Ajker Patrika

জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার শাকির, পরিবার বলছে ‘ভুয়া-মিথ্যা’ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার শাকির, পরিবার বলছে ‘ভুয়া-মিথ্যা’ 

নিখোঁজের তিন দিন পর চিকিৎসক শাকির বিন ওয়ালীসহ দুজনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। রাজধানীর রামপুরা থানায় পুলিশের বিশেষায়িত এই ইউনিটের দায়ের করা মামলার অভিযোগকে ‘ভুয়া, বানোয়াট ও মিথ্যা’ বলছে শাকিরের পরিবার।

এসব অভিযোগকে আইনের মাধ্যমে মিথ্যা প্রমাণিত করে এবং বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চার দিন বেআইনিভাবে আটকে রাখার জন্য তার পরিবার পুলিশের এই ইউনিটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, কয়েক দিন আগে কুমিল্লা থেকে যে সাতজন কিশোর কথিত হিজরতের নামে ঘর ছেড়েছিল, সেই ঘটনার সঙ্গে শাকিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।

আজ বুধবার বিকেলে সেগুণ বাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন শাকিরের বাবা ডা. এ কে এম ওয়ালীউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা, ভুয়া, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমাদের মূল দাবি হলো কেন, তাকে (শাকির) অবৈধভাবে উঠিয়ে নেওয়া হলো এবং তা কেউ স্বীকার করল না। চার চারটা দিন নিখোঁজ করে রাখা হলো। এটার আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। এই ধরনের কর্মকাণ্ডের আইনানুগ প্রতিকারও চাই। যারা এসব করেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনের আশ্রয় নেব।’

সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গত মঙ্গলবার রাতে রামপুরা থানায় দায়ের করা মামলায় দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই মামলার দুই নম্বর আসামি শাকির আর এক নম্বর আসামি করা হয়েছে আবরারুল হক নামে এক যুবককে। সিটিটিসির ইন্সপেক্টর কাজী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, সিটিটিসির একটি দল গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর ২টায় রাজধানীর মগবাজার থেকে আবরারুল হককে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিকেল ৫টায় রামপুরার হাজীপাড়ার বাসার সামনে থেকে ডা. শাকিরকে গ্রেপ্তার করে।

তবে সংবাদ সম্মেলনে শাকিরের বাবা ডা. এ কে এম ওয়ালীউল্লাহ বলেন, রোববার বিকেলে রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে শাকিরকে সিআইডি পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে ছেলের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। আজ (বুধবার) দুপুরে পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাংবাদিকদের বলতে পারে আমাদের বলতে পারে না। 

এই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হলেও শাকিরের বাবা ওয়ালীউল্লাহ এবং স্ত্রী আয়েশা বিনতে মোস্তাফিজের নাম সন্দেহভাজন হিসেবে এসেছে। মামলার বিবরণে শাকিরকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, শাকিরের সঙ্গে কুমিল্লা থেকে কথিত হিজরতগামী সাত যুবকের যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যায় এবং তারই প্ররোচনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এসব যুবক আনসার আল ইসলাম দলে যোগ দেয় এবং ঘর ছাড়ে বলে গোপন তদন্তে জানা যায়। এছাড়া সে আনসার আল ইসলাম এর সদস্য সংগ্রহ ও সংগঠিত করার জন্য বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। বিভিন্ন সময়ে সংগঠনের সদস্যদের দাওয়াতি প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকে। তার স্ত্রী ও বাবা তাকে এসব উগ্রবাদী কাজে সহায়তা করে এবং অর্থায়নেও সহযোগিতা করে।

নিজের জঙ্গি সম্পৃক্ততার কথা জানতে চাইলে আয়েশা বলেন, ‘তারা কেন এসব বলছে সেটা আমার বোধগম্য না। আপনারা আমার সম্পর্কে আমার বর্তমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। আমার শিক্ষক ও সহপাঠীরা আমাকে চেনেন। তারাই সব বলবেন।’ 

শাকির নিখোঁজ হওয়া ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো দিন তারিখ নিয়ে পরিবার ও সিটিটিসি’র দুইরকম বক্তব্য পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এজাহারে যা বলা হয়েছে সেটাই আমাদের বক্তব্য।’

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলায় দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া মামলার বিবরণীতে শাকিরের বাবা ও স্ত্রীকে জঙ্গি তৎপরতায় সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত