Ajker Patrika

সেই পচা চাল বিতরণে ফের তোড়জোড়

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) 
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৯: ১১
সেই পচা চাল বিতরণে ফের তোড়জোড়

করোনাকালে দুস্থদের জন্য বরাদ্দের চাল বিতরণ না করে গুদামেই পচিয়েছেন যশোরের মনিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। পচে যাওয়া ৫৫ বস্তা (২ হাজার ৭৩০ কেজি) চাল বিতরণের তোড়জোড় চলছে। তালিকা প্রস্তুত করতে এরই মধ্যে ২৫৭ জনের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা পড়েছে পরিষদের সচিবের কাছে। এক সপ্তাহ আগে ইউনিয়নের সব ওয়ার্ড থেকে পরিচয়পত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়।

এর আগে চাল বিতরণের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করেন খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদ্য পরাজিত চেয়ারম্যান এসএম আব্দুল হক। বিতরণের অনুমতিও পান। যদিও তাঁর অবহেলার কারণেই চালগুলো পচে গেছে। 

বিতরণের উদ্যোগ নেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মৃণাল কান্তি। সচিবের দাবি, সব চাল পচেনি। ১০০ কেজি বা তার কম চাল পচেছে। একই বস্তার একপাশে কিছু চাল পচলেও অন্যপাশে ভালো আছে। 

সচিব বলেন, ‘চেয়ারম্যানের আবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) মো. হুসাইন শওকত ও ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসান চাল বিতরণের অনুমতি দিয়েছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যে চাল পচে গেছে সেগুলো চেয়ারম্যান কিনে দেবেন। বাকি ভালো চাল তাঁর সঙ্গে এক করে বিতরণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে পচা চাল ১০০ কেজি বা তার কম হতে পারে।’ 

মৃণাল কান্তি বলেন, ২৭৩ জন এ চাল পাবেন। তিনি জানান, উপজেলা পরিষদ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০০ জনের তালিকা দলীয়ভাবে হবে। বাকি ৭৩ জনের তালিকা দেবেন চেয়ারম্যান আব্দুল হক। সেই সিদ্ধান্ত না মেনে স্থানীয়ভাবে কয়েকজন মিলে ২৫৭টি এনআইডি কার্ড পরিষদে দিয়ে গেছেন। বাকিটা চেয়ারম্যানকে দিতে বলেছেন। যারা ২৫৭টি কার্ড জমা দিয়েছেন তাঁরা সেখান থেকে কমাতে চাচ্ছেন না। চেয়ারম্যানও সেটা মানতে চাচ্ছেন না। তিনি এখনো তালিকা জমা দেননি। চেয়ারম্যানের তালিকা পেলে দুই তালিকা সমন্বয় করে চাল বিতরণ করা হবে।

গত ৩১ অক্টোবর এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। জানাজানি হলে ওই দিন সকালে ৩০০ নারী-পুরুষকে পরিষদে জড়ো করে পচা চাল বিতরণের চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান ও সচিব। খবর পেয়ে ইউএনও সৈয়দ জাকির হাসান পরিষদে হাজির হয়ে সেই চাল জব্দ করেন। সেই থেকে চালগুলো পরিষদের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ রয়েছে। 

স্থানীয়রা বলছেন, ইউএনও চাল জব্দ করে পরিষদের কক্ষে আটকে রাখার প্রায় দুই মাস পার হচ্ছে। এত দিনে চালে আরও বেশি পচন ধরেছে। এখন সেই চাল বিতরণের তোড়জোড় চলছে। এ পচা চাল খেলে মানুষের ডায়রিয়া হবে। 

গত জুলাই মাসে করোনাকালীন দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য মনিরামপুর উপজেলার সব ইউপিতে চাল বরাদ্দ দেয় সরকার। গত আগস্টে প্রথম ও শেষ সপ্তাহে দুই ধাপে ৫৫ বস্তা চাল তোলেন খেদাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল হক। কিন্তু সেই চাল বিতরণ না করে পরিষদের গুদামে রেখে দেন চেয়ারম্যান। 

গত অক্টোবরে একবার এই পচা চাল বিতরণের চেষ্টা করেন ইউপি চেয়ারম্যান

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ‘চেয়ারম্যান একটা আবেদন করেছিলেন। তাঁকে অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই। আমি তাঁকে অনুমতি দিতে পারি না। এটা চেয়ারম্যানকে নিজ দায়িত্বে সমাধান করে দিতে হবে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে সমন্বয় করে চাল বিতরণের জন্য চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাকিটা তাঁরাই বলতে পারবেন।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের যশোর অঞ্চলের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) হুসাইন শওকত বলেন, ‘উপযুক্তদের তালিকা করে চাল বিতরণ করতে হবে। কেউ যেন পচা চাল না পান সেটা নিশ্চিত করতে ইউএনওকে বলে দিচ্ছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতার সামনে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে ভারত: ব্রিটিশ বিশ্লেষক

পুরোনো রাউটার ফেলে না দিয়ে যে কাজে ব্যবহার করতে পারেন

পোশাকের পর অস্ত্র প্রশিক্ষণও পাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত এডিরা

প্রশাসনিক আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ ভুল, আ.লীগের কার্যক্রম বন্ধ সঠিক: বিএনপি

প্রথম ভাষণে গাজা প্রসঙ্গে যা বললেন পোপ লিও চতুর্দশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত