Ajker Patrika

পোশাক কারখানায় রাতভর নির্যাতনে ইলেকট্রিশিয়ানের মৃত্যু, সহকর্মী গ্রেপ্তার

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, ১৫: ৪২
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে পোশাক কারখানায় এক ইলেকট্রিশিয়ানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন কাশিমপুর রোডের একটি পোশাক কারখানায় গত শুক্রবার (২৭ জুন) রাত ৮টা থেকে শনিবার ভোরের মধ্যে কোনো এক সময় তাঁর মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রথমে গোপন করার চেষ্টা করায় ঘটনাটি দেরিতে প্রকাশ পায়।

নিহত ইলেকট্রিশিয়ানের নাম হৃদয় (১৯)। তিনি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার শুকতারবাইদ এলাকার বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে। হৃদয় গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন হারিনাবাড়ী এসরারনগর হাউজিং এলাকায় মিরাজের বাড়িতে মা-বোনসহ ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি স্থানীয় গ্রিনল্যান্ড ফ্যাক্টরিতে ডাইং সেকশনের ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে অস্থায়ীভাবে কাজ করতেন।

এ ঘটনায় কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ উদ্দীন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম হাসান মাহমুদ মিঠুন (২৮)। তিনি গ্রিনল্যান্ড ফ্যাক্টরির কর্মচারী বলে জানা গেছে। মিঠুন টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার হাদিরা বাজার এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং কোনাবাড়ীর কুদ্দুসনগর এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘটনার খবর আশপাশের অন্য গার্মেন্টসে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ৪০০-৫০০ শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন এবং গ্রিনল্যান্ড গার্মেন্টস কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে হৃদয় হত্যার বিচার দাবি করেন। এ সময় তাঁরা কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও জানান, ‎হত্যাকাণ্ডের পর কর্তৃপক্ষ গার্মেন্টসের মূল ফটকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে।

‎‎এ বিষয়ে কোনাবাড়ী থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘প্রথমে আমাদের কাছে খবর আসে একজন চোর ফ্যাক্টরির দেয়াল টপকে ভেতরে আসার সময় ড্রেনে পড়ে আহত হলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনার সময় জিএমপি উত্তর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারসহ আমরা একটি মামলার তদন্তে ছিলাম। এ সময় খবর আসে কয়েক শ শ্রমিক ফ্যাক্টরি ভাঙচুর করছে, আমরা দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। পরে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ এলে তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়।’

ওসি সালাউদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর আমরা কারখানায় অভিযান চালিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ এবং হত্যায় ব্যবহৃত অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হই, এটি হত্যাকাণ্ড।’

ওসি আরও বলেন, ‘গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার পরে কারখানার ভেতরে হৃদয়কে নির্যাতন করার ফুটেজ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতেই হৃদয় মারা যান। পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে শনিবার সকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে হৃদয়ের লাশ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে কারখানার সবাই পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনা জানতে পেরে বিক্ষোভ করে ও আমরা খবর পাই।’

এদিকে সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত শুক্রবার রাতে কিছু লোক হৃদয়কে দড়ি দিয়ে হাত পিছমোড়া করে বেঁধে কারখানার ভেতরে একটি কক্ষে নিয়ে যাচ্ছেন। পরে ওই কক্ষে তাঁর ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। গত শনিবার সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে কারখানার ভেতরে একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে দেখা যায়। হৃদয়কে নিয়ে ১০টা ২১ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্সটি কারখানা ত্যাগ করে।

হৃদয় মারা যাওয়ার পর তাঁর একাধিক ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। ছবিতে দেখা যায়, হাঁটুতে, কোমরে, পিঠে, হাতের কবজিতে, কনুইয়ে, হাতের নখে, গলায় ও মুখমণ্ডল রক্তাক্ত ও কালচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশ মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

কোনাবাড়ী থানার ওসি বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয়, হৃদয়কে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। উত্তেজিত শ্রমিকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ওই কারখানায় অভিযান চালাই এবং সিসিটিভির ফুটেজসহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হই যে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় আমরা ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করি এবং অভিযান চালিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে একজনকে গ্রেপ্তার করি। অন্য জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।’

এ ঘটনায় নিহত হৃদয়ের ভাই লিটন মিয়া (৩৭) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোনাবাড়ী থানায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলাটি গত শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় রুজু করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট থেকে নিখোঁজ ৪ শিশু ঢাকায় খাবার হোটেলে কাজ করছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি

‎সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া চার শিশুকে রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে রেলওয়ে কলোনির একটি খাবার হোটেল থেকে এদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

‎শাহজাহানপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার অধিযাচনপত্রের (রিকুইজিশন) ভিত্তিতে শাহজাহানপুর থানার একটি দল গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রেলওয়ে কলোনির একটি হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে ওই হোটেল থেকে চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

‎পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশুরা জানিয়েছে তারা সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পথ হারিয়ে ফেলে। এরপর ছয় দিন ধরে বিভিন্ন হোটেলে বয়ের কাজ করছিল।

‎উদ্ধারের পর শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জকিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন র‍্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।

গ্রেপ্তার হওয়া ইমরান আহমদ (৩০) জকিগঞ্জ উপজেলার নিদনপুর গ্রামের খছরুজ্জামানের ছেলে।

র‍্যাব-৯ জানায়, সিলেটের জকিগঞ্জ থানার বারহাল এহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী গত ২৬ জুলাই সকালে জকিগঞ্জ থানাধীন ফারুক মিয়ার পরিত্যক্ত আদিম ব্রিকস ফিল্ডে ঘুরতে যাওয়ার পর আসামিরা গোপনে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর ছবি তোলে। আসামিরা ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে বলে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখায় এবং অনৈতিক প্রস্তাব করে। ভিকটিম তাতে রাজি না হলে আসামিরা তাকে ও তার বন্ধুকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ব্রিকস ফিল্ডের ভেতরে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বন্ধু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে প্রাণে হত্যার ভয় দেখায় এবং তাকে আটকে রাখে।

পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দলবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং ভিকটিমকে ওই বিষয়টি কাউকে বা পুলিশকে না জানানোর জন্য হত্যার হুমকি দেয়।

বিষয়টি ভিকটিম ভয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু পরে অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজনকে জানানোর পর ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে।

পরবর্তী সময়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি শাকের আহমদকে গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ আরও জানান, পরবর্তী আইনিব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তার আসামিকে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‍্যাব-৯-এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা সীমান্ত থেকে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা সেক্টরের সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পৃথক অভিযানে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সীমান্তঘেঁষা এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় খাদ্যসামগ্রী।

লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচার প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জব্দ করা পণ্যগুলো আইনিপ্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা, তদন্তে ডিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৯
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে কাজী মুকিতুজ্জামান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহাদী হাসান জুয়েল জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে নিয়ে মন্তব্য করায় এই মামলা করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আসামি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের সুনাম ক্ষুণ্ন ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।

গত ১ নভেম্বর যুবদল নেতা নয়নকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন,“জুলাই সনদ নিয়ে একটি বড় দল গুন্ডামি করছে, ঢাকা মহানগরের একজন নেতা আছে নয়ন একা যে পরিমাণ চাঁদাবাজি করেছে এবং দুর্নীতি করেছে— এই টাকা দিয়েও বাংলাদেশে একটা গণভোট সম্ভব। আমরা ওনাদেরকে এত দিন জমজমের পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে চেষ্টা করেছি, ওনাদের মাথা ক্লিন হয় নাই, বডিও ক্লিন হয় নাই। এখন আমার মনে হয় ওনাদেরকে বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।”

মামলার আরজিতে বাদী বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য বাদীর দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, দলের নেতার নামে কুৎসা রটিয়ে তাঁর মানহানি করেছে। একই সঙ্গে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, যা মানহানিকর অপরাধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত