Ajker Patrika

মোংলায় কার্গো ডুবি: তদন্ত শেষ, যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ে

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
মোংলায় কার্গো ডুবি: তদন্ত শেষ, যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ে

মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া নৌ চ্যানেলে সার নিয়ে লাইটার জাহাজডুবির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে চালকের গাফিলতি পেয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটি। এই প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে তাঁরা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। গাফিলতির অভিযোগে দায়ী চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ। তবে এই মুহূর্তে নৌ-দুর্ঘটনায় বন্দরের নৌচ্যানেল নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, গত মঙ্গলবার বন্দরের চ্যানেলে সারবাহী কার্গো জাহাজডুবির ঘটনায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেওয়া দিন ধার্য করা হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহাদাৎ হোসেন (তদন্ত কমিটির প্রধান), পাইলট ফারুক আহেম্মেদ এবং মেরিন বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. রিয়াদ খাঁনকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বুধবার সকালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে মার্কিং বয়া (লাল সতর্ক বয়া) বসিয়ে তদন্ত শুরু করেন।

শাহীন মজিদ আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বুধবার মধ্যরাতে হারবাড়িয়া-৮ এ সার নিয়ে ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ এমভি শাহজালাল এক্সপ্রেসের মাস্টার (চালক) ওবায়দুর রহমানের গাফিলতি পাওয়া গেছে।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওই সময় ঘন কুয়াশা থাকায় মাস্টারের উচিত ছিল লাইটার জাহাজটি না চালিয়ে কোনো এক জায়গায় অবস্থান করা। কিন্তু মাস্টার হারবাড়িয়া-৯ এ অবস্থান করা ‘এমভি ভিটা অলিম্পিক’ নামে বিদেশি জাহাজ থেকে ৫০০ টন সার বোঝাই করে ছেড়ে আসে। পথে হারবাড়িয়া-৮ এ অবস্থান করা অন্য আরেকটি বিদেশি জাহাজ ‘সুপ্রিম ভ্যালুর’ ঘোরার সময় ঘন কুয়াশায় দেখতে না পেয়ে সেটিতে ধাক্কায় লাগায়। ওই সময়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শাহাজালাল এক্সপ্রেস লাইটারটি ডুবে যায়।

তবে ডুবে যাওয়া লাইটার শাহাজালাল এক্সপ্রেসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ভাই ভাই শিপিং লাইনসের স্বত্বাধিকারী আজাহার সিদ্দিক দাবি করেন, ‘লাইটারটি ডুবে যাওয়ার ঘটনায় মাস্টার ওবায়দুর রহমানের কোনো গাফিলতি ছিল না। তিনি দক্ষ চালক।

বন্দর কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার যে কারণ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দিয়ে আজাহার সিদ্দিক বলেন, ‘কোনো বিদেশি জাহাজ থেকে পণ্য বোঝাই হওয়ার পর সেখানে এক মুহূর্তে থাকতে দেওয়া হয় না, কাজেই সেখান থেকে অন্যত্র অবস্থান নেওয়ার জন্য ঘন কুয়াশায়ও মাস্টারের লাইটারটি চালাতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের বেধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে এই লাইটার জাহাজটি ওঠানো সম্ভব না। অনেক সময় লাগবে। ডুবে যাওয়া লাইটার জাহাজ থেকে প্রাথমিকভাবে সার অপসারণ করতেও এখনো এক সপ্তাহ সময় লাগবে। 

এ ঘটনায় বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনের অভ্যন্তরে হারবাড়িয়া নৌ চ্যানেলে সারবাহী লাইটার জাহাজ ডুবির ফলে জলজ সম্পদের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে ওই জাহাজে থাকা যে জ্বালানি তেল রয়েছে সেগুলো সুন্দরবনের আশপাশের পরিবেশকে দূষণ করবে। একই সঙ্গে বারবার এসব লাইটার জাহাজ ডুবির ফলে বন্দরের নাব্যতা সংকটও বাড়বে। 

গত মঙ্গলবার মধ্য রাতে মোংলা বন্দরে দুর্ঘটনায় কবলে পড়ে শাহাজালাল লাইটার জাহাজটি ডুবে গেলেও বেঁচে যান ওই জাহাজে থাকা নয় নাবিক। জাহাজটিতে বহন করা সার বাংলাদেশ এগ্রিকালচার করপোরেশনের (বিএডিসি) বলে জানা গেছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টা না যেতেই কাশ্মীরে বিস্ফোরণ!

বিশ্বে প্রথম পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়ানোর পথে কি পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ

লঞ্চের ওপর তরুণীকে প্রকাশ্যে পেটাচ্ছিলেন যুবক, ভিডিও ভাইরাল

ভারতের সেনাপ্রধানের ক্ষমতা বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, বিচার হবে ট্রাইব্যুনালে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত