Ajker Patrika

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর একুশে পদক প্রাপ্তিতে যা বললেন তাঁর ভাই

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪: ৫৪
কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর একুশে পদক প্রাপ্তিতে যা বললেন তাঁর ভাই

ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য মৃত্যুর ৩২ বছর পর একুশে পদক পেয়েছেন দ্রোহের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। গতকাল মঙ্গলবার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আইরীন ফারজানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পদকপ্রাপ্ত অন্যদের সঙ্গে তাঁর নামও প্রকাশ করা হয়। মৃত্যুর ৩২ বছর পর পদক পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

কবির ভাই ও রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি সুমেল সারাফাত বলেন, ‘রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতা বাংলা ভাষা ও বাঙালিকে সমৃদ্ধ করেছে। মৃত্যুর দীর্ঘদিন পরে হলেও সরকার ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কবিকে সম্মানিত করেছে। এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। মোংলাবাসীও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।’ রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মরণোত্তর একুশে পদক পাওয়া উপলক্ষে রুদ্র স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশালের রেডক্রস হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে বাবার চাকরির সূত্রে বাগেরহাটের মোংলায় বসবাস শুরু করে কবির পরিবার। পরে উপজেলার মিঠাখালী এলাকায় স্থায়ীভাবে থাকেন তাঁরা। কবির মা শিরিয়া বেগম, বাবা শেখ ওয়ালীউল্লাহ ছিলেন চিকিৎসক। কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিন ভাই মারা গেছেন। কবির ভাই ও স্বজনেরা এখন মোংলাতেই থাকেন। রুদ্র ঢাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বিএ অনার্স (বাংলা) ও ১৯৮৩ সালে এমএ সম্পন্ন করেন।

ছাত্রজীবনেই রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর দুটি কাব্যগ্রন্থ ‘উপদ্রুত উপকূল’ (১৯৭৯) ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ (১৯৮১) প্রকাশিত হয়। এ দুটি কাব্যগ্রন্থ তাঁকে বিশেষ খ্যাতি এনে দেয়। মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এই গানের জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দুই বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

অকালপ্রয়াত এই কবি তাঁর কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীকে। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তরজুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রর কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার।

ক্ষণজন্মা এই কবি ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা যান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৪ সালে দেশের ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিক একুশে পদক পাচ্ছেন। এর মধ্যে ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক পেয়েছেন রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহসহ (মরণোত্তর) চারজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত