Ajker Patrika

মুন্সিগঞ্জে চাহিদার চেয়েও ১২ হাজার বেশি কোরবানির পশু প্রস্তুত

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ)
আপডেট : ৩০ মে ২০২৫, ০৯: ১৭
মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলায় ৬ হাজার ২৭২ জন খামারি ৮১ হাজার ৮৭৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলায় ৬ হাজার ২৭২ জন খামারি ৮১ হাজার ৮৭৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মুন্সিগঞ্জ জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে রেকর্ডসংখ্যক পশু। জেলার ছয়টি উপজেলায় ৬ হাজার ২৭২ জন খামারি মোট ৮১ হাজার ৮৭৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন। অথচ জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা ৬৯ হাজার ৭৭০টি। ফলে প্রায় ১২ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকায় ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় সরবরাহের পরিকল্পনা করছেন খামারিরা।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত হয়েছে গজারিয়া উপজেলায়, যেখানে ২৫ হাজার ৩৫১টি পশু প্রস্তুত থাকলেও স্থানীয় চাহিদা ১৮ হাজার ৫০০টির মতো। টঙ্গিবাড়ী, শ্রীনগর, সদর, সিরাজদিখান ও লৌহজংয়েও রয়েছে উল্লেখযোগ্য উদ্বৃত্ত।

রশুনিয়া ইউনিয়নের ফাহাদ এগ্রো ফার্মের মালিক অহিদুল ইসলাম বলেন, “২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ফিরে এসে খামার শুরু করি। বর্তমানে খামারে রয়েছে ১০টি অস্ট্রেলিয়ান ক্রস জাতের গরু, যেগুলোর দাম ১ লাখ ৯০ হাজার থেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে। গত বছর ৫৫ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। এবার ওজন বেশি হওয়ায় লাভ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।”

রাহাত এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী তুহিন আহমেদ হৃদয় বলেন, “২০১৮ সালে মাত্র দুটি গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করি। ২০২২ সালে আটটি গরু বিক্রি করে প্রায় ৫ লাখ টাকা লাভ করি। বর্তমানে খামারে রয়েছে ২৬টি গরু, যার মধ্যে ১৫টি কোরবানির জন্য প্রস্তুত। আমরা ইনজেকশনমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত পশু বিক্রিতে বিশ্বাস করি। শুধু লাভ নয়, আমরা মানুষের আস্থা অর্জন করতে চাই।”

মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলায় ৬ হাজার ২৭২ জন খামারি ৮১ হাজার ৮৭৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলায় ৬ হাজার ২৭২ জন খামারি ৮১ হাজার ৮৭৫টি পশু প্রস্তুত করেছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গজারিয়া উপজেলার আড়ালিয়া গ্রামের খামারি ইউনুস আলী জানান, “আমার খামারে বেড়ে উঠেছে বড় ষাঁড় ‘রাজাবাবু’। দেশীয় প্রক্রিয়ায় লালন-পালন করা এই ষাঁড়ের দৈর্ঘ্য ১২ ফুট, উচ্চতা ৮ ফুট এবং ওজন প্রায় ১৫ মণ (৬০০ কেজি)।”

তিনি আরও বলেন, ‘রাজাবাবু আমার নিজের গাভির বাছুর। ছোটবেলা থেকেই যত্ন করে বড় করেছি। প্রতিদিন খাওয়াই কাঁচা কলা, গাজর, কখনো আপেলও। দিনে দুই-তিনবার গোসল করাই। এখন খরচ চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে, তাই এবার কোরবানিতে বিক্রি করব। আশা করছি ৭ লাখ টাকা দাম উঠবে।’

রাজাবাবুকে লালন-পালনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে জানিয়ে ইউনুস বলেন, ‘তবে তার প্রতি ভালোবাসা টাকার হিসাব ছাড়িয়ে গেছে।’

খামারিরা জানান, চাহিদার তুলনায় পশু বেশি হওয়ায় একদিকে ক্রেতারা পাচ্ছেন পছন্দমতো পশু বাছাইয়ের সুযোগ, অন্যদিকে খামারিরাও আশাবাদী, বছরের পরিশ্রম এবার ভালো দাম এনে দেবে। প্রশাসনের সঠিক তদারকি থাকলে নিরাপদ পশু বাণিজ্যে আরও গতি আসবে বলেও তাঁরা মনে করেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় এবার জেলার পশু প্রস্তুতির পরিমাণ বেশি। জেলার ৩৯টি কোরবানির হাটে মোবাইল ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। স্বাস্থ্যবান ও ইনজেকশনমুক্ত পশু নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়া-পাকিস্তান চুক্তি: দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্যে নতুন মোড়ের ইঙ্গিত

নগদের ১৫০ কোটি টাকা বেহাতের অভিযোগ নিয়ে যা বললেন নাহিদের সাবেক পিএ আতিক

আরাকান আর্মির হাতে মিয়ানমারের জেনারেল নিহত, চীনা টার্মিনালের কাছে চলছে লড়াই

সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধই সেনাবাহিনীর চেতনার উৎস: সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার

বগুড়ায় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ৩ পুলিশ ও আনসার সদস্য কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত