Ajker Patrika

দেড় কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে

শাহাদাত হোসাইন, ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) 
দেড় কোটি টাকার সেতুতে উঠতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে খালের ওপর সেতু থাকলেও নেই সংযোগ সড়ক। তাই ১ কোটি ৬০ লাখ টাকায় নির্মিত এই সেতুতে উঠতে হলে এখনো দুই বাঁশের সাঁকোই ভরসা। 

সখীপুরের উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন ২ ও ৪ নং ওয়ার্ডের ঢালী কান্দি গ্রামের চেয়ারম্যান স্টেশন থেকে তারাবুনিয়া স্টেশন যাওয়ার পথে যে খাল পড়ে, তার ওপরই রয়েছে এই সেতু। সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজনকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে সেতুটি পারাপার হতে হচ্ছে। এতে স্থানীয় সাত গ্রামের মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার সখিপুর থানার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ঢালীকান্দি রাস্তার খালের ওপর এ সেতু নির্মাণ করা হয়। সে সময় ১ কোটি ৬০ লাখ ১২ হাজার ৪৯৭ টাকা ব্যয় হয়েছিল সেতুটি নির্মাণে। নির্মাণের কয়েক বছর পরই বর্ষার সময় বন্যার পানিতে সেতুটির দুপাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে যায়। ফলে সেতুটি ব্যবহার উপযোগিতা হারায়। এখন বাঁশের সাঁকো হয়ে সেতুর ওপর দিয়ে খাল পার হতে হচ্ছে পথচারীদের। যানচলাচলের তো প্রশ্নই আসে না। 

উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুস সরকার বলেন, সেতুটির ব্যাপারে মন্ত্রী থেকে শুরু করে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সবাই অবগত আছেন। এ নিয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

মাত্র ৫ বছর আগে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটিতে উঠতে হলে এখন বাঁশের সাঁকোই ভরসা

স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবই এর কারণ। ঠিকাদারেরা দায়সারাভাবে বালু দিয়ে এক প্রান্তে সেতুতে ওঠার সংযোগ সড়ক দিলেও অপর প্রান্তে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নামতে বা উঠতে হয়। এই অবস্থায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে হাজারো মানুষ। সেতুর পশ্চিমে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের ফসলি জমি। সেই চরে বসবাস করে কয়েক শ পরিবার। এসব পরিবারের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করতে আসতে হয় সেতুর পূর্ব পাশে চেয়ারম্যান বাজার প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ে। প্রতিদিন স্কুল শিক্ষার্থী, রোগীসহ হাজার হাজার মানুষ এ পথ দিয়ে যাতায়াত করেন। 

এলজিইডি ভেদরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।’ 

স্থানীয় কৃষক ওয়াসিম, আবদুল মান্নান, তমিজ উদ্দিন ও আবদুস সালামের সঙ্গে কথা হয় বিষয়টি নিয়ে। আজকের পত্রিকাকে তাঁরা বলেন, ‘আমাদের এলাকার ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজ করেন। মৌসুমী ফসল উপজেলা সদরসহ জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা বেশি ঘুরতে হয়। ফলে সময় ও অর্থ দুটিই অপচয় হচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদন খরচও বেড়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় ফসলের দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা। ফলে অনেক কৃষকই মৌসুমী ফসল উৎপাদন করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

বর্ষার পর সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাসীফ। তিনি বলেন, ‘ব্রিজটি নির্মাণ হয়েছে ৫-৬ বছর আগে। পরে বর্ষার সময় বন্যার পানিতে দুপাশের মাটি ভেঙে যায়। এখন তো বর্ষাকাল, বর্ষা গেলে বিষয়টি সমাধানে করার চেষ্টা করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

১৯৪৭ থেকে ২০২৫: ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ও ফলাফল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত