Ajker Patrika

পুলিশের পোশাক পরে তেলের ট্রাক লুট, মামলা নিচ্ছে না সাভার থানা

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৭: ৫৩
পুলিশের পোশাক পরে তেলের ট্রাক লুট, মামলা নিচ্ছে না সাভার থানা

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার এলাকায় ৬০ ব্যারেল ভোজ্য তেলভর্তি একটি ট্রাক লুটের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তি ট্রাক লুট করে বলে দাবি করেন ট্রাকের চালক ও তাঁর সহকারী। এ ঘটনায় ট্রাকের মালিক সাভার মডেল থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। পুলিশ ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে মামলা করতে বললে তাতে রাজি হননি ট্রাকের মালিক।

আজ বুধবার ভোরে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ট্রাকচালক মো. সেলিম ও তাঁর সহকারী রাজীব সাভারের নামাবাজার এলাকার বিশ্বনাথ ট্রেডার্সে চাকরি করেন। ওই প্রতিষ্ঠানেরই তেল লুট করা হয়।

ট্রাকচালক মো. সেলিম বলেন, ঢাকার ডেমরা এলাকার টিকে গ্রুপের কারখানা থেকে তেল নিয়ে সাভারের নামাবাজারে আসছিলেন তাঁরা। সাভারের আলমনগর এলাকায় প্রথমে পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তি সংকেত দিয়ে ট্রাকটি থামান। ট্রাকটি কোথায় যাবে কোথা থেকে এসেছে এ তথ্য নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় সেই পুলিশের পোশাক পরা ব্যক্তিসহ পাঁচজনের একটি দল হাইয়েস মাইক্রোবাস দিয়ে ট্রাকটিকে আটকানোর চেষ্টা করে। তখন ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের ধাক্কা লাগে। এ সময় ট্রাক থামালে চালক ও সহকারীকে মারধর করতে করতে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। মাইক্রোবাসে ট্রাকের ধাক্কা লেগে যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়। এ সময় চালক ও সহকারীকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে চোখ-মুখ ও হাত বেঁধে ফেলা হয়। অনেকটা দূরে তাঁদের নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় মাইক্রোবাস। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে।

ট্রাকচালক সেলিম আরও বলেন, ‘আমাদের তেলের দাম প্রায় ১৯ লাখ আর ট্রাকের দাম প্রায় ১২-১৩ লাখ টাকা। এগুলো সব লুট করে নিয়েছে তারা। তারা মোট পাঁচজন ছিল। তাদের মধ্যে একজনের পুলিশের পোশাক পরা ছিল। তাদের কাছে লাঠি ছাড়া কোনো অস্ত্র কিংবা ওয়্যারলেস চোখে পড়েনি।’

এ ঘটনায় ট্রাকচালক সেলিম সাভার মডেল থানায় আজ সকালে লিখিত অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয়নি পুলিশ। পরে পুলিশ ভুক্তভোগী প্রতিষ্ঠান বিশ্বনাথ ট্রেডার্সের মালিককে ট্রাকচালকের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলে।

বিশ্বনাথ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী লোকনাথ ঘোষ বলেন, ‘পুলিশ আমার ড্রাইভারকে সন্দেহ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে বলেছে। কিন্তু ড্রাইভার সেলিম আমার অত্যন্ত পরিচিত। সে দীর্ঘদিন আমার সঙ্গে কাজ করে। তার মাধ্যমে আমি চারটি ট্রাক কিনেছি। সে আমার ক্ষতি করবে না, আমি নিশ্চিত। আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করব না। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা না নিতে চাইলে আমি ট্রাক হারানোর একটি সাধারণ ডায়েরি করতে চেয়েছিলাম। থানা থেকে আমাদের তাও করতে দেওয়া হয়নি।’

লোকনাথ ঘোষ আরও বলেন, ‘ট্রাকচালক ও সহকারীকে ব্যাংক টাউন থেকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে তাঁদের চোখ-মুখ ও হাত বেঁধে ফেলা হয়। পরে তাঁদের মারধর করে চেতনানাশক ট্যাবলেট খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিছুটা খাওয়ানোও হয়। কিন্তু তবু তাদের জ্ঞান ছিল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা অবশ্যই মামলা নিব। তবে যাচাই-বাছাই চলছে। তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী ট্রাকচালকের কথা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। ট্রাক থামিয়ে চোখে মলম দেওয়া হয়েছে দাবি করা হয়েছে, সে বিষয়টি আসলে প্রশ্নবিদ্ধ। যদিও মালিক তাঁর চালককে যথেষ্ট বিশ্বাস করছেন, আমরাও তদন্ত করছি। তদন্ত করে আমরা দ্রুতই অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনব ও মালামাল উদ্ধার করব। আমরা কাজ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত