Ajker Patrika

প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় নেওয়ার প্রতিবাদে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় নেওয়ার প্রতিবাদে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা ঢাকায় নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। আজ রোববার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়। 

মানববন্ধনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ এস এম সাইফুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদার রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন মুহাম্মদ উমর ফারুক, মো. আহসান হাবিব, মো. খাইরুল ইসলাম, যুগ্ম-সম্পাদক অনিমেষ সরকার, দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ জসীম উদ্দিন, মো. জয়নুল আবেদীন, লুৎফুননেছা বারি, মো. ফজলুল করিম, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। 

জানা গেছে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) ও ফার্মেসি বিভাগে তিনজন করে মোট ছয়জন প্রভাষক নিয়োগের জন্য ২০২২ সালের ২৫মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে বিএমবি বিভাগে ৮১ ও ফার্মেসি বিভাগে ৯৫ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তাঁদের নিয়োগের জন্য কিছুদিন আগে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করেছিল। ওই সময় শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে পরীক্ষা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে ১৩ ও ১৪ আগস্ট ঢাকার শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এর প্রতিবাদে অনেক শিক্ষক আজ দুপুরে মানববন্ধন করেন। 

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাকর এবং অবমাননাকর। উপাচার্য ডিন, চেয়ারম্যান কারও কোনো কথার তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচারীভাবে নিজের মন মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।’ 

শিক্ষক নেতা লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, ‘সব সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে। আজ উপাচার্য নিজের স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে গেছেন। এর আগে তিনি শিক্ষকদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।’ উমর ফারুক প্রভাষক নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়ার দাবি জানান। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাল্টি স্কেনিংয়ের মাধ্যমে লিখিত, ভাইবা পরীক্ষায় সবচেয়ে যোগ্য লোক যাচাই করে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু কতিপয় শিক্ষক নেতারা চাচ্ছেন শুধুমাত্র ভাইবা পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে। তাঁদের দাবি ভিসি গ্রহণযোগ্য মনে করেননি তাই কতিপয় শিক্ষক আন্দোলন করছেন। ভিসি স্যার চ্যান্সেলর, রিজেন্ট বোর্ড ও নিয়োগ বোর্ডের সঙ্গে পরামর্শ করেই যোগ্য প্রার্থী নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাড়কাঁপানো শীতে স্থবির চুয়াডাঙ্গা: বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, জনজীবন বিপর্যস্ত

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি­
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩০
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা জেলা চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে জনপদ। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে, আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে এই জেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে, যা আজ মৃদু শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।

ভোর থেকেই ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে আসায় সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল মানুষ। বিশেষ করে রিকশাচালক, দিনমজুর, ইটভাটার শ্রমিক এবং সবজি বিক্রেতারা জীবিকার তাগিদে ভোরে ঘর থেকে বের হয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

পেশাজীবীদের ভাষ্যমতে, হাড়কাঁপানো ঠান্ডার কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মে ভাটা পড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশাচালক স্বপন ইসলাম বলেন, ‘বাপু, হাত-পা তো জমে বরফ হয়ে যাচ্ছে। হ্যান্ডেল ধরলে মনে হয় যেন রড কামড়ে ধরছে। এই হিমেল বাতাসে শরীর কাঁপতিছে। ভাড়া-ভুতো কম, সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে।’

বড় বাজারের মুদিদোকানি সুমন আলী বলেন, ‘সকাল সকাল দোকান খুলে বসে থাকি, কিন্তু কাস্টমারের দেখা নেই। মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ঠান্ডার চোটে দোকানের ভেতর বসে থাকাই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্ট পাড়ার গৃহিণী অনামিকা খাতুন বলেন, ‘ভোরবেলা ঠান্ডা পানিতে হাত দেওয়া যায় না। রান্নাবান্না আর ঘরের কাজ করতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। বিশেষ করে বাচ্চাদের নিয়ে খুব ভয়ে আছি, কখন ঠান্ডা লেগে অসুখ-বিসুখ হয়।’

দিনমজুর সেতাব আলী বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন কামলা দিয়ে খাই। কিন্তু এই ঠান্ডায় মাঠে বা বাইরে বেশিক্ষণ কাজ করা যাচ্ছে না। শরীর থরথর করে কাঁপে, কোদাল বা ঝুড়ি ধরা কষ্টের।’

টানা কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে বোরো ধানের বীজতলা এবং শীতকালীন শাকসবজি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন স্থানীয় কৃষকেরা। কৃষকদের আশঙ্কা, কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার কৃষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ধানের বীজতলার কুয়াশা সকালে দড়ি টেনে ফেলে দিতে হবে। প্রয়োজনে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। ছত্রাকনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি পরিমিত সেচ দিতে হবে।’

তীব্র শীতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আসাদুর রহমান মালিক খোকন জানান, প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ বৃদ্ধ এবং ৩০০ থেকে ৪০০ শিশু আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের প্রাদুর্ভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানিয়েছেন, শীতার্ত মানুষের সহায়তায় জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে। তিনি প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাসের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, ‘তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। চুয়াডাঙ্গার বর্তমান তাপমাত্রা এই সীমার মধ্যে রয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় আজ থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। তবে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা (৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রেকর্ড করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঘন কুয়াশায় মেঘনায় মধ্যরাতে দুই লঞ্চের সংঘর্ষে নিহত ২

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঘন কুয়াশায় জাকির সম্রাট-৩ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
ঘন কুয়াশায় জাকির সম্রাট-৩ ও অ্যাডভেঞ্চার-৯ লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত

ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে হাইমচর উপজেলা ও হরিণা এলাকার মাঝামাঝি স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চাঁদপুরের ট্রাফিক পরিদর্শক বাবু লাল বৌদ্ধ গণমাধ্যমকে জানান, সংঘর্ষের ফলে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন এবং পরবর্তীতে আরও একজন যাত্রীর মৃত্যু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

নৌ-পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, ভোলার ঘোষেরহাট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী ‘এমভি জাকির সম্রাট-৩’ লঞ্চটি রাত ২টার দিকে হাইমচর এলাকা অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকা-বরিশাল রুটের ‘এমভি অ্যাডভেঞ্চার-৯’ লঞ্চের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার সময় নদীতে প্রচণ্ড ঘন কুয়াশা থাকায় দৃশ্যমানতা অত্যন্ত কম ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লঞ্চ দুটির মধ্যে সংঘর্ষে জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। পরবর্তীতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ‘এমভি কর্ণফুলী-৯’ নামক আরেকটি লঞ্চের মাধ্যমে জাকির সম্রাট-৩-এর যাত্রীদের গন্তব্যস্থল ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে পথিমধ্যে গুরুতর আহত আরও এক যাত্রীর মৃত্যু ঘটে।

নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় লঞ্চ চলাচলের ক্ষেত্রে চালকদের আরও সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর নদীতে নৌ-পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চ দুটি উদ্ধার বা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষকেরা ধানের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখেন যে কারণে

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন কৃষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জনপদ নওগাঁর নিয়ামতপুরে কয়েক দিন ধরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। তাপমাত্রা ক্রমেই কমে যাওয়ার সঙ্গে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় রাতে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। কুয়াশার কারণে অনেক দিন দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে জনজীবনের পাশাপাশি কৃষিকাজেও প্রভাব পড়ছে।

কৃষিপ্রধান এই অঞ্চলে তীব্র শীত উপেক্ষা করেই বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকেরা। সামনে উপজেলাজুড়ে বোরো ধান রোপণের মৌসুম শুরু হবে। তার আগে বীজতলা তৈরি ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা। তবে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন তাঁরা।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ঠান্ডা ও কুয়াশার প্রভাবে বোরো বীজতলা হলদে ও লাল হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখলে বীজতলার ক্ষতির আশঙ্কা অনেকটা কমে।

সরেজমিনে উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ বীজতলাই পলিথিনে ঢাকা। ভাবিচা গ্রামের কৃষক বিমল প্রামাণিক জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করবেন। সে জন্য আগেই বীজতলা তৈরি করেছেন। শীত ও কুয়াশা থেকে রক্ষার জন্য বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

একই গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল সরকার জানান, বীজ ফেলার আট দিন পর বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। ২২ দিন পর পলিথিন তুলে ফেলবেন। এতে বীজতলায় রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয় এবং রোপণের জন্য ভালো চারা পাওয়া যায়। পাশাপাশি পলিথিন ব্যবহার করায় কীটনাশক দিতে হয় না। ফলে বাড়তি খরচও কমে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলায় ‘কোল্ড ইনজুরি’ দেখা দেয়। এতে বীজ ঠিকমতো বেড়ে উঠতে পারে না, অনেক সময় হলদে ও লাল হয়ে পচে যায়। পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখলে ভেতরের তাপমাত্রা কিছুটা উষ্ণ থাকে এবং চারাগাছ নষ্ট হয় না। এতে কৃষকেরা উপকৃত হন। বীজতলা রক্ষায় পলিথিন ব্যবহারের জন্য কৃষকদের আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উলিপুরে হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর চাপ

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি 
শিশুসন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশুসন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার প্রভাবে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন। কয়েক দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় ও কনকনে ঠান্ডায় এসব রোগের প্রকোপ আরও বেড়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে গত সাত দিনে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত অর্ধশতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। অধিকাংশ রোগী সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কিছুটা সুস্থ হলেই তাঁরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চালানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কথা হয় চিকিৎসা নিতে আসা বজরা ইউনিয়নের আমিনপাড়া এলাকার ইউনুস আলীর (৭০) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সাত দিন ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছি। তীব্র শীতের কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’

এইচএসসি পরীক্ষার্থী আঞ্জু আরা বেগম বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কয়েক দিন ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছি।’ ধামশ্রেণী ইউনিয়নের খলিলুর রহমান (৬৯) জানান, তিন দিন ধরে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

শিশুসন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশুসন্তানকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

গুনাইগাছ ইউনিয়ন থেকে ভর্তি হওয়া ১৭ মাস বয়সী শিশু তাসিনের মা নুরে জান্নাত বলেন, তিন দিন ধরে তাঁর সন্তানের বমি ও ডায়রিয়া হচ্ছে। কনকনে ঠান্ডার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া সাত মাস বয়সী শিশু সাব্বিরকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মা সুমাইয়া বেগম বলেন, ঠান্ডার কারণে ছয় দিন ধরে শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মেহেরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনে শীতজনিত ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীই বেশি। শীতের তীব্রতা বাড়লে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত