Ajker Patrika

ঘটনাস্থলে না থেকেও হত্যা মামলার আসামি তাঁরা

শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২২, ১৭: ২৩
ঘটনাস্থলে না থেকেও হত্যা মামলার আসামি তাঁরা

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কাজলী গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য রাশিদুল মোল্যাকে হত্যার সময় এলাকায় না থাকলেও বেশ কয়েকজনকে মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। মামলা থেকে বাদ যাননি শিক্ষক, কলেজছাত্র, পোশাককর্মী, ব্যবসায়ী, মুমূর্ষু রোগী এমনকি বৃদ্ধ ব্যক্তিও।

ঘটনাস্থলে না থেকেও আসামি হয়েছেন আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়জুর রহমান লাবু, গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল বিশ্বাস, ৬৭ বছর বয়সী বৃদ্ধ গোলাম মুন্সি, হার্ট অপারেশনের রোগী আবু সাঈদ, পোশাককর্মী সাদ্দাম মুন্সি, চিকিৎসার জন্য ঢাকায় থাকা রেজাউল মোল্যা, ব্যবসায়ী রুবেল মোল্যা, লিটু, কলেজছাত্র রকিব ও রিফাত। এদিকে মামলার সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আসামিরা।

এই মামলার প্রধান আসামি হান্নান মোল্যা ও ২০ নম্বর আসামি আতিয়ার বিশ্বাস বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কাজলী গ্রামের হান্নান মোল্যার সঙ্গে হোগলডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হাই পবন মল্লিকের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাজলী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাশিদুলের ওপর হামলা করেন হান্নানের সমর্থকেরা। এ সময় তাঁকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে রাশিদুলকে উদ্ধার করে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাশিদুল আব্দুল হাই পবনের সমর্থক ছিলেন। পরে নিহতের ভাই সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৪৪ জনকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

ফয়জুর রহমান লাবু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি শ্রীপুরে ছিলাম। এ সময় আমার সঙ্গে আমার স্ত্রীসহ শ্রীপুর সরকারি এমসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।’

গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি শিক্ষক সমিতির আলোচনা সভা শেষে শ্রীপুর কলেজ মোড়ে নিজস্ব দোকানে ছিলাম। এর যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ আমার কাছে আছে।’

আবু সাঈদ বলেন, আমার হার্ট ব্লক। ওই সময় হার্টে রিং পরানো ছিল। আমি অসুস্থ ছিলাম। তবু মামলার আসামি আমি।’

গোলাম মুন্সি বলেন, ‘আমি বয়স্ক মানুষ। আমার বয়স ৬৭ বছর। আমি নিজেই চলতে পারি না। মামলার এজাহারে ৫০ বছর উল্লেখ করে আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।’

রেজাউল মোল্লা বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন চিকিৎসার জন্য ঢাকায় ছিলাম, যার যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে আছে। তবু আমাকে আসামি করা হয়েছে।’

এদিকে মামলার আরেক আসামি সাদ্দাম মুন্সি বলেন, ‘আমি আমতৈল সান এ্যাপারেন্স গার্মেন্টসে চাকরি করি। ঘটনার সময় আমি গার্মেন্টসে ওভারটাইম ডিউটিতে ছিলাম।’

লিটু বলেন, ‘ঘটনার দিন কাজলী বাজারে আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ছিলাম। তবু আমাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।’

মামলার আসামি দুই কলেজছাত্র রাকিব ও রিফাত বলেন, ‘আমরা দুই ভাই শ্রীপুর সরকারি কলেজে পড়ি। ঘটনার সময় আমরা মসজিদে ছিলাম। আমাদের মিথ্যাভাবে মামলার আসামি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী এম এ রশিদ বলেন, ‘গ্রামের মারামারির ঘটনায় এভাবেই আসামি করা হয়। এ মামলায় ৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। একটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এতগুলো মানুষ যুক্ত থাকতে পারে না। এ মামলায় অনেকেই ঘটনাস্থলে না থেকে আসামি হয়েছেন। আশা করছি যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত না তাঁদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী সাইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
 
মাগুরা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। যাঁরা নিরপরাধ তাঁদের তদন্তে প্রমাণিত হলে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত