলা করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আসামি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের সুনাম ক্ষুণ্ন ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।

গত ১ নভেম্বর যুবদল নেতা নয়নকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন,“জুলাই সনদ নিয়ে একটি বড় দল গুন্ডামি করছে, ঢাকা মহানগরের একজন নেতা আছে নয়ন একা যে পরিমাণ চাঁদাবাজি করেছে এবং দুর্নীতি করেছে— এই টাকা দিয়েও বাংলাদেশে একটা গণভোট সম্ভব। আমরা ওনাদেরকে এত দিন জমজমের পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে চেষ্টা করেছি, ওনাদের মাথা ক্লিন হয় নাই, বডিও ক্লিন হয় নাই। এখন আমার মনে হয় ওনাদেরকে বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।”

মামলার আরজিতে বাদী বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য বাদীর দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, দলের নেতার নামে কুৎসা রটিয়ে তাঁর মানহানি করেছে। একই সঙ্গে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, যা মানহানিকর অপরাধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত