Ajker Patrika

মুক্তিপণের জন্য কিশোরকে ডেকে নিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩ 

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
মুক্তিপণের জন্য কিশোরকে ডেকে নিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৩ 

মুক্তিপণের আশায় ঢাকার আশুলিয়ায় এক কিশোরকে ডেকে নিয়ে আটকে রাখে তার বন্ধুরা। পরে মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে জবাই করে লাশ জঙ্গলে ফেলে দেয় তারা। ঘটনার পর অজ্ঞাত হিসেবে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ছায়া তদন্তে নেমে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। 

আজ রোববার সাভারের নবীনগর এলাকায় র‍্যাব ৪ সিপিসি ২ ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্কোয়াড কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সাজ্জাদুর রহমান। 

নিহত মেজবাহুল (১৭) গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার স্থায়ী বাসিন্দা। সে আশুলিয়ার বটতলা এলাকার একটি গার্মেন্টসে আসামিদের সঙ্গেই প্রিন্টিং ও সুতার কাজ করত। 

গ্রেপ্তাররা হলেন-জয়পুরহাটের মো. ইয়াসিন আরাফাত (২২), বরগুনার তামিম আকন (১৮) ও ফরিদপুরের আল আমিন ইসলাম ওরফে মুন্না মুন্সি শিহাব। তারা আশুলিয়া এলাকায় ভাড়া থেকে বটতলা একটি গার্মেন্টসে প্রিন্টিং ও সুতার কাজ করত। এ ছাড়া গত ১৯ আগস্ট এজাহারের সূত্র ধরে আশুলিয়ার চালাবাজার এলাকায় অভিযান রবিউল (১৮) নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, গত ৩১ জুলাই সকালে আশুলিয়া থানার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া এলাকার কাঠ বাগানের ভেতর থেকে একটি অজ্ঞাতনামা গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

এ ঘটনায় ছায়াতদন্ত করে র‍্যাব-৪। এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাবের একটি আভিযানিক দল গতকাল আশুলিয়ার বাইপাইল নামাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। 

র‍্যাব আরও জানায়, গত ৩০ জুলাই বিকেলে গ্রেপ্তার আসামিরা মেজবাহুলকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে বাসায় ফিরে না আসায় মিজবাহুলের মোবাইলে ফোনে কল করে তার বাবা। এ সময় গ্রেপ্তাররা মুক্তিপণ হিসেবে নগদ ২৪ হাজার টাকা দাবি করে ফোনটি বন্ধ করে দেয়। পরে তার বাবা আসামি রবিউলের বাসায় গিয়ে সন্তানের খোঁজ জানতে চাইলে সে কৌশলে এড়িয়ে যায়। 

 ১৯ আগস্ট মেজবাহুলকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বাড়ইপাড়ার কাঠ বাগানের ভেতরে ফেলে দেয় বলে লোকমুখে জানতে পারে পরিবার। পরে ভিকটিমের পরিবার আশুলিয়া থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ জানায়, ৩১ জুলাই ওই স্থান থেকে অজ্ঞাতনামা গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া গেলে টাঙ্গাইলের এক ব্যক্তি ছেলের লাশ দাবি করে নিয়ে যায়। 

পরবর্তীতে টাঙ্গাইলের সেই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করে আশুলিয়া থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। 

সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সাজ্জাদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এক সঙ্গে চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আসামিরা মেজবাহুলকে হত্যার ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী আসামিরা গত ৩০ জুলাই মেজবাহুলকে বেড়ানোর কথা বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে ফোন করে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। 

মুক্তিপণের টাকা না পাওয়ায় তারা মেজবাহুলকে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।’ গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত