Ajker Patrika

নারীকে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন: গলায় জুতার মালা, কেটে দেওয়া হয় চুল

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ২১: ০৫
গাছে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত
গাছে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গাছে বেঁধে এক নারীকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে (ভাইরাল)।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় ও ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘গত রোববার দুপুরে স্থানীয় প্রভাবশালী ইউনুস মিয়া ও তার লোকজন আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। পরে তারা বেধড়ক মারধর করে। মাথার চুল কেটে দেয়। জুতার মালা পরিয়ে দেয়। পরে বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। সমাজে তাদের ব্যাপক প্রভাব। ফলে ওই প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খুলছেন না স্থানীয় কেউ। এ ঘটনায় হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে একটি অভিযোগ দিয়েছি।’

ওই নারী আরও বলেন, ‘আমার শরীরে এখনো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নির্যাতন করে আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। ঘরের ভেতরে গরু বিক্রির টাকা সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। তারা আমাকে এখানে থাকতে দেবে না। তারা আমার বসতভিটার জমিটুকু নিতে চায়। পূর্বশত্রুতার জেরে আমাকে মারধর করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তারা আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। মামলা না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে বাড়ির বাইরে যেতে পারছি না। নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছি আমরা। তাদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

সরেজমিন ও অভিযোগে জানা গেছে, গত রোববার ওই নারী পার্শ্ববর্তী একটি গ্রামে বড় জায়ের বাপের বাড়িতে পোশাক তৈরি করতে যান। সেখান থেকে নিজের বাড়িতে ফেরার পর তাঁকে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে মারধর শুরু করেন স্থানীয় ইউনুস মিয়া ও তাঁর সহযোগীরা। একপর্যায়ে উঠানের আমগাছের সঙ্গে পেছনে হাত ও পা দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। সেখানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা নির্যাতন করে প্রভাবশালী নারী ও পুরুষেরা। কাঠ আর বাঁশের লাঠি দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। পরে মাথার চুল কেটে এবং মুখে রং মেখে দেওয়া হয়। তারপর জুতার মালা পরিয়ে দিয়ে তাঁকে বিবস্ত্র করে রাখা হয়। এরপর ওই নারী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ওই নারীর হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামান মজনু বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে ইউনুস মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি সাংবাদিকের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। এ সময় তাঁর লোকজন উল্টো সাংবাদিকের ছবি ও ভিডিওচিত্র ধারণ করেন।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার আওতাধীন হরিণাবাড়ী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) সবুজার আলী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীকে নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে। থানায় মামলা করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কুমিল্লা থেকে বগুড়ায় গিয়ে ককটেল বানানোর সময় বিস্ফোরণ, আহত অবস্থায় আটক ১

বগুড়া প্রতিনিধি
আহত অবস্থায় আটক আতাউর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আহত অবস্থায় আটক আতাউর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার গাবতলীতে ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে আহত এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে পুলিশ হেফাজতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার নশিপুর ইউনিয়নের ছোট ইটালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ককটেল বিস্ফোরণে আহত ব্যক্তি আতাউর রহমান (৩৫) কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদেরচর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, ছোট ইটালী গ্রামের মুক্তার হোসেনের স্ত্রী নাসিমা মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন। ওই বাড়িতে মুক্তার হোসেন ও তাঁর প্রতিবন্ধী মা বসবাস করেন। মুক্তার হোসেনের বোনের স্বামী পার্শ্ববর্তী মাঝবাড়ি গ্রামের বাদশা মিয়া আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তাঁরা কুমিল্লা থেকে আতাউর রহমানকে ডেকে এনে বাড়ির একটি ঘরে ককটেল বানাচ্ছিলেন। তিনটি ককটেল বানানোর পর আরেকটি বানানোর সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় লোকজন বিস্ফোরণের শব্দ শুনে ওই বাড়িতে গেলে বাদশা মিয়া ও মুক্তার হোসেন পালিয়ে যান। তাঁরা আতাউর রহমানকে ডান হাত জখম অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে তাঁকে হাসপাতালে নেয়।

ওসি বলেন, আহত অবস্থায় আটক আতাউর রহমান জানিয়েছেন, বাদশা মিয়া তাঁকে ককটেল বানানোর জন্য কুমিল্লা থেকে ডেকে আনেন। ডাকাতির সময় তাঁরা সঙ্গে ককটেল রাখেন। ডাকাতিকালে জনগণের ধাওয়ার মুখে পড়লে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালাতে সহজ হয়। বাদশা মিয়ার নামে গাবতলী থানায় একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আতাউর রহমানের নামে কুমিল্লাতে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। ককটেল বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নামে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ডোবা থেকে হাত-পা বাঁধা মাদ্রাসাছাত্রকে উদ্ধার

চরফ্যাশন সংবাদদাতাভোলা প্রতিনিধি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভোলার চরফ্যাশনে মো. তামিম (১৫) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ডোবা থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার দুলারহাট থানার আবুবকরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, কিশোরের দুই সৎচাচা এই হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটিয়েছে।

ভুক্তভোগী কিশোর ওই ওয়ার্ডের মো. মোস্তফার ছেলে। সে আবুবকরপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্র। ডোবা থেকে উদ্ধারের পর রাতেই তাকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তামিমের মা আরজু বেগম জানান, তাঁর ছেলের দুই চাচা শেখ ফরিদ ও খোকন তাঁর স্বামীর সৎভাই। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে সৎভাইদের বিরোধ রয়েছে। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে ঢাকায় থাকেন। মা ও ছেলে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। গত ২৭ অক্টোবর ছেলেকে রেখে তিনি তাঁর বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। গত বৃহস্পতিবার সুপারি চুরির অপবাদ দিয়ে শেখ ফরিদ ও খোকন তাঁর ছেলেকে মারধর করেন। এ খবর শুনে আরজু তাঁর বাবার বাড়ি থেকে ফিরে আসেন। ছেলের বরাত দিয়ে আরজু বেগম আরও জানান, গতকাল মাগরিবের নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে শেখ ফরিদসহ আরও চারজন লোক তাঁর ছেলের পথ আটকায়। এ সময় শেখ ফরিদ তাঁর ছেলের মাথায় আঘাতসহ মারধর করেন। তাঁদের মারধরে তামিম অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর তার হাত পা-বেঁধে পাশের একটি ডোবায় ফেলে দেয়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর তামিমের জ্ঞান ফিরে এলে তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শেখ ফরিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর ভাই খোকন বলেন, ‘তামিম আমার ভাতিজা। তাদের সঙ্গে পারিবারিক ঝামেলা রয়েছে। তবে তামিমকে ডোবায় ফেলার ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ ইফতেখার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তামিম নামের এক মাদ্রাসাছাত্রকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ডোবা থেকে উদ্ধার করার খবর শুনেছি। ছেলেটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) ডেন্টাল ইউনিটের শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার দুপুরে শহরের হেতেম খাঁ এলাকায় রামেকের ডেন্টাল ইউনিটের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী জেনারেল হাসপাতালে ডেন্টাল ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এখানে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, সরঞ্জাম, জনবলসহ সব সুবিধা বিদ্যমান। তাই এই বিদ্যমান অবকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে রাজশাহীতে পৃথক একটি ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত উদ্যোগ হবে।

রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজশাহীতে পৃথক ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, রাজশাহী অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত ডেন্টাল শিক্ষা ও স্থানীয় জনগণের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে দ্রুত রাজশাহী ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা প্রয়োজন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ডেন্টাল ইউনিটের লেকচারার ডা. মো. মাহফুজুর রহমান রাজ, ইন্টার্ন চিকিৎসক মো. নাসরুল্লাহ শেখ, শিক্ষার্থী গোলাম মর্তুজা বাঁধন, পরিতোষ রায় প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গণপিটুনিতে নিহত সেই রূপলালের মেয়ের বিয়ে আজ

রংপুর প্রতিনিধি
রূপলালের বাড়ির সামনে বিয়ের গেট সাজানো হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
রূপলালের বাড়ির সামনে বিয়ের গেট সাজানো হয়েছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন মাস আগে মেয়ের বিয়ের দিন ঠিক করার জন্য পথ ভুলে যাওয়া ভাগনি জামাইকে এগিয়ে আনতে গিয়ে মবের শিকার হয়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারান রূপলাল রবিদাস। সেই শোক মনে নিয়েই আজ রোববার তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর গ্রামে রূপলালের বাড়িতে আজ সকাল থেকে চলছে ব্যস্ততা। সড়কে রঙিন গেট, উঠানে বাঁশের মাচা, মণ্ডপ, রঙিন কাপড়ের প্যান্ডেল, ধোঁয়া উঠছে রান্নার হাঁড়ি থেকে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয়, আনন্দঘন উৎসব, কিন্তু একটু কাছে গেলে বোঝা যায়—এই উৎসবের ভেতর পরিবারের সদস্যদের মনে লুকিয়ে রয়েছে রূপলালকে হারানোর গভীর ব্যথা।

রূপলালের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত ১০ আগস্ট রূপলালের বড় মেয়ে নুপুর রানীর বিয়ের দিন ঠিক করার কথা ছিল মিঠাপুকুর উপজেলার শ্যামপুর এলাকার এক তরুণের সঙ্গে। এ জন্য ৯ আগস্ট মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ে আত্মীয় রূপলাল দাসের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন ভাগনি জামাই প্রদীপ দাস। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় এসে রূপলালকে ফোন করেন। রূপলাল সেখানে যান। তাঁরা দুজনে ভ্যানে চড়ে রূপলালের বাড়ি ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন। রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চোর সন্দেহে তাঁদের দুজনকে থামান স্থানীয় কয়েকজন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে মব তৈরি করে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রূপলালের স্ত্রী হত্যা মামলা করলে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

বাবার মৃত্যুর পর নুপুর রানীর বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। রূপলালকে হারিয়ে পুরো পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে। তবে রূপলালের পরিবার জানিয়েছে, মেয়ের বিয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ, তারাগঞ্জ হাটের ব্যবসায়ীরা ৭১ হাজার, উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ৭৫ হাজার, একটি সংগঠন থেকে এক লাখ টাকা টাকা পেয়েছে তারা। এ ছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন ব্যক্তি রূপলালের ছেলে জয় রবিদাস ও ছোট মেয়ে রুপার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন। তাদের সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমেও শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকায় তারা পড়াশোনা করছে।

রূপলালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের ভেতরে কনে নুপুর রবিদাস বসে আছেন বিয়ের শাড়িতে। মুখে বিয়ের সাজ, কিন্তু চোখ দুটো লাল। পাশে মা ভারতী রানী নীরবে অতিথি আপ্যায়নের প্রস্তুতি সামলাচ্ছেন।

রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বলেন, ‘বেটির বিয়া ঠিক করার জন্য জামাইকে আনতে যাওয়া আমার নির্দোষ স্বামীক মিথ্যা অপবাদ দিয়া মারি ফেলছে। আজ বেটির বিয়া, ওর বাপ নাই চিন্তা করতেই বুকটা ফাটি যাওছে (যাচ্ছে)। ওমাক (রূপলাল) ছাড়া পুরা বাড়ি ফাঁকা ফাঁকা লাগেছে। কষ্টে ভেতরটা ভাঙি যাওছে।’

নুপুর বলেন, ‘বাবার খুব ইচ্ছে ছিল ধুমধাম আয়োজন করে আমার বিয়ে দেবে। এখন সব আয়োজন হচ্ছে, কিন্তু আমার মনে কেবল বাবার মুখটা ভাসে। বাবা নেই, কে আমাকে আশীর্বাদ দিবে। হত্যাকারীরা এখনো ধরা পড়েনি, হাটবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার বাবাকে যারা মেরেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, ‘রূপলালের মেয়ের বিয়ের জন্য এক লাখ টাকা দেওয়া হযেছে। ছেলে ও ছোট মেয়ের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তারাগঞ্জ বাজারে রূপলালের ছেলের জন্য একটি দোকান দেওয়া হবে। আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

নতুন যুগের ১০টি সম্ভাবনাময় পেশা

জাকির নায়েক বিতর্কে ভারতের প্রতিক্রিয়ার যে জবাব দিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সকাল থেকে রাজধানীতে তীব্র যানজট, কারণ জানাল ডিএমপি

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটবেন না, মুরাদ টাকলার সঙ্গে দেখা হবে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত