Ajker Patrika

শর্ত মানলে চীনের টিকা নেবে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২১, ১১: ৪৩
শর্ত মানলে চীনের টিকা নেবে বাংলাদেশ

ঢাকা: ভারতের  থেকে আমদানি অনিশ্চিত হওয়ায় করোনাভাইরাসের টিকা সংকটের শঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে চীন বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহ করতে চাচ্ছে। তবে চীনের টিকার ওপর বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।  বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহ করতে চাইলে সেইসব শর্ত পূরণ করতে হবে চীনকে। এ নিয়ে আলোচনা করতে আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশ সফরে আসছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেঙ্গহি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভারতের টিকা আমদানি অনিশ্চিত হওয়ার পরে বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করেছে বাংলাদেশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার টিকারও এখনো কোন হদিস নেই। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা পেতে বাংলাদেশকে ভরসা করতে হচ্ছে চীন ও রাশিয়ার ওপর।

 সূত্র জানায়,  আসন্ন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেঙ্গহির বাংলাদেশ সফরে দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, টিকা কূটনীতি, প্রশান্ত মহাসগরীয় কৌশল (আইপিএস) ও বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি নিয়ে আলোচনা হবে।  

এদিকে সররকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে,  চীন যদি বাংলাদেশকে টিকা সরবরাহ করতে চায় তবে তার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন থাকতে হবে। আর সেটি যদি না থাকে, তবে চীনকে প্রমাণ করতে হবে নিজ দেশে ১০ কোটি মানুষ এ টিকা নিয়ে সুস্থ রয়েছে। তাদের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়, দ্বিতীয় পর্যায় ও তৃতীয় পর্যায়ে কোন দেশে কত মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের বর্তমান অবস্থা কী। এগুলো ছাড়াও আরও কিছু শর্ত চীনকে বাংলাদেশ সরকার জুড়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র  ।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে পাঁচ লাখ টিকা উপহার দিতে চেয়ছে চীন। আর এ টিকা সরবরাহ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি চেয়েছে দেশটি। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল)  স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেককে চিঠি দেন ঢাকাস্থ চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। চিঠিতে তিনি উপহার সরূপ টিকা গ্রহণে বাংলাদেশের সম্মতির জন্য জাহিদ মালেকের কাছে সহায়তা চান।  চিঠিতে চীনা রাষ্ট্রদূত লেখেন, আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানানো হয়েছে যে,  পাঁচ লাখ টিকা উপহার হিসেবে গ্রহণ করতে মন্ত্রণালয়ের থেকে অনুমতি লাগবে। অনুমতি পেতে চিঠির সঙ্গে দুটি আবেদনপত্র সংযুক্ত করা হল। দ্রুত সময়ের মধ্যে আবেদন দুটি সই করে দূতাবাসকে জানাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করছি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, এমনিতে টিকা পাওয়া নিয়ে পুরো বিশ্বে এক প্রকার প্রতিযোগিতা চলছে। আর আমাদের টিকা দিতে চাইছে। আমরা টিকা নিতে চাইছি না। এটা একটি বিরল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি চীন আমাদের যে টিকা উপহার দিতে চেয়েছে, সেই টিকা না নিয়ে আমরা দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছি। বরং চীনকে বাংলাদেশকে অনুরোধ করতে হচ্ছে টিকা গ্রহণের জন্য।

চীনের পাঁচ লাখ টিকা গ্রহণ না করে সময়ক্ষেপণ এবং টিকা নেওয়ার জন্য চীনকে শর্ত জুড়ে দেওয়াতে বিরক্তি প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে কিছু পণ্ডিতরা রয়েছেন, তারা মনে করেন যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশ না করে, তবে সেটা গ্রহণ করা উচিত নয়। পূর্বের দেশগুলোর চীন বা রাশিয়ার কারও টিকাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশ করে নাই।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের পণ্ডিতরা যেহেতু পশ্চিমা দেশগুলো থেকে ডিগ্রি নেওয়া। ফলে তারা বলছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন না দিলে আমরা সেই টিকা আনতে চাই না। এ কারণে উনারা আনতে দেন না।’

সূত্র জানায়, টিকা পেতে বাংলাদেশ যেসব শর্তগুলো দিয়েছে তা পূরণের কোনও ইচ্ছা নেই চীনের। কারণ এ মুহূর্তে সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ। ফলে আগ্রহটিও বাংলাদেশেরই বেশি থাকার কথা। আগ বাড়িয়ে চীন এসব শর্ত পূরণ করতে যাবে না।

ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘এখানে টিকা আসুক আর না আসুক সম্পূর্ণ দোষ গিয়ে পড়বে আওয়ামী লীগ ও তার মন্ত্রীদের উপর আর প্রধানমন্ত্রীর ওপর। যে মানুষটি ভ্যাকসিন আটকিয়ে দিয়েছেন তিনি তাঁর চেয়ারে ঠিকই বহাল রয়েছে।’

তাহলে চীনা টিকা কি আমরা আমদানি করবো? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানে।

ভারত থেকে আনা টিকা দিয়ে চলমান টিকাদান কর্মসূচি শেষ করা এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। এই মুহূর্তে দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য প্রয়োজনীয় ডোজের চেয়ে ১২ লাখের বেশি ডোজ ঘাটতি রয়েছে। প্রথম ডোজ দেওয়া অব্যাহত থাকলে ঘাটতির পরিমাণ আরও বাড়বে। ভারত নিজ দেশে টিকা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে চীনের সিনোফার্ম করপোরেশন ও রাশিয়ার  স্পুটনিক-৫ টিকা ছাড়া এ মুহূর্তে খুব একটা বিকল্প নেই বাংলাদেশের কাছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, চীনের টিকা কার্যকর ও সক্ষমতা যাচাই না করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছে না সরকার। যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য টিকা অতি জরুরি তাই দ্রুত যাচাই পরীক্ষা করে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে বলে জানা গেছে।

 করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহে রাখার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় একটি ‘ইমার্জেন্সি ভ্যাক্সিন স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি ফর কোভিড-১৯ ফর সাউথ এশিয়া' নামে স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি গঠন করতে চায় চীন।  এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যেন জরুরী প্রয়োজনে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলো ভ্যাকসিন পায়। এই  প্রকল্পে  ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ৬ দেশকে রাখার প্রস্তাব দিয়েছে চীন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো করোনার টিকার অভাব হলে এখান থেকে নিতে পারবে। তবে শুধু জরুরি উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করা হবে। ভারতবিহীন এই প্রক্রিয়ায় থাকতেও আপত্তি নেই বাংলাদেশের। তবে বাংলাদেশ এতে থাকছে কীনা এখনও এটি চূড়ান্ত হয়নি, আর এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে তিন কোটি টিকা কিনতে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের সাথে বাংলাদেশর বেক্সিমকো কোম্পানির ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও দুই দফায় এসেছে মাত্র ৭০ ডোজ টিকা। এছাড়া ভারত সরকারের দেয়া উপহারের ৩৩ লাখসহ বাংলাদেশে পৌঁছেছে এক কোটি ৩ লাখ ডোজ টিকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাবান্ধা আইসিপিতে বিজিবির বাড়তি নজরদারি

পঞ্চগড় প্রতিনিধি 
পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসন থেকে সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে, সে জন্য পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্ত এলাকায় নিজস্ব গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ব্যাটালিয়ন সদর ও বিওপির নিয়মিত টহলের পাশাপাশি বিশেষ টহল দল মোতায়েন করে সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিশেষ টহলের অংশ হিসেবে সীমান্ত এলাকায় চলাচলকারী যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।

এ ছাড়া ব্যাটালিয়নের অধীন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে (আইসিপি) নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। আইসিপি দিয়ে যাতায়াতকারী যানবাহন ও যাত্রীদের নিবিড়ভাবে তল্লাশি করা হচ্ছে। পাশাপাশি কে-৯ ইউনিটের (ডগ স্কোয়াড) মাধ্যমে বিশেষ তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
পঞ্চগড় সীমান্ত এলাকায় বিশেষ টহল ও তল্লাশি জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ কায়েস বলেন, ‘আমাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দিয়ে কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তি যাতে পার্শ্ববর্তী দেশে পালাতে না পারে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সীমান্ত নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভূঞাপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পাঁচজনকে জরিমানা

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
ভূঞাপুরের যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভূঞাপুরের যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় পাঁচজনকে জরিমানা করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার যমুনা নদীতে এই অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব হাসান।

বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী দায়ের করা পাঁচটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে ৫০ হাজার টাকা করে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিরাজগঞ্জের অছির আলীর ছেলে ইজতেহার (৫০), নড়াইলের দাউদ মোল্লার ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩৬), বরগুনার নাসির খানের ছেলে হাসান (২৪), ভূঞাপুরের মোকতেল হোসেনের ছেলে করিম (৩৫) ও সানু মিয়ার ছেলে জহুরুল (৩০)।

এ সময় ভূঞাপুর থানা-পুলিশ, নৌ পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান বলেন, যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে পাঁচজনকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদারের ইসলামী আন্দোলনে যোগদান

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত
গতকাল বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের বকশীগঞ্জের ‘বটগাছ’খ্যাত ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি বরিশালে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে দেখা করে দলটিতে যোগ দেন।

এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন ফরিদ, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া মনু গাজীসহ শতাধিক বিএনপির সাবেক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আব্দুর রউফ তালুকদার বকশীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। তাঁর বাড়ি বকশীগঞ্জ পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায়। তিনি চার মেয়াদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। ১৭ বছর ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে। স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক জনপ্রিয় থাকায় এলাকাবাসী দলমত-নির্বিশেষে অভিভাবক মেনে প্রবীণ এই সমাজসেবককে ‘বটগাছ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। সবার মুখে মুখে বলতে শোনা যায়, আব্দুর রউফ তালুকদার মানেই এখানকার মানুষের অভিভাবক।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-১ (বকশীগঞ্জ-দেওয়ানগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে তাঁর যোগদানের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে স্থানীয় রাজনীতিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রউফ তালুকদার বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক আইজিপি আবদুল কাইয়ুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আব্দুর রউফ ও তাঁর সমর্থকেরা আবদুল কাইয়ুমকে জামালপুর-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আসনটিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাতকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে।

পরে গত ১৯ নভেম্বর জামালপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন আব্দুর রউফ তালুকদার। এরপর থেকে তাঁর সমর্থকেরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে হঠাৎ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগদান করেন আব্দুর রউফ তালুকদার।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওনালা আবদুল মজিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বটগাছ উপাধিতে ভূষিত বিএনপি নেতা আব্দুর রউফ তালুকদার ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাঁর মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৬
শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও সেটির মালিক। ছবি: র‍্যাব
শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও সেটির মালিক। ছবি: র‍্যাব

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়েছে। ওই মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে আব্দুল হান্নান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র‍্যাব।

আজ রোববার সকালে তাঁকে আটক করে পল্টন থানায় হস্তান্তর করেছে র‍্যাব-২।

র‍্যাব সদরদপ্তরের মুখপাত্র উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, ওসমান হাদির ওপর হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মোটরসাইকেলটির মালিক আব্দুল হান্নানকে আটক করা হয়েছে। পরে তাঁকে পল্টন থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

হত্যার ঘটনায় হান্নান জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানায় র‍্যাব।

র‍্যাব আরও জানায়, মোটরসাইকেলটির নম্বর ৫৪-৬৩৭৫। আটক হান্নানের বাড়ি রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তাঁর বাবার নাম মো. আবুল কাশেম।

গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এর মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত