Ajker Patrika

শিবচরে শখের বরইয়ে হাসি স্কুলশিক্ষকের 

ইমতিয়াজ আহমেদ, শিবচর (মাদারীপুর)
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫: ০৫
শিবচরে শখের বরইয়ে হাসি স্কুলশিক্ষকের 

একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক তিনি। তবে ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি প্রবল ঝোঁক। শখের বশেই বরই চাষ শুরু করেন। ফলন আসার দ্বিতীয় বছরেই ভালো লাভের মুখ দেখেছেন এই শিক্ষক। 

মাদারীপুর জেলার শিবচরের এই স্কুলশিক্ষকের নাম মো. জসিম মাদবর। বহেরাতলা ইউনিয়নের সোনাখারকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন এখন।

জসিম মাদবর বলেন, ‘করোনাকালে অবসর সময়ে ইউটিউবে বরই চাষ দেখেই মাথায় আইডিয়া আসে। পরে চুয়াডাঙ্গায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিই বরই চাষের ওপর।’ 

জসিম মাদবর প্রথমে কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে শুরু করেন বরই চাষ। এরপর জমি কিনে নিজেই চাষে নামেন। দুই বছরের মধ্যেই তাঁর খেতে প্রচুর ফলন হয়। স্বাদে মিষ্টি হওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেশি তাঁর বরইয়ের। প্রবল আগ্রহ আর পরিশ্রম করার মানসিকতাই তাকে সফলতা এনে দিয়েছে বলে তিনি জানান। 

যাদুয়ারচর এলাকায় জসিম মাদবরের বাগানে গিয়ে দেখা গেছে, নিজের এক আত্মীয়কে নিয়ে গাছ থেকে বরই পাড়ছেন। বাজারে বিক্রির উপযোগী বরই সংগ্রহ করছেন ঘুরে ঘুরে। প্রায় প্রতিদিনই বিক্রি উপযোগী বরই সংগ্রহ করা যায় গাছ থেকে। 

জসিম মাদবর বলেন, ‘বাজারে থাকা অন্যান্য বরইয়ের চেয়ে আমার বাগানের বরই স্বাদে মিষ্টি থাকায় চাহিদা বেশি। দোকানিরা অগ্রিম টাকা দেন বরই কিনতে। তা ছাড়া খুচরা ক্রেতারাও বরই কিনে নেন। এমনকি প্রবাসে থাকা আত্মীয়স্বজনের জন্যও অনেকে আসেন বরই কিনতে। সরাসরি বাগান থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে যান বরই। ভালো ফলন হওয়া এবং বাজারে চাহিদা থাকায় খুশি শখের এই কৃষক। চাষাবাদ নিয়ে আরও বহুদূর এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি। রয়েছে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও।’ 

আলাপচারিতার সময় তিনি বলেন, ‘বাড়ির কাছেই ৭১ শতাংশ কৃষিজমি কিনি বরই চাষের জন্য। দুই বছর আগে প্রথমে এককভাবে চাষাবাদ শুরু করি। বাগানে চার শতাধিক বরইগাছ লাগাই। বল সুন্দরী, ভারত সুন্দরী এবং আগাম টক নামের তিন জাতের বরইগাছ রয়েছে বাগানে।’ 

বাড়ির কাছেই ৭১ শতাংশ কৃষি জমি কিনি বরই চাষের জন্যমো. জসিম মাদবর বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আমার বাগানে প্রথম ফলন আসে “ভারত সুন্দরী” নামের বরইয়ের। বাজারে প্রথম দিকে আমি প্রতি কেজি ১০০ টাকা করে বিক্রি শুরু করি। এরপর ৮০ এবং এখন ৭০ টাকা করে কেজি বিক্রি করছি “ভারত সুন্দরী” বরই। এখন “বল সুন্দরী” বিক্রির উপযোগী হয়েছে। বাজারে বল সুন্দরী বরইয়ের দাম ৮০ টাকা কেজি। আমার ৪০০ গাছ থেকে ইতিমধ্যে ১০০ মণ বরই বিক্রি করেছি।’ 

জসিম মাদবর বলেন, ‘জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে গাছে ফলন আসা পর্যন্ত দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে তাঁর। বরই বিক্রি করে আড়াই লাখ টাকার মতো পেয়েছেন। এখনো গাছে প্রচুর বরই আছে। প্রায় প্রতিদিনই বিক্রি করছি।’ 

তিনি বলেন, ‘যারা পেশাদার চাষি, তাঁরা হরমোন বা নানা ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করেন দ্রুত ফলন আসার জন্য। ফলন আসার পর জমিতে সেচের ব্যবস্থা রাখেন। এতে বরই বড় এবং রসালো হয়, তবে মিষ্টভাব কম থাকে। এ ক্ষেত্রে আমার বরই সম্পূর্ণ আলাদা। সঠিক সময়ে ফলন আসা, কোনো রকম রাসায়নিক ব্যবহার না করা এবং ফলন আসার পর আমি সেচ বন্ধ রাখি। এতে স্বাভাবিক নিয়মেই বরই বড় হতে থাকে। এ কারণেই বরই মিষ্টি হয়েছে। আমার বরই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে বড় হওয়া।’ 

বেকার যুবকদের রবই চাষসহ যেকোনো চাষাবাদে আগ্রহী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। অনেকেই তাঁর কাছ থেকে চারা নেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। যাঁরা ছাদবাগান করেন, তাঁরাও ছাদে গাছ লাগানোর জন্য চারার অর্ডার দিয়েছেন। মার্চ-এপ্রিলে গাছ লাগানো হয়। 

শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আপেল কুল, কাশ্মীরি কুলসহ নানা জাতের বরই চাষ হচ্ছে। এখানে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এসব চাষির নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই বরই চাষে ঝুঁকছেন। বাণিজ্যিকভাবে অনেকেই বরইবাগান শুরু করেছেন শিবচরের বিভিন্ন স্থানে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বেরোবিতে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে অব্যাহতি

বেরোবি প্রতিনিধি 
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

যৌন হয়রানির অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাকিবুল ইসলামকে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বিভাগীয় জরুরি সভার সিদ্ধান্তে এই অব্যাহতির বিষয়টি জানানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় এক জরুরি সভায় ড. শাকিবুল ইসলামের নিকট বণ্টনকৃত চতুর্থ বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের কোর্সসমূহ পুনর্বণ্টনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সঙ্গে DSM4207 (Research Project) কোর্সে সুপারভাইজার ও দ্বিতীয় পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এ ছাড়া চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সদস্যপদ থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য শিক্ষককে নতুন সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ড. শাকিবুল ইসলামকে একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি এমএসসি ২০২৪-২৫ প্রোগ্রাম থেকেও সম্পূর্ণভাবে বিরত রাখা হবে।

অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘আমাদের এক নারী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ড. শাকিবুল ইসলামকে ওই ব্যাচের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু ভুক্তভোগী প্রশাসন বরাবরও অভিযোগ দায়ের করেছে, বিষয়টি যৌন নিপীড়ন সেলে গিয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আমরা এখনো অবগত নই।’

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক এবং যৌন নিপীড়ন সেলের সদস্যসচিব ড. ইলিয়াছ প্রামাণিক বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে ঠিকাদার আ.লীগ নেতাকে মারধর-গাড়ি ভাঙচুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে হামলার শিকার হয়েছেন শামীম হোসেন মোল্লা নামের এক ঠিকাদার। এ সময় তাঁর ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ভাঙচুর করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু হুরায়রার নেতৃত্বে একদল লোক। খবর পেয়ে সদর থানা-পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

আজ বুধবার ঝিনাইদহ জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শামীম হোসেন মোল্লা শৈলকুপা উপজেলার বারুইপাড়া গ্রামের সাব্দার হোসেন মোল্লার ছেলে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান।

সূত্রে জানা গেছে, শামীম হোসেন মোল্লা এলজিইডির একজন ঠিকাদার। তিনি আজ বুধবার দুপুরে কাজের বিল নিতে জেলা এলজিইডি কার্যালয়ে আসেন। এ সময় হঠাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু হুরায়রা আসেন। তিনি সংগঠনের সদস্যসচিব সাইদুর রহমানসহ ১০-১৫ জনকে ডেকে এনে শামীম হোসেন মোল্লাকে মারধর এবং তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। বর্তমানে তিনি সদর থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধীর নেতা আবু হুরায়রা আজকের পত্রিকাকে বলেন, শামীম হোসেন মোল্লা শৈলকুপায় ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে অনেক মিছিল-মিটিং করেছেন। শৈলকুপায় তাঁর নেতৃত্বে ঢাল, সড়কি, রামদা নিয়ে মিছিল করেছে, তার দায় সে কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শৈলকুপায় একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে ঠিকাদারি কাজ করে এসেছেন। যেকোনো কাজের টেন্ডার প্রভাব খাটিয়ে নিজে নিয়ে কাজ করতেন। তিনি অন্য কাউকে কাজ করতে দিতেন না।

আবু হুরায়রা বলেন, ‘এমনকি ৫ আগস্টের পর এখনো তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। আজ দুপুরে এলজিইডি অফিসে গিয়ে দেখি, সরকারি অফিসে বসে শামীম মোল্লা চা খাচ্ছেন। হাসি-তামাশা করছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে আবু হুরায়রা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে শৈলকুপার কিছু লোক ছিল, তারা আগের ক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর করেছে।’ তবে মারধরের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান ঝিনাইদহ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনোয়ার উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই, আমি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে এসেছি।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুপুরে এলজিইডি অফিসে শামীম হোসেন মোল্লাকে আটকিয়ে রাখার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সদর থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

তাঁকে কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাঁর নামে সদর থানায় কোনো মামলা নেই। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গভীর রাতে পিনাকীর বগুড়ার বাড়ির গেটে দুর্বৃত্তের আগুন

বগুড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ২৯
পিনাকীর বগুড়ার বাড়ির গেটে দুর্বৃত্তের আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিনাকীর বগুড়ার বাড়ির গেটে দুর্বৃত্তের আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রবাসী অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্যের বগুড়ার বাড়ির গেটে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাঁর শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে।

আজ বুধবার ঘটনাটি জানাজানি না হলেও সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৮টার দিকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে ঘটনাটি নিয়ে পিনাকী পরিবারের কোনো অভিযোগ নাই এবং বিষয়টি প্রচার না করার অনুরোধ জানান।

স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ৬ মিনিটে দুই যুবক ‘শ্যামা পাখি’ নামের বাসভবনের সামনে পলিথিন জাতীয় কিছু রেখে আগুন জ্বালিয়ে মোবাইল ফোনে ছবি উঠিয়ে দ্রুত চলে যান। কিছুক্ষণ পর আগুন নিভে যায়। ঘটনাটি বুধবার সারা দিন জানাজানি না হলেও সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সন্ধ্যার পর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হানের নেতৃত্বে সদর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ছাড়া বগুড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হকের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা যায়, শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকার ওই দোতলা বাড়িতে নিচতলায় ভাড়াটিয়া এবং উপর তলায় পিনাকী ভট্টাচার্যের মা, মামা ও মামি বসবাস করেন।

জানতে চাইলে পিনাকী ভট্টাচার্যের মামা সুব্রত ভৌমিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নাই। তিনি ঘটনাটি প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করেন।’

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস আলামত সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পলিথিনজাতীয় কিছুতে আগুন দেওয়া হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করতে আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ

ময়মনসিংহ ও গফরগাঁও প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বৃদ্ধকে গাছে বেঁধে রাখা হয়। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে কলেজছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আব্দুল করিম (৭২) নামের এক বৃদ্ধকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার পাগলা থানার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ওই বৃদ্ধের গলায় জুতার মালা পরানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে পুলিশ বলছে, তারা গলায় জুতার মালা পরানোর বিষয়ে কিছু জানে না। আব্দুল করিমকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। শ্লীলতাহানির অভিযোগে ওই কলেজছাত্রীর বাবা পাগলা থানায় মামলা করেছেন। আজ বুধবার পুলিশ আব্দুল করিমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

এদিকে আজ দুপুরে পাগলা থানায় আটক অবস্থায় আব্দুল করিম নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁকে অপদস্থ করতে এ ঘটনায় ফাঁসানো হয়েছে।

মামলার বাদী বলেন, ‘ঘরে আমার কলেজপড়ুয়া মেয়েকে একা পেয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন, তাই আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তবে তাঁর গলায় জুতার মালা পরানোর বিষয়ে কিছু জানি না।’

ওই ছাত্রীর বড় ভাই বলেন, ‘এ ঘটনায় আমার বোন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আজ বাবা বোনকে সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহ আদালতে যান জবানবন্দি দিতে।’

গফরগাঁও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের উপজেলায় আব্দুল করিম নামে তালিকাভুক্ত কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছে।’

পাগলা থানার (ওসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম বলেন, ‘শ্লীলতাহানির অভিযোগে আব্দুল করিমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে আব্দুল করিমকে জুতার মালা পরানো হয়েছে কি না, এ বিষয়ে জানা নেই। আসামিকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনোতোষ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে শ্লীলতাহানির চেষ্টার সত্যতা পাওয়া গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত