Ajker Patrika

চীনা প্রতারকদের ফাঁদে অতিরিক্ত সচিব: ২ চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ আগস্ট ২০২৩, ২২: ৩৭
চীনা প্রতারকদের ফাঁদে অতিরিক্ত সচিব: ২ চীনা নাগরিকসহ গ্রেপ্তার ৪

চীনা প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন দেশের একজন অতিরিক্ত সচিব। বিদেশি এসব প্রতারকের কাছে তিনি কয়েক ধাপে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৩ টাকা খুইয়েছেন। প্রতারক চক্র আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করলে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা থানায় গতকাল মঙ্গলবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা করেন। এ ঘটনায় করা মামলার এক দিন পর আজ বুধবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই চীনা নাগরিকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। 

গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র বলছে, প্রতারণার শিকার হওয়া ওই মামলার বাদী ছিলেন একজন অতিরিক্ত সচিব। যাঁর নাম আবুল কালাম। তিনি সর্বশেষ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে ছিলেন। বর্তমানে পিআরএলে রয়েছেন। প্রতারণার ফাঁদে পড়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে আবুল কালামকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কোনো জবাব দেননি। 

তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের দক্ষিণের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে টাকা উপার্জনের ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন প্রতারণা করে আসছে এই বিদেশি চক্রটি। মানুষকে বোকা বানিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে হুন্ডির মাধ্যমে চীনে পাচার করছে। শুধু এই কাজের জন্যই চীন থেকে দুই দফায় চার ব্যক্তি দেশে এসেছিলেন। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমেরিকাভিত্তিক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আমাজন নামে প্রতারণা করত এই একমাত্র চক্রটি। আমরা তাদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছি।’ 

মামলা ও গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র বলছে, মামলার বাদী ওই অতিরিক্ত সচিব এক দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আমাজন নামক কোম্পানির একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পান। বিজ্ঞাপনে বলা হয় দৈনিক গড়ে ১৫-২০ মিনিট অনলাইনে কাজ করার মাধ্যমে দিনে ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারেন। সেখানে আবেদন করতেই শিকদার ডায়না (দারাজ আমাজন) নামের অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত করে দেয়। 

পরে কথাবার্তার একপর্যায়ে কয়েক ধাপে বিকাশে ৪৪ হাজার, ৯৫ হাজার ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ১ লাখ ১৯৫ হাজারসহ মোট ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। ডিবি কর্মকর্তারা বলছেন, এসব টাকা নেওয়ার পর মামলার বাদী কাছে মূল টাকাসহ লাভের টাকা দেওয়ার জন্য অগ্রিম কর হিসেবে ৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪০২ টাকা দিতে বলে। টাকা না দিলে মূল ও লাভের কোনোটাই দেবে না বলে জানায়। পরে বুঝতে পারেন তিনি ফাঁদে পড়েছেন। তখন গতকাল রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা করেন। 

মামলার এক দিনের মাথায় অভিযান চালিয়ে চীনা নাগরিক ঝ্যাং সিং, ঝ্যাং ইরউয়াসহ দুই বাংলাদেশি যুবক সিয়াম চৌধুরী ও মো. আবীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁরা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় তাঁদের কাছে থেকে ২০টি ফোন, একটি ল্যাপটপ, দুটি পাসপোর্ট জব্দ করে পুলিশ। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, এ চক্রের হোতার নাম ডেং শোয়াইমিং। তিনি চায়নাতে বসে আমেরিকাভিত্তিক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আমাজন নামে ডোমেইন কিনে বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় ফেসবুকে বিজ্ঞাপন হোয়াটসঅ্যাপে চটকদার বিজ্ঞাপন দিতেন। ডেং শোয়াইমিংয়ের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশে এসে প্রতারণার করতেন গ্রেপ্তার ওই দুই চীনা নাগরিক। সঙ্গে যুক্ত করেন কয়েকজন বাংলাদেশিকে। 

পুলিশ বলছে, প্রতারণার কৌশল হিসেবে চক্রটি আমাজনে পণ্য বিক্রি করে লাভের একটা অংশ দেওয়ার প্রলোভন দেখাত। এই জন্য তারা মোবাইল ব্যাংকিং যেমন বিকাশ নগদ ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা বিনিয়োগকারী খুঁজত। কেউ বিনিয়োগ করলে সেই লেনদেনের ওপর ১০-১৫ শতাংশ কমিশন দেবে বলে লোভ দেখাত। প্রথমে ছোট অঙ্কের কিছু টাকা লাভসহ ফেরত দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করলেও পরে মোটা অঙ্কের টাকা দিলে তা ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করত। বারবার টাকা ফেরত চাইলে ওই ব্যক্তির নম্বর ব্লক করে রাখত। 

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের দক্ষিণের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাইফুল রহমান আজাদ বলেন, গত কয়েক মাসে এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন এমন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়েছেন। যাঁরা প্রত্যেকেই ৫-১০ লাখ টাকা করে প্রতারণা শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চকরিয়ায় দুর্ঘটনা: নিহতরা একই পরিবারের, দুজন বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি   
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে নিহত পাঁচজনের পরিচয় মিলেছে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসের দিঘি আর্মি ক্যাম্পের অদূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচরা এলাকার এনামুল হকের স্ত্রী রুমানা আক্তার রুমি (৬০) ও তাঁর মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী সাদিয়া হক (২২); একই এলাকার আব্দুল মান্নান মজুমদারের স্ত্রী রাশেদা শিল্পী (৫১) ও তাঁর মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারহানা মজুমদার টিজা (২৩) এবং আমিনুল হকের স্ত্রী ফারজানা আক্তার লিজা (২৮)। তাঁরা পরস্পরের নিকটাত্মীয়।

আহত ব্যক্তিরা হলেন এনামুল হক, আমিনুল হক ও তাঁর মেয়ে। গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে আসা মারছা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস চট্টগ্রাম যাচ্ছিল। বাসটি চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাঁসের দিঘি এলাকায় পৌঁছালে কক্সবাজারগামী একটি পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। পরে তাঁদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুজন ও মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে তিনজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। গুরুতর আহত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেকে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রুমানা আক্তার রুমির ছেলে মোহাম্মদ মনীরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার মা, ছোট বোন, ভাবি, ভাইয়ের শাশুড়ি ও শ্যালিকা মারা গেছেন। বড় ভাই ও ভাতিজির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমাদের ও ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ির পরিবার কক্সবাজারে বেড়াতে যাচ্ছিল। ফেরার পথে চকরিয়ায় বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। এখন সবাই লাশ হয়ে ফিরেছে। আমাদের পুরো পরিবারের আশা, স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ তছনছ হয়েছে। এই শোক কীভাবে কাটাব বুঝতে পারছি না।’

মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, চট্টগ্রামগামী মারছা পরিবহনের একটি বাস ও পর্যটকবাহী কক্সবাজারগামী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসের যাত্রীরা গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে নিলে সেখানে এখন পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। আহত ব্যক্তিদের চমেকে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে থেকে গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাশকতার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

নেত্রকোনা, প্রতিনিধি
মো. রাজন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
মো. রাজন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রাজন মিয়াকে (২৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে সদর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাশকতার একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার মো. তারা মিয়ার ছেলে।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লুৎফুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নাশকতার একটি মামলায় মো. রাজন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাকসু তহবিলের ২২ বছরের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না, অভিযোগ ভিপির

রাবি প্রতিনিধি  
রাকসু কার্যালয়ের সামনে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিনিধিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাকসু কার্যালয়ের সামনে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতিনিধিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) তহবিলের গত ২২ বছরে উপার্জিত অর্থের সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন সহসভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। আজ বুধবার দুপুরে রাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ওই হিসাব দিতে পারেনি।

মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন হয়েছে। সবশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রাকসুর তহবিলের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এত বছর ধরে এই টাকার একটি বিশাল অঙ্ক জমা হওয়ার কথা, কিন্তু তার কোনো স্পষ্ট হিসাব নেই। আমরা জানতে চাই, রাকসু ফান্ডে এখন আসলে কত টাকা আছে।’

রাকসুর ভিপি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। এর আগে কে ভিসি (উপাচার্য) ছিলেন, কে কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, তা আমাদের দেখার বিষয় না। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত উপার্জিত অর্থের হিসাব দিতে পারলেও ১৯৯০-এর পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে উপার্জিত অর্থের কোনো হিসাব দিতে পারছে না প্রশাসন।’

ভিপি জাহিদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আস্থা রাখতে পূর্ণাঙ্গ আর্থিক প্রতিবেদন দেওয়া জরুরি। আমরা তহবিলের অর্থের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর না থেকে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও অন্যান্য উৎস থেকেও অর্থ সংগ্রহ করে কাজ করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাকসুর সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) এস এম সালমান সাব্বির। তিনি রাকসুর প্রথম অধিবেশনে আগামী এক মাসের কর্মসূচি উপস্থাপন করেন।

সেগুলো হলো রাকসু তহবিলের যথাযথ হিসাব, সম্প্রতি সুইমিংপুলে মারা যাওয়া সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, জারাফার জন্য তহবিল সংগ্রহ, চিকিৎসাসেবার রোডম্যাপ তৈরি, সমাজ স্বীকৃত পোশাক নিয়ে কটূক্তিকারীদের শাস্তির আওতায় আনা, প্রতিটি হলে পানির ফিল্টার মেশিন স্থাপন এবং প্রতিটি একাডেমিক বিল্ডিংয়ে স্যানিটাইজেশন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন।

এ ছাড়া ছাত্রী হলের সামনে ফার্মেসি, সুপারশপ, মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করা, মহিলা জিমনেসিয়াম চালু করা; আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন ও স্যুভেনির শপে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, আন্তহল বিতর্ক আয়োজন এবং ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি পালন করা।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কনফারেন্স কক্ষে প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা অপরাধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যদি কোনো অপরাধে জড়ান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রটানো গুজব প্রতিহত করতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর যদি তারা কোনো অপকর্ম করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু জামিন দেওয়া তো আমাদের হাতে নেই। আদালত হলো স্বাধীন, তাঁরা তাদের জামিন দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জামিন দেওয়ার পরে সে যদি কোনো অপরাধ করে, তাহলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আপনাদের লেখালেখির কারণে গুজব অনেক কমেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যে মিথ্যা রটনা রটায়, এসব প্রতিরোধের মেইন মাধ্যম হচ্ছেন আপনারা। আপনারা যদি সত্যি কথা পত্রিকায় লেখেন; যদি আপনারা বলেন যে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যেটা রটনা করা হয়েছে, সেটি মিথ্যা; তাহলে বেশি কার্যকর হয়।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা এটি করে যাচ্ছেন। আমি আশা করব ভবিষ্যতেও করবেন। আপনারা যাঁরা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় আছেন, আপনারা যদি সত্যি ঘটনাটা প্রচার করেন, তবে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

উপদেষ্টা বলেন, গাজীপুর একটি শিল্পনগরী। এখানে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটে, মাদকেরও ব্যাপকতা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে আলোচনা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে নির্বাচন যেন ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর হয়। নির্বাচনে কোনো ধরনের হুমকি নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের ঢাকা কর্মসূচি প্রতিহত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে কতগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে জনগণ। জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে, সেই সময় অনেকে অনেক কিছু চিন্তা করলেও কিছু করতে পারবে না। তারপর আছে যাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তাঁরা; তাঁদেরও অনেক কাজ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য। তারপর রয়েছে নির্বাচন কমিশন; তাদের একটা বড় ধরনের কাজ রয়ে গেছে। তারপর আছে আমাদের প্রশাসন; তাদেরও বড় ধরনের একটি কাজ রয়েছে। তারপর আরেকটা আছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী; তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে জনগণ, প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী—সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে কোনো বাধা থাকবে না।’

গাজীপুরে পুলিশের ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সত্য, এখানে পুলিশের সংখ্যা কম। ইতিমধ্যে কিছু অতিরিক্ত পুলিশ দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও সদস্য যোগ করা হবে।

পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা অনেক কিছু বলবে। দুষ্কৃতকারীরা যাতে কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে জন্য আমরা যত ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন নেব। এ জন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. নাফিসা আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। এ ছাড়াও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদুল হাসান, গাজীপুর সেনাক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক এবং জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত