Ajker Patrika

পাইকগাছায় ইটভাটা গিলছে তাজা গাছ

এস এম বাবুল আক্তার পাইকগাছা (খুলনা) 
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১: ৪৬
পাইকগাছায় ইটভাটা গিলছে তাজা গাছ

খুলনার পাইকগাছায় সরকারি অনুমতি ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে অধিকাংশ ইটভাটা, যেখানে জ্বালানি হিসেবে দেদার পোড়ানো হচ্ছে তাজা গাছ। আর ইটের কাঁচামাল হিসেবে কেটে আনা হচ্ছে কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি। স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান ও জরিমানার পরও এ কার্যক্রম থামছে না। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার চাঁদখালী, গদাইপুর, রাড়ুলী ও হরিঢালী ইউনিয়নে ১৫টি ভাটা কৃষিজমিতে স্থাপন করা হয়েছে। পাশেই রয়েছে জনবসতিসহ নানা প্রতিষ্ঠান। এসব ভাটার মধ্যে দুটি পরিবেশবান্ধব। অন্যগুলোর ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। নীতিমালা অনুযায়ী যেকোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্বে ও বনাঞ্চল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ভাটা স্থাপনের কথা থাকলেও অল্প দূরত্বে এসব ভাটা স্থাপন করা হয়েছে। 

ভাটাসংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, মধ্যম সারির একটি ভাটায় মৌসুমে ৪০ থেকে ৫০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। প্রতি ২৪ হাজার ইটের জন্য ৩ হাজার ঘনফুট মাটি ব্যবহার করা হয়। কৃষিজমি থেকে এসব মাটি জোগান দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিদিন একটি ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ জ্বালাতে হয়। কাঠ চেরাইয়ের জন্য বসানো হয়েছে করাতকল। 

চাঁদখালীর কৃষক আয়ূব আলী জানান, তাঁর ফসলি জমির পাশে অনুমোদনহীন ভাটা রয়েছে। মালিক এলাকার প্রভাবশালী। ভাটার আশপাশে শত শত কৃষকের ফসলের ক্ষতি হলেও ভয়ে কেউ কথা বলেন না। 

এ নিয়ে কথা হলে চাঁদখালী ইউনিয়নে এসএমবি ব্রিকস ইটভাটার মালিক নাজমুল হুদা মিথুন বলেন, ‘জরিমানার টাকা দিলে সব বৈধ হয়ে যায়। এ কারণে সেই টাকা আগে থেকেই জোগাড় করে ভাটার কাজ শুরু করি। বর্তমানে আমরা প্রতি হাজার ইট ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। কয়লা দিয়ে পোড়ালে ১ হাজার ইটের দাম পড়বে ১৫ হাজার টাকা। বিক্রির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। সবাই কয়লা দিয়ে পোড়ালে আমরাও কয়লা দিয়ে পোড়াব।’

একই এলাকার বিবিএম ব্রিকসের মালিক আব্দুল মান্নান গাজী জানান, তাঁদের পরিবেশের কোনো ছাড়পত্র কিংবা লাইসেন্স নেই, তবে সরকার তাঁদের কাছ থেকে আয়কর ও ভ্যাট আদায় করছে। পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল-আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইতিমধ্যে চাঁদখালী ও হরিঢালী ইউনিয়নের ছয়টি ভাটা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৩ লাখ টাকার বেশি জরিমানা আদায় করা হয়েছে। মাটি কেটে বিক্রির অপরাধে চারজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত