Ajker Patrika

গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে খুলনা মেডিকেলের চিকিৎসক সামছুন নাহারের বিরুদ্ধে মামলা

খুলনা প্রতিনিধি
সামসুর নাহার লাকি। ছবি: সংগৃহীত
সামসুর নাহার লাকি। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে চিকিৎসক সামছুন নাহার লাকির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। চিকিৎসক লাকি খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক এবং হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত।

নির্যাতনের অভিযোগে গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) গৃহকর্মী আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে খুলনার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সদর আমলি) আদালতে মামলা করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন।

আজ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী এম মাফতুম আহমেদ।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন লাকির ভাই আলিমুর রেজা, মিসেস মালি, কাজী আবুল হাসান, মোহাম্মাদ আলী, মো. ইলিয়াস, শাওলী হাসান ও রাদ হাসান।

বাদীর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আকলিমা খাতুন ১৯৯৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সামছুন নাহার লাকির নগরীর আহসান আহমেদ রোডের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। চলতি বছরের মে মাসের মাঝামাঝি সময় শারীরিক ও পারিবারিক কারণে তিনি কাজ করতে অক্ষমতার কথা চিকিৎসক সামছুন নাহার লাকিকে জানান। এ কথা শোনামাত্র তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠেন ওই চিকিৎসক।

গত ২৭ জুলাই সামছুন নাহার লাকির নির্দেশে আকলিমাকে অবরুদ্ধ করে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তাঁর অবস্থা খারাপ দেখে চিকিৎসক ঢাকায় আত্মগোপনে চলে যান। গত ২ আগস্ট ঢাকা থেকে ফিরে এসে আবারও তাঁকে ভয়ভীতি দেখান। উপস্থিত আলিমুর রেজা ও কাজী আবুল হাসানের কিল-ঘুষিতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন আকলিমা। পরে সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ব্যাংকে জমা করা ডিপিএসের ৬ লাখ ৬১ হাজার ৪০০ টাকা উত্তোলন করে নেন।

এম মাফতুম আহমেদ আরও জানান, এ ঘটনার পরও সামছুন নাহার লাকি ক্ষান্ত হননি। তাঁর নির্দেশে আকলিমাকে আবারও আটকিয়ে রেখে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ জমি লিখে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। পরে ছেলে ও ভাই মুচলেকা দিয়ে তাঁকে সেখান থেকে মুক্ত করে নিয়ে যান।

এ ঘটনার পর চিকিৎসক সামছুন নাহার লাকিকে লিগ্যাল নোটিশ এবং স্থানীয় থানা ও পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী।

আইনজীবী মাফতুম আহমেদ বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। বিষয়টির তদন্তভার খুলনার পিবিআইকে দিয়েছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আকলিমার ভাই বলেন, ১৯৯৮ সালে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর সামছুন নাহার লাকির বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেন তাঁর বোন আকলিমা খাতুন। বয়সের ভারে কাজ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলায় তাঁর ওপর নির্যাতন চালান চিকিৎসক পরিবারের সদস্যরা। নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হননি। তাঁরা অব্যাহত হুমকি দিচ্ছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সামছুন নাহার লাকির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ভিকট্রি ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ সেন্টার থেকে কল রিসিভ করে বলা হয়, ‘ম্যাডাম ঢাকায় আছেন।’ তখন তাঁর মোবাইল নম্বর চাওয়া হলে দিতে অস্বীকার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত