Ajker Patrika

চোরাই স্বর্ণের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গুলি করে হত্যা, ছেলেসহ গ্রেপ্তার ২

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি
চোরাই স্বর্ণের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গুলি করে হত্যা, ছেলেসহ গ্রেপ্তার ২

যশোরে ৬ / ৭ কেজি স্বর্ণের চোরাই স্বর্ণের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয় লাভলু নামের এক ব্যক্তিকে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শাকিল (১৬) এবং খোলাডাঙ্গা রেল কলোনীর আব্দুর রশিদের ছেলে ইসরাইলকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে দুই রাউন্ড গুলিসহ দুটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা ও অস্ত্র মামলা হয়েছে। 

আজ রোববার সকালে যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে ডিবির ওসি জানান, গত ১০ জুন সকাল সাড়ে ৭টায় যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা এলাকার বেলতলা থেকে খোলাডাঙ্গা মধ্যপাড়ার আব্দুল মান্নানের ছেলে লাভলু হোসেনের (৪০) মরদেহ উদ্ধার করে যশোর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। ঘটনাটি ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে ডিবির একটি চৌকস দল অনুসন্ধান করতে থাকে। অনুসন্ধানে গোপন তথ্যে গতকাল শনিবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় লাভলুর ছেলে সাকিল হোসেন ও স্ত্রী সালমাকে ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। 

সাকিল হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আড়াল করতে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তিনি বাবার (লাভলু হোসেন) হত্যার বিষয়টি গোপন করার কথা স্বীকার করে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের নাম প্রকাশ করেন। হত্যার সময় ও মরদেহ গুম করার ঘটনাস্থলে হত্যাকারীদের সঙ্গে উপস্থিত ছিল বলে স্বীকার করে হত্যার কারণসহ বিস্তারিত বিবরণ দেয় সে। সাকিলের স্বীকারোক্তিমতো তাদের বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে দুই রাউণ্ডগুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে ডিবি। এ ছাড়াও ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি কামরুজ্জামান ওরফে খোড়া কামরুলকে ধরতে অভিযান চালায় পুলিশ। পরে সাকিলের তথ্যমতে খোড়া কামরুলের সহযোগী ইসরাইল নামে একজনকে আটক করে তাঁর স্বীকারোক্তিতে আরও একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাকিলের তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। নিহত লাভলুর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হত্যার কারণ উদ্‌ঘাটন করে ডিবি পুলিশ। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে ও গ্রেপ্তারের সাকিলের তথ্য জানা যায়। কামরুজ্জান ওরফে খোড়া কামরুল সহযোগীদের মাধ্যমে ১ / ২ মাস আগে স্বর্ণ চোরাকারবারিদের নিকট থেকে ৬ / ৭ কেজি স্বর্ণ ছিনতাই করে। খোড়া কামরুলের একান্ত সহযোগী লাভলুর ছেলে সাকিল ও স্বর্ণকার কবীর হাওলাদের মাধ্যমে স্বর্ণের বার বিক্রি করে লাভলুসহ প্রতি বৃহস্পতিবার রাতে ভাগ-বাঁটোয়ারা করতেন। গত বৃহস্পতিবার (৯ জুন) রাতে কামরুলের বাড়িতে লাভলু ও ছেলে সাকিলকে ডেকে নেয় কামরুল ও কবীর। সাকিল ঘরের বাইরে মোবাইলে গেমস খেলতে থাকে, আর পরিকল্পনা মোতাবেক খোড়া কামরুল, কবীর ও রফিকুল পরস্পর যোগসাজশে লাভলু নিয়ে ঘরের মধ্যে থাকে। রাত ১২টার দিকে হঠাৎ একটি গুলির আওয়াজ শুনে সাকিল ঘরের মধ্যে গিয়ে তার বাবাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে। তখন খোড়া কামরুল, তাঁর স্ত্রী ও বোন, সঙ্গীয় কবীর ও রফিকুল সাকিলকে সান্ত্বনা দেয় লাভলুর বুকে গুলি লেগে মরে গেছে। ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য সাকিলকে অর্থ, স্বর্ণ ও জীবন জীবিকার লোভ দেখায় তাঁরা। কামরুলের নির্দেশে কবীর ও রফিকুল মোটরসাইকেল যোগে বেলতলা আমবাগানের মধ্যে লাভলুর মরদেহ গুম করে এবং সাকিলকে একটি পিস্তল ও গুলি দিয়ে লুকিয়ে রাখতে বলে। লাভলু তাঁর ছোট ভাইয়ের হত্যার বাদী হওয়ায় ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে সাকিলকে হত্যাকারী কামরুল গং পরামর্শ দেয় বলে জানায় সাকিল। 

ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনায় পৃথক হত্যা ও অস্ত্র মামলা হয়েছে। ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম অস্ত্র মামলার বাদী হয়েছেন। আর নিহত লাভলুর বাবা আব্দুল মান্নান হত্যা মামলার বাদী হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

রাজধানীতে অপরাধ: ১৪ ভাগ করে মিরপুর নিয়ন্ত্রণ করছে চার শীর্ষ সন্ত্রাসী

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ