Ajker Patrika

শিক্ষার্থীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ, জবি রেজিস্ট্রারকে পদত্যাগে আলটিমেটাম

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৬: ০৪
রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাইকেল চুরির বিষয়ে অভিযোগ দিতে গিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে দুর্ব্যবহার ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ তুলেছেন। গত সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে জড়ো হয়। এ সময় রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় শাহিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রেজিস্ট্রারকে বলতে চাই, আপনি ক্লাসরুমে ছিলেন, ক্লাসরুমে ফিরে যান, না হয় আমরা টেনেহিঁচড়ে নামাব।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘৫ আগস্টপরবর্তী সময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস চেয়েছি। কিন্তু এখন আবারও কিছু শিক্ষক ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠছেন। আমার মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনা ভারত থেকে শিক্ষকদের মদদ দিচ্ছেন। তেমনই একজন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। উনার অফিসে গেলে উনি অসন্তুষ্ট হয়ে যান। সময় থাকতে সাবধান হোন। আপনি তাড়াতাড়ি ক্লাসে ফিরে যান। আমরা এই রকম বদমেজাজি রেজিস্ট্রার পদে কাউকেই চাই না।’

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্যসচিব কিশোর সাম্য বলেন, ‘প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার প্রত্যাশা থাকে। কিন্তু যখন কোনো শিক্ষার্থী প্রশাসনের কাছে এই সহযোগিতা পায় না, তখন ওই পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন। আমরা মেরুদণ্ডসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় চাই। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রেজিস্ট্রারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে কোনো বিবৃতি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি পাইনি, তাহলে বলতেই হয়, এই প্রশাসন মেরদণ্ডহীন।’

ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দিতে হবে। যদি এর মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে এবং এর মধ্যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে এর দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।’

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনায় নিরাপত্তা জোরদার ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী গতকাল রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যান। এ সময় তিনি উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

এর মধ্যে একটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ পায়। যেখানে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের মালামালের নিরাপত্তা দিতে পারব না, মালামাল তাদের নিজেদের দায়িত্বে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা কী খাবে, কোথায় থাকবে–এটা প্রশাসনের দায়িত্ব না। বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের কোনো দায়ভার নেবে না।’

একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে আসো? এলাকায় কলেজে পড়লেই তো পারতে।’ এরপর তিনি ইভান তাহসীবকে বের করে দিতে বলেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ইভান তাহসীব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি।

ইভান তাহসীব বলেন, ‘আমার এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরি হওয়ায় বিষয়টি রেজিস্ট্রারকে জানাতে যাই। তিনি শুরুতেই বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো গ্যারেজ নেই এবং শহীদ সাজিদ ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডের নিরাপত্তার দায় প্রশাসনের না।’’ অথচ শিক্ষার্থীরা টিউশনি করে সেই টাকায় সাইকেল কিনে এবং সেই সাইকেল দিয়েই আবার টিউশনি করে। যদি গ্যারেজের নিরাপত্তা দেওয়া না হয়, তাহলে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হোক অথবা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হোক, বিশ্ববিদ্যালয় কোনো মালামালের দায়িত্ব নেবে না।’

তবে এ বিষয়ে রেজিস্ট্রারের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত