Ajker Patrika

চিকিৎসার নামে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ 

আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৫: ৪৬
চিকিৎসার নামে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ 

যশোরের মনিরামপুরে এক গৃহবধূ তরুণীকে (২০) গর্ভধারণের জন্য চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলে ডেকে এনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক পল্লিচিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে গতকাল শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে মনিরামপুর থানায় দুজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করে আজ রোববার দুপুরে আদালতে হাজির করেছেন।

আসামিরা হলেন, উপজেলার কোদলাপাড়া গ্রামের ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে পল্লিচিকিৎসক বিল্লাল হোসেন (৫০) ও তাঁর সহযোগী বাগডোব গ্রামের হযরত আলীর ছেলে ইজিবাইক চালক দ্বীন মোহাম্মদ দিলু (৪০)। স্থানীয় রোহিতা বাজারে ফার্মেসি রয়েছে বিল্লালের। সেখানে তিনি ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি রোগী দেখেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল হক বলেন,৭-৮ মাস আগে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট এলাকায় বিয়ে হয় ওই তরুণীর। গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পুলেরহাট থেকে দ্বীন মোহাম্মদ দিলুর ইজিবাইকে ওই তরুণীকে তুলে দেন তাঁর স্বামী। ইজিবাইকে চড়ে কোদলাপাড়া এলাকায় পিতার বাড়িতে আসছিলেন তিনি। একপর্যায়ে দিলু জানতে পারেন ওই তরুণীর সন্তান হয় না। তখন ভালো চিকিৎসার কথা বলে রোহিতা বাজারে বিল্লালের কাছে তাঁকে আনেন দিলু। এরপর কৌশলে বিল্লাল ওই নারীকে বাজারের পাশে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে স্ত্রী সন্তান না থাকায় সেখানে ঘরে দুই-তিন ঘণ্টা আটকে রেখে ওই নারীকে জোর করে ধর্ষণ করেন চিকিৎসক বিল্লাল। আলামত নষ্ট করতে তখন বাথরুমে নিয়ে জোরপূর্বক ওই নারীকে গোসল করতে বাধ্য করেন তিনি। 

জিয়াউল হক বলেন, ওইসময় ইজিবাইক চালক বাড়ির বাইরে অবস্থান করছিলেন। ওই নারী বাঁচার জন্য চিৎকার করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি।  এক সপ্তাহ আগের ঘটনা হলেও লজ্জায় ও সংসার ভাঙার ভয়ে বিষয়টি কাউকে বলতে পারেননি ওই নারী।

পুলিশ জানায়, নারীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য ইজিবাইক চালক দিলুকে পল্লিচিকিৎসক বিল্লাল মাসোহারা দিতেন। তবে সর্বশেষ ঘটনায় চাহিদামত টাকা না দেওয়ায় চালক ঘটনাটি ফাঁস করে দেন। পরে চাপাচাপির একপর্যায়ে গত শনিবার ওই তরুণী তাঁর ভাইয়ের কাছে ঘটনা স্বীকার করেন। 

এদিকে ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে শনিবার রাতে বিষয়টি চাপা দিতে দু'পক্ষকে নিয়ে রোহিতা বাজারে একটি ভবনের ছাদে সালিস বসে। খেদাপাড়া ফাঁড়ি পুলিশকে বিষয়টি জানিয়ে মীমাংসার জন্য সালিসে বসেন কোদলাপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামসহ স্থানীয় পর্যায়ের ক্ষমতাধর কয়েকজন। সালিসে এ নিয়ে কোনো মীমাংসায় পৌঁছানো যায়নি।  এরপর রাতেই ওই নারীকে নিয়ে থানায় আসেন স্বজনরা। একইসময়ে অভিযুক্ত দু'জনকে মারপিট করে খেদাপাড়া ফাঁড়ি পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। রাতেই পুলিশ তাঁদের মনিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

জানতে চাইলে রোহিতা ইউনিয়নের কোদলাপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিরসনের স্বার্থে দু'পক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। 

খেদাপাড়া ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম রসুল বলেন, রোহিতা বাজারে লোকসমাগমের খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য শনিবার সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তখন ওই নারীর কাছে ঘটনা শুনেছি। পরে থানায় ওসি মহোদয়কে ঘটনা জানিয়ে ভিকটিমকে থানায় পাঠাই। 

মনিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি ধর্ষণ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

ওসি বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি। ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হাসানুল বান্নার পদত্যাগ

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত