Ajker Patrika

পীরের ডেরায় করোনা বলতে কিছু নেই!

আবদুল হামিদ, ঢাকা
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ৫৯
পীরের ডেরায় করোনা বলতে কিছু নেই!

গত বুধবার বেলা ১১টা। রাজধানীর রাজারবাগ পীরের দরবারের প্রবেশ ফটকে গিয়ে দেখা গেল একটি বেঞ্চে বসে আছেন তিনজন, যাঁরা দরবার শরিফের ভেতরে ঢুকছেন, তাঁদের তল্লাশি করছেন এঁদের দুজন। এর মধ্যে একজন জানতে চাইলেন, কেন ভেতরে যাবেন? বলা হলো, হুজুর সম্পর্কে জানার জন্যই আসা। এই জবাবে পাওয়া গেল ঢোকার অনুমতি। তবে একজন বললেন, মুখের মাস্ক খুলে ঢুকতে হবে। এখানে করোনা বলতে কিছু নেই। ভেতরে কেউ মাস্ক পরে না। ভেতরে কোনো মানুষের ছবি তোলা যাবে না, ইলেকট্রনিক যন্ত্র নিয়ে ঢোকা যাবে না।

রাজারবাগের এই পীর দিল্লুর রহমান ও তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কোনো ধরনের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্তে গত মঙ্গলবার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তাঁর ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব সম্পত্তি রয়েছে, সেগুলোর উৎস সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। রাজারবাগের পীর ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দিয়ে মানুষের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ অনেক দিনের। এমন কয়েকজনের রিটের পর ওই আদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন বুধবার তাঁদের সার্বিক অবস্থা জানতে গন্তব্য আলোচিত সেই দরবার শরিফ।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের ৩ নম্বর গেটের সামনে পৌঁছে দেখা গেল উল্টো দিকের রাস্তার পাশ দিয়ে সারি সারি কাভার্ড ভ্যান রাখা। সব কাভার্ড ভ্যানের গায়েই রাজারবাগ দরবারের বড় বড় ব্যানার ও পোস্টার সাঁটানো। লেখা—আন্তর্জাতিক সুন্নত প্রচার কেন্দ্র। সেখানে বিক্রি হয় দরবার শরিফে তৈরি নানা দ্রব্য। গ্রিনলাইন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে থেকে দরবার শরিফের মুখ পর্যন্ত ফ্লাইওভারের নিচের অংশ পীরের মালিকানাধীন গাড়ির দখলে।

ফটকে তল্লাশির পর মাস্ক খুলেই ঢুকতে হলো ভেতরে। তবে সঙ্গে দেওয়া হলো আজিজ নামের একজনকে। প্রথমে নেওয়া হলো লাইব্রেরিতে। সেখানে দেখা পাওয়া গেল পীরের এক মুরিদের। তিনি জানালেন পীরের লেখা বিভিন্ন বই সম্পর্কে।

আজিজ এরপর নিয়ে গেলেন লাইব্রেরি লাগোয়া মার্কেটে। এক ছাদের নিচেই সব আয়োজন। মোট পাঁচ ভাগে বিভক্ত সেই মার্কেট। একটিতে বিক্রি হচ্ছে প্রসাধনী, এক জায়গায় কাঠ দিয়ে বানানো সবকিছু। সেখানে আছে কাঠের থালা, গ্লাস, বাটি, চামচ, খুন্তিসহ খাওয়া ও সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র। সঙ্গে থাকা আজিজ জানালেন, দরবার শরিফে কাঠের থালায় ভাত খাওয়ার নিয়ম। মাটি-কাঠের গ্লাস বা কাঠের বাটিতে পানি খেতে হবে।

জানা গেল, পীর দিল্লুর রহমানের আসন পাঁচতলায়। সেখানে দিনের বেলা যাওয়া নিষেধ। তিনি তখন ঘুমাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার পর সবাই যেতে পারবে।

দরবার থেকে বেরিয়ে লাগোয়া গলির কয়েকজন দোকানদারের সঙ্গে কথা হলো। তাঁরা জানালেন, দরবারের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে সমস্যা হয়। পীরের মুরিদরা হুমকি-ধমকি দেন। একজন বলেন, পত্রিকায় দেখেছি পীরসাহেব এলাকার এক ব্যক্তির জমি দখল করে নিতে মামলা করেছেন।

পীরের দেখা পেতে ওই দিনই রাত ১১টা ১৫ মিনিটে আরারও রাজারবাগ শরিফের গেটে। সকালে ছোট গেট খোলা থাকলেও গভীর রাতে মূল গেট খোলা। ওপরে চলছে পীরের বয়ান। ঢোকার সময় আবারও সেই মাস্ক বিড়ম্বনা। খুলতে না চাইলে গেটে দায়িত্বে থাকা মুরিদ আবুল হাসান (৪৫) বলতে শুরু করলেন, ‘আমাদের এখানে কেউ মাস্ক পরে না। করোনা বলতে কিছু নাই। অ্যালার্জি বেড়ে গেলে এবং ঠান্ডা লাগলে সরকার এটাকে করোনা বলে দিচ্ছে। সরকার করোনার যে রিপোর্ট দেখায়, সব ভুয়া। আমরা এসব বিশ্বাস করি না।’

নিচতলায় জুতা রেখে ওপরের দিকে ওঠা শুরু। দোতলায় ছাত্র আঞ্জুমান আল বাইয়্যিনাত শাখার থাকার ব্যবস্থা। তৃতীয় তলায় দেখা মিলল যুবা আঞ্জুমান আল বাইয়্যিনাতদের আবাসিক জায়গা। এঁদের মধ্যে অনেকই মুরিদদের মোবাইল সংরক্ষণের জন্য বসে আছেন। চারতলায় ভারী লোহার দরজা। কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা গেটের সামনে। বোঝা গেল, পীর চারতলাতেই থাকেন।

পাঁচতলায় চলছে পীরের বয়ান। কনফারেন্স রুমের ডান দিকে বিভিন্ন ধরনের জিনিস বিক্রির স্টল রয়েছে। সেখান থেকে ৫৫ টাকার একটা টুপি কেনার পর মাথায় পরিয়ে দিলেন দায়িত্বরত একজন।

ভেতরে প্রবেশ করতেই ভিন্ন চিত্র। সবার গায়ে সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা-পাগড়ি। এক শর মতো শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মানুষ বসা। কনফারেন্স কক্ষটি তিন ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে একটি অংশে চারটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), একটি ডায়াস ও ১২টি ফ্যানসহ গ্লাস দিয়ে সংরক্ষিত, কেউ ছিল না। মধ্য অংশে ২৪টি ফ্যান ও ১০টি এসি এবং ২০টির মতো স্পিকার লাগানো। সেখানে মুরিদেরা বসেন। আরেক অংশে বসেন কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিটি, পীর দিল্লুর রহমান। সেখানে দুটি এসি, সঙ্গে ফ্যান। স্বচ্ছ গ্লাস দিয়ে ঘেরা। সেখানে থাকেন পীরের কাছের মুরিদরা। বাইরে দুই পাশে দুজন নিরাপত্তাপ্রহরী।

কাছে যাওয়ার সুযোগ হলো না। একটু দূর থেকেই দেখতে হলো। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া লোকটিই পীর দিল্লুর রহমান। সাদা পাঞ্জাবি-পাজামা আর পাগড়ি পরা পীরের প্রায় মুখের সঙ্গে লাগোয়া তিনটি স্পিকার। তবু তাঁর কথা স্পষ্ট নয়। কিছু বোঝা যায়, বেশির ভাগই বোঝা যায় না। তবে মুরিদরা কিছুক্ষণ পরপর অদ্ভুত আওয়াজ করেন। জানা গেল, প্রতি রাতে ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বয়ান করেন দিল্লুর রহমান।

যা বোঝা গেল, পীরসাহেবের বুধবারের বয়ান ছিল সমসাময়িক বিষয় নিয়ে। তিনি বলেন, ‘দুই টাকার মিডিয়া ও পত্রিকা আমার কিছুই করতে পারবে না। তা ছাড়া মিডিয়া নিউজ করছে, এখানে নাকি কিছুই চলে না, বন্ধ হয়ে গেছে। এসব মিথ্যা কথা। আদালত ও পুলিশ মিলে মজলিশ বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করছে। তারা বন্ধ করে দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। কই, মজলিশ তো বন্ধ করতে পারল না।’

এত মানুষের যাতায়াত হলেও একটিও ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) নেই রাজারবাগ পীরের আস্তানায়। তাদের দাবি, ছবি তোলা হারাম। এক মুরিদ বললেন, ইসলাম বুঝতে হলে এখানে আসতে হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে হেলে পড়া ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা, ৩ ভবনমালিককে তলব

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া ভবন পরিদর্শন করেন সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আজ রোববার গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া ভবন পরিদর্শন করেন সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আজ রোববার গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া পাঁচতলা ভবনটি পরিদর্শন করেছে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন। এ সময় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে হেলে পড়া ভবন, নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি ভবনের মালিককে অনুমোদনসংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া ভবন পরিদর্শন করেন সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আজ রোববার গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরীতে হেলে পড়া ভবন পরিদর্শন করেন সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আজ রোববার গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর গুলকিবাড়ী বাইলেন কাজি অফিসসংলগ্ন এলাকায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) ও জেলা প্রশাসন।

এ সময় মসিকের সচিব সুমনা আল মজিদ জানান, হেলে পড়া ভবন ও নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং পাশে সম্প্রতি নির্মিত ১৩ তলা ভবনটির মালিকদের ডাকা হয়েছে। এসব ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়েছে কি না, তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুমনা আল মজিদ জানান, ভবন তিনটি বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। নির্মাণাধীন গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের ভবনটিও বিল্ডিং কোড না মেনে পাইলিং করার কারণে পাশের ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে নির্মাণাধীন ভবনের পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় দেয়ালে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও হেলা পড়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

মসিক সচিব বলেন, গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে তৎকালীন পৌরসভা থেকে ১৩ তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদন নেওয়ার তিন বছরের মধ্যে ভবনের নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এখন যে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে, এটির অনুমোদনের মেয়াদ প্রায় পাঁচ বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে তাদের কাগজপত্রসহ তলব করা হয়েছে।

পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন মসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিয়া, নকশা অনুমোদন কমিটির সদস্য প্রকৌশলী নেসার আহম্মেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উম্মে হাবীবা মীরা, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জুলহাস উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার তাহমিনা আক্তার, প্রকৌশলী মোতালেব প্রমুখ।

এদিকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেখে তাঁদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ভবন হেলে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ, নগরীর বেশির ভাগ ভবন বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ করা হয়নি। সরু রাস্তার পাশে ১৩ থেকে ২০ তলা ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

গ্রিন ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের মালিকদের একজন জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মো. কামরুল হাসান মিলন বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আছি। তবে ভবন নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন স্বপন নামের একজন। তাঁর সঙ্গে কথা বলুন।’

পরে ভবন নির্মাণের দায়িত্বে থাকা স্বপনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি।

অপর দিকে হেলে পড়া ভবনটির মালিকের নাম রিয়াজুল আমিন অরুণ। তিনি লন্ডনপ্রবাসী। তাঁর ভাই ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম লিটন এ তথ্য জানান।

রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘সম্প্রতি ভবনের পাশের স্থানে গ্রিন ডেভেলপমেন্ট নামের প্রতিষ্ঠানটি বিল্ডিং কোড না মেনে বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু করে। এ কারণে আমাদের পাঁচতলা ভবনটি হেলে পড়েছে। একই সঙ্গে ভবনের দেয়ালেও ফাটলের রেখা পড়েছে। পরে বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তারা সরেজমিনে এসে বেজমেন্টের কাজ বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। কখন কী হয়, আল্লাহ ভালো জানেন।’

এর আগে গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে হেলে পড়া ভবনটির দেয়ালে ও সামনের অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দেয়। এরপরই বিষয়টি টের পেয়ে ভবনের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ঘটনাটি ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে জানালে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে হেলে পড়া ভবনটির পাশে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে ফায়াস সার্ভিস কর্মীরা হেলে পড়া ভবনের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বাসিন্দাদের সরিয়ে দিয়ে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুদানে হামলা: শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া

গাইবান্ধা, প্রতিনিধি
সবুজ মিয়া । ছবি: সংগৃহীত
সবুজ মিয়া । ছবি: সংগৃহীত

সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় নিহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সবুজ মিয়ার গাইবান্ধার বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। তিনি মিশনের লন্ড্রি কর্মচারী ছিলেন।

সবুজ মিয়া পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের আমলাগাছি (ছোট ভবনপুর) গ্রামের মৃত হাবিদুল ইসলামের ও ছকিনা বেগমের ছেলে।

সবুজ মিয়ার মৃত্যুর খবরে পরিবারের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সবুজ মিয়ার মৃত্যুর খবরে পরিবারের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মহদীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ আকন্দ জানান, প্রায় সাত-আট বছর আগে সবুজ মিয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে লন্ড্রি কর্মচারী হিসেবে যোগদান করেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবুজ মিয়া ছিলেন ছোট। তাঁর বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। সবুজ মিয়া এক বছর আগে বিয়ে করেন। তাঁর স্ত্রী ও মা এখন বাড়িতে আছে। সবুজ মিয়ার মৃত্যুর খবরে পরিবারে মাতম চলছে। একই সঙ্গে গ্রামজুড়েই নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, নিহতের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। দ্রুত এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

উল্লেখ্য, সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন এবং আটজন আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক বেলা ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী এই নৃশংস ড্রোন হামলা চালায় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করছে প্রশাসন

সুবর্ণচর (নোয়াখালী) প্রতিনিধি 
বিলবোর্ড অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিলবোর্ড অপসারণ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নির্বাচনী আচরণবিধি বাস্তবায়নে ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকিব ওসমানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রচারসামগ্রী অপসারণের কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা সরানো হয়নি। ফলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরাসরি উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এর আগে গত শনিবার রাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড নিজ দায়িত্বে অপসারণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। নির্দেশনা অমান্য করায় রোববার দুপুরে প্রশাসন নিজ উদ্যোগে এসব প্রচারসামগ্রী অপসারণ করে।

অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছেনমং রাখাইন ও চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও অভিযানে অংশ নেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকিব ওসমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলায় সব রাজনৈতিক ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ ও বিলবোর্ড অপসারণ করা হচ্ছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করতে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাবিপ্রবি ও জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি

পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) এবং জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। পাবিপ্রবির পক্ষে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল আওয়াল এবং ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভাইস প্রেডিডেন্ট প্রফেসর ড. মাসানারি হানাওয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এই সমঝোতা স্মারক চুক্তির ফলে উভয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাগত ও একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে। পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা জাপানের মর্যাদাপূর্ণ মেক্সট স্কলারশিপ লাভ করবে। স্কলারশিপ প্রাপ্তরা জাপানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ, নতুন প্রযুক্তি ও গবেষণার সঙ্গে পরিচিত হবেন এবং একাডেমিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে মেধাশূন্য করা হয়েছিল। আমরা আজকে সমঝোতা স্মারক চুক্তির দিন হিসেবে বেছে নিয়েছি। কারণ, আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষ গড়তে চাই। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরা হেরে যাইনি।’

প্রফেসর ড. মাসানারি হানাওয়া বলেন, ‘সমঝোতা স্মারক চুক্তির ফলে শিক্ষা, গবেষণা, রিসোর্স এবং মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে আমরা উভয়ে মিলে কাজ করব। আমরা কার্যকর সমঝোতা গড়ে তুলব। আমাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হবে। ফলে আমাদের মধ্যে জ্ঞানের অংশীদারত্বের পথ সৃষ্টি হবে। এতে আমরা দুই পক্ষই লাভবান হব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত মোটরসাইকেল শনাক্ত, মালিক সন্দেহে একজন আটক

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে গুলি, নিহত অন্তত ১০

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত