Ajker Patrika

গাজীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯: ৫০
গাজীপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ

গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে সমাবেশ করার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিএমপি) সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে গতকাল রোববার টঙ্গী সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

টঙ্গী সরকারি কলেজের বিএসসি (পাস) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মিরাজুর রহমান রায়হান এই অভিযোগ দেন। তিনি গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানার আউচপাড়া এলাকার ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিতে পাঠিয়েছি। তারা এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

একই ঘটনায় মহানগরীর টঙ্গী পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। জিএমপির টঙ্গী পশ্চিম থানায় কলেজের পক্ষে জিডি করেছেন কলেজের হিসাবরক্ষক মো. রুকন উদ্দিন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, টঙ্গী সরকারি কলেজে শীতকালীন ও বিজয় দিবসের ছুটি চলছে। এ উপলক্ষে কলেজের সব ফটক বন্ধ। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন এবং তাঁর সমর্থক ও প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র) কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তালা ভেঙে কলেজের মাঠে জনসভা করেন। নির্বাচনী আইনে তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও কলেজের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলাসহ কলেজের ছাত্র কমনরুম ভাঙচুর করা হয়।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, তাতে নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট হয়েছে। তাঁদের এই অন্যায় কর্মকাণ্ড ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে তিনি কলেজে গিয়ে উপস্থিত লোকজনের কাছ থেকে শুনতে পান। লিখিত অভিযোগে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করার দায়ে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়।

টঙ্গী সরকারি কলেজের গেটে স্বতন্ত্র প্রার্থী বুদ্দিন ও জাহাঙ্গীর।এ বিষয়ে টঙ্গী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মিরাজুর রহমান রায়হান বলেন, ‘আমি কলেজের একজন শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় ভোটার। ঘটনাটি জানার পর দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমি কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে, এখানে সমাবেশ করার কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। কলেজ বন্ধ থাকায় নিরাপত্তার কারণে সব গেট তালাবদ্ধ থাকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র বিনা অনুমতিতে তালা ভেঙে কলেজে ঢুকে সমাবেশ করেছেন, ভাঙচুর করেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা মহোদয় আমার অভিযোগ গ্রহণ করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’

এদিকে টঙ্গী পশ্চিম থানায় কলেজের পক্ষে কলেজের হিসাবরক্ষক মো. রুকন উদ্দিনের করা জিডির বিষয়ে জিএমপির টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘কলেজের হিসাবরক্ষক মো. রুকন উদ্দিন একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আমরা আদালতের অনুমতি নিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে আদালতকে জানাব।’ জিডির বিষয়বস্তু সম্পর্কে তিনি বলেন, জিডিতে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করা ও ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ আছে। তবে সেখানে কোনো বিবাদীর নাম নেই।

গতকাল রোববার সকালে টঙ্গীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী আলিম উদ্দিন বুদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন গাজীপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের নির্দেশে ছাত্রলীগের কর্মীরা কলেজটির ফটকে তালা দিয়ে তাঁদের নির্বাচনী কাজে বাধা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি কলেজে সরকারিভাবে ছুটি চলছে। নিরাপত্তার কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষ গেটে তালা দিয়ে রেখেছিল। একজন প্রার্থী বিনা অনুমতিতে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তাঁরা উল্টো আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য আমাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছেন। তাঁরা প্রতিদিন আমার বাড়ির আশপাশেও প্রচার করছেন, মাইকিং করছেন। তাঁদের কেউ কোনো বাধা দিচ্ছে না। আমি আচরণবিধি মেনে নির্বাচনী প্রচার করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলী এলাকার মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ঢুকেছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। হাত থেকে লিফলেট দিয়ে দোকানদারের সঙ্গে কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত ছিলেন এরশাদ উল্লাহ। সাথে ছিলেন ১৫–২০ জনের মতো নেতা–কর্মী।

বিএনপি প্রার্থীর খুব কাছাকাছি ছিলেন এক ডজনের বেশি মামলার আসামি সরওয়ার বাবলা (৪৩)। তাঁর গায়ে ছিল সাদা প্যান্ট ও গেঞ্জি। গেঞ্জির পেছনে বড় অক্ষরের ইংরেজি লেখা। বাবলার পিঠের কাছাকাছি একজন সেলফিতে ব্যস্ত, আচমকা পেছন থেকে একটি হাত উঠে, বাড়ন্ত ওই হাতে ছিল স্বয়ংক্রিয় পিস্তল। কেউ কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই ঠাস ঠাস আওয়াজ। মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন বাবলা। মুহূর্তের মধ্যে সটকে পড়ে হামলাকারীরা। সবার মুখে মাস্ক ছিল। সংখ্যায় তাঁরা ৮ জনের মতো ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাহাবুদ্দিন ও মো. ইসমাইল জানান, গণসংযোগকালে প্রায় ৭/৮ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ খুব কাছ থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।

ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পিতা আবদুল কাদের ও ভাই মো. আজিজ আহাজারি করে বলেন, এভাবে গুলি করে বাবলাকে মারার ঘটনা নজিরবিহীন। কার কাছে বিচার চাইব।

ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাহাবুদ্দিন জানান, গণসংযোগের প্রচারনা দলের সাথে মিশে গিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। কেউ কোন কিছু আঁচ করতে পারেনি এই কারণে।

এই ঘটনায় পাশে থাকা বিএনপি প্রার্থী এরশাদের সঙ্গে শান্ত নামে আরেকজন গুলিবিদ্ধ হন। সবাইকে কাছাকাছি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুজন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনজনের মধ্যে সরোয়ার বাবলা মারা গেছেন। বাকি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বায়েজিদ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে কাউকে ঘটনাস্থল থেকে কিংবা অন্য কোনো স্থান থেকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, গোলাগুলির ঘটনায় একজন মারা গেছেন। আহত দুইজনের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। ঘটনার বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। যেকোন মূল্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রামে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী গণসংযোগে অংশ নেয় সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা। বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরের বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে মাগরিবের নামাজের পরপরই শুরু হওয়া নির্বাচনী গণসংযোগে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় যুবক খুন, স্ত্রী ও তাঁর মামাতো ভাই গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় জহুরুল ইসলাম (৩৮) নামের এক যুবককে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বগুড়া সদরের হাজরাদীঘি গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলামের রক্তাক্ত লাশ গতকাল মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামের একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোরে নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা বেগম (২৮) ও বিপুল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিপুল শামিমার মামাতো ভাই।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে হাজরাদীঘি গ্রামের একটি ধানখেতে জহুরুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। নিহত যুবকের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের একাধিক চিহ্ন ছিল। লাশ উদ্ধারের পর নিহত যুবকের স্ত্রী পুলিশকে জানান, গত সোমবার রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে কে বা কারা জহুরুলকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাতে জহুরুল আর ফিরে আসেননি। কিন্তু পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তিগত তদন্ত করে নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা ও তাঁর মামাতো ভাই পার্শ্ববর্তী অন্তাহার গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে বিপুল হোসেনকে সন্দেহ করে। পরে আজ ভোরে নিহত জহুরুলের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী শামিমা ও বিপুলকে আটক করে।

থানায় দুজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হয় চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা পুলিশকে জানান, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন। আর জহুরুল ও বিপুল একে অপরের খালাতো ভাই। জহুরুল ইসলামের বাড়ি কাহালু উপজেলায় হলেও বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর ছোটবেলা থেকেই তিনি মামার বাড়ি হাজরাদীঘি গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি পেশায় বেকারি পণ্যসামগ্রী পরিবহনের ভ্যানচালক আর বিপুল পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। জহুরুলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় ১৫ বছর আগে। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। জহুরুলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার আগে থেকেই বিপুলের সঙ্গে শামিমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও তাঁরা প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিপুল মাঝেমধ্যে শামিমার বাড়িতে আসতেন। শামিমার বাবা বিপুল ও জহুরুলের মামা হওয়ার কারণে গ্রামের লোকজন বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখতেন না। কিন্তু বিপুলের যাতায়াত পছন্দ করতেন না জহুরুল। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে জহুরুলের দাম্পত্যকলহ লেগেই থাকত। শামিমার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বিপুল তাঁকে একটি ছোট মোবাইল ফোন কিনে দেন। সেই ফোনটি শামিমা লুকিয়ে রাখতেন। এভাবে দীর্ঘদিন সম্পর্ক চলার একপর্যায় স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিপুলের সঙ্গে পরামর্শ করেন শামিমা। দুজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার রাতে শামিমা দুধের সঙ্গে কৌশলে তাঁর স্বামীকে ১৫টি ঘুমের বড়ি সেবন করান। কিছুক্ষণ পর অচেতন হয়ে পড়লে রাত ১১টার দিকে বিপুল শামিমার বাড়ি আসেন। এরপর বিপুল কাঁধে করে জহুরুলকে বাড়ি থেকে বের করে গ্রামের একটি মাঠে পরিত্যক্ত বাড়ির কাছে নিয়ে যান। এ সময় সঙ্গে শামিমাও সেখানে যান। এরপর জহুরুলের মাথা পরিত্যক্ত বাড়ির দেয়ালের সঙ্গে কয়েকবার আঘাত করেন। একপর্যায়ে একটি পুরোনো স্যানিটারি প্যানের পরিত্যক্ত ভাঙা অংশ দিয়ে জহুরুলের মাথায় একাধিক আঘাত করে পাশের ধানখেতে ফেলে রেখে দুজন চলে যান।

পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান জানান, নিহত জহুরুলের মা-বাবার সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ না থাকায় এ ঘটনায় গ্রেপ্তার শামিমার বাবা শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় দুজনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

পিরোজপুরের নেছারাবাদে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৯) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেন।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন নয়ন (২০), অপূর্ব (২০) ও দুর্জয় হালদার (২০)।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পিরোজপুর সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রতিবেশী দুর্জয় হালদারের ঘরে মোবাইল চার্জার আনতে গেলে মুখে গামছা বেঁধে নয়ন, অপূর্ব ও দুর্জয় জোরপূর্বক তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া আসামিরা বিভিন্ন সময়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের লাশ উদ্ধারের পর সম্পাদক পলাতক

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুস সিকদারের (৫০) লাশ উদ্ধারের পর থেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম সবুর মিয়া পলাতক রয়েছেন।

উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার একটি সেতুর নিচ থেকে বুধবার সকাল ৮টার দিকে ইউনুস সিকদারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ইউনুস উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের অভিযোগ, ইউনুস গতকাল মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম সবুর মিয়ার বাড়িতে আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকে সবুর মিয়া পলাতক।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর জানান, সেতুর নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় একজন পুরুষের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ওপরে তুলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গ পাঠিয়েছে।

ওসি জানান, ধারণা করা হচ্ছে, লেনদেনসংক্রান্ত পাওনা টাকা আদায়ের জন্য এই হত্যাকাণ্ড। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

টেকনাফ পৌর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ইউনুসকে কমিটির কথা বলে সবুর মিয়া আমন্ত্রণ জানান। মঙ্গলবার রাতে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ সেতুর নিচে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পর সবুর মিয়া পলাতক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রঙ্গিখালী এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ইউনুস প্রায়ই সবুর মিয়ার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। সবুর মিয়া, আবছার উদ্দিন, আনোয়ার হোসাইন ওরফে লেটাইয়্যা, মিজানুর রহমান ওরফে বাড়ু মিজানসহ কয়েকজন মিলে এলাকার দোকানে আড্ডাও দিতেন। কয়েক দিন ধরে ইয়াবাসংক্রান্ত পাওয়া টাকার বিরোধের জেরেই তাঁদের মধ্যে প্রকাশ্যে কথা-কাটাকাটির ঘটনা শোনা গেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে সবুর মিয়ার বাড়িতে ইউনুসকে আটকে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। এতে মারা যাওয়ার পর লাশ সেতুর নিচে রেখে বাড়িতে তালা দিয়ে সবুরসহ অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।

নিহতের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কোনো প্রকার টাকার লেনদেন নেই। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’

ওসি জানান, পাওয়া টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কী লেনদেনের টাকা, জানা যায়নি। যাঁদের নাম বলা হচ্ছে, তাঁদের ধরতে চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত