Ajker Patrika

মাদক নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে মাদক ব্যবসা, চিকিৎসার বদলে চলত নির্যাতন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৬: ৩৬
মাদক নিরাময় কেন্দ্রের আড়ালে মাদক ব্যবসা, চিকিৎসার বদলে চলত নির্যাতন 

গাজীপুরের ভাওয়াল মাদক নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসার আড়ালে চলত মাদক ব্যবসা। এ ছাড়া সেখানে রোগীদের চিকিৎসার বদলে করা হতো নির্যাতন। এসব অভিযোগে ওই কেন্দ্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। এ ছাড়া সেখান থেকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেতা অনিক রহমান অভিসহ ২৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফিরোজা নাজনিন বাঁধন, মনোয়ার হোসেন সিপন, রায়হান খান, দিপংকর শাহ দিপু ও জাকির হোসেন আনন্দ। 

আজ বুধবার দুপুরে র‍্যাব-২-এর সদর দপ্তরে ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে র‍্যাব ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রে অভিযান চালায়। এ সময় ৪২০টি ইয়াবা, নির্যাতনে ব্যবহৃত লাঠি, স্টিলের পাইপ, হাতকড়া, রশি, গামছা, খেলনা পিস্তল এবং কথিত সাংবাদিকের পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছে। 

কমান্ডার মঈন জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি চলচ্চিত্র সমিতি র‍্যাবকে জানায়, একজন চিত্রনায়ক দীর্ঘদিন তাঁদের কার্যক্রমে অনুপস্থিত। পরবর্তী সময়ে তাঁরা জানতে পারেন, ওই অভিনেতাকে গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রে আটক রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। এমন তথ্যে, র‍্যাব সদর দপ্তর ও র‍্যাব-২ এর একটি দল ওই কেন্দ্রে অভিযান চালায়। সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় কোনো আয়োজন ছিল না। 

খন্দকার আল মঈন আরও জানান, বিশেষ করে তিনটি রুমে ২৮ জনকে গাদাগাদি করে রাখা হতো। বিভিন্ন সময় সেবা নিতে আসা রোগীদের মারধর করা ছাড়াও নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করত। কিন্তু পরিবারগুলো থেকে প্রথমে ভর্তি ফি ৩ লাখ এবং প্রতি মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেওয়া হতো। কিন্তু এত টাকা নেওয়া হলেও সেবার মান ছিল খুবই নিম্নমানের। 

র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের অভিযুক্ত ফিরোজা নাজনিন বাঁধন জানিয়েছেন, তিনি প্রতি রোগীর কাছ থেকে মাসে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিতেন। নিরাময় কেন্দ্রে দুজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কোনো চিকিৎসককে সেখানে পাওয়া যায়নি। সেখানে ২০ জন রোগীর চিকিৎসার অনুমোদন থাকলেও ২৮ জন রোগী পাওয়া যায়। 

ভুক্তভোগীদের স্বজনেরা জানিয়েছেন, চিকিৎসার নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং যৌন হয়রানি করা হতো। চিকিৎসার নামে রশির সাহায্যে ঝুলিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হতো। প্রতিবেলায় খাবারের মানও ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যেসব নির্দেশনা ছিল তার কিছুই এখানে ছিল না। তা ছাড়া সব সময় ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না। নিরাময় কেন্দ্রের মালিক এবং কর্মচারীদের তৎক্ষণাৎ র‍্যাপিড ডোপ টেস্টের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে তারা মাদকাসক্ত ছিল।

অভিনেতা অনিক রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘নামে মাদক নিরাময় কেন্দ্র হলেও সেখানে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হতো না। এমনকি ঠিকমতো খাবার ও ঘুমানোর বিছানার ব্যবস্থা ছিল না। কোনো অভিযোগ করলে বা কান্নাকাটি করলে করা হতো নির্যাতন।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ধার শোধ না করায় অতিরিক্ত এসপিকে তিরস্কার

ট্রাম্প বরখাস্ত করেছেন শুনে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বললেন, উনি করার কে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

বিতর্কিত মন্তব্যে পাকিস্তানে জনপ্রিয় আলেম ইঞ্জিনিয়ার আলি মির্জা গ্রেপ্তার

শহীদ আবু সাঈদকে আমিই একুশ শতাব্দীর প্রথম ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ বলেছিলাম—বিএনপির নোটিশের জবাবে ফজলুর রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত