শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) খুনের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার দিনভর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রদল। নিহত সাম্য ছাত্রদল নেতা ছিলেন।
সাম্য খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ বলছে, তিনজনই মাদকসেবী। মঙ্গলবার রাতে তাঁরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলেন মাদক সেবন করতে। এ সময় মোটরসাইকেল ধাক্কা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁরা সাম্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে। তিনি এই হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায়।
গ্রেপ্তারের পর তিনজন কারাগারে
সাম্য হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজধানীর রাজাবাজার ও গ্রিন রোড এলাকা থেকে। তাঁরা হলেন মো. তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও মো. পলাশ সরদার (৩০)।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনই ‘বহিরাগত’। তাঁরা ১৫-২০ দিন আগে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসেন। ফার্মগেট এলাকায় ফুটপাতে গেঞ্জির ব্যবসা শুরু করেন। থাকেন রাজধানীর রাজাবাজার এলাকায়। ঘটনার দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক সেবনের জন্য গিয়েছিলেন।
শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, সাম্যর ভাই শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে গ্রেপ্তার দুজন ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে তথ্য দিয়েছেন সাম্যর বন্ধু। ওই বন্ধুই তাঁদের শনাক্ত করেছেন।
গতকাল বিকেলে গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌফিক হাসান। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলম তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা প্রায় ২০ দিন আগে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসেন। রাজাবাজার এলাকায় থাকেন। ঘটনার দিন তাঁরা মাদক সেবনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।
ঘটনার বর্ণনা
সাম্যর বন্ধুরা জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সাম্য। এ সময় অন্য একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের ঊরুতে আঘাত করে পালিয়ে যায় ওই মোটরসাইকেলের আরোহী। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মুক্তমঞ্চ ও রমনা কালীমন্দিরের মাঝখানের খোলা জায়গায় ক্রাইম সিন চিহ্নিত করে রেখেছে সিআইডি। সেখানে কয়েকটি ইট ও ঘাসের মধ্যে রক্ত লেগে রয়েছে।
কালীমন্দিরের ফটকের পাশে থাকা একাধিক দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় কয়েকজন মারামারি করে। কিন্তু কী নিয়ে, কেন মারামারি করেছে, তা তাঁরা জানেন না। পরে শোনেন, একজন মারা গেছেন।
এক দোকানি বলেন, মাঝেমধ্যে মাদক সেবন নিয়ে এমন মারামারি লাগে। গতকাল কী জন্য মারামারি লেগেছে, তা জানেন না।
উপাচার্য, প্রক্টর ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি ছাত্রদলের
সাম্য খুন হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে জড়ো হন তাঁর বন্ধু, সহপাঠী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান তাঁরা। রাত ২টার দিকে মিছিল ভিসি চত্বরে এসে জড়ো হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’; ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন। তখন অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং উপাচার্যের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্য ও প্রক্টর মিছিল নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। নিহত শিক্ষার্থীকে দেখতে ভেতরে ঢুকতে চাইলে শিক্ষার্থীদের বাধায় ঢুকতে পারেননি। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থান ত্যাগ করেন উপাচার্য ও প্রক্টর।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সাম্য হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরের সামনে গিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি তোলেন তাঁরা। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তাঁরা।
সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে; অথচ সরকার তা নিয়ে নিশ্চুপ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘অতিদ্রুত আমরা এই ভিসি ও প্রক্টরকে সরানোর অনুরোধ করছি সরকারের কাছে। না হলে আমরা এই সরকারকে সরাতে বাধ্য হব।’
আজ অর্ধদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গতকাল মানববন্ধন করেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানান তাঁরা। সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল।
গতকাল বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বৈঠক করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে বিকেলে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান সাম্যকে হত্যার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার শোক পালন ও অর্ধদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেন।
উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেটটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে রমনা পার্কের মতো একটি স্মার্ট পার্ক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।’ এ ছাড়া নিয়মিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভিযানের জন্য একটা টিমও গঠন করা হবে বলে জানান উপাচার্য।
সাম্যর মৃত্যু নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সাম্যর মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে কী ধরনের অপরাধ চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদের দাবি সরকার গুরুত্বসহকারে দেখছে।’ বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা
গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে সাম্যর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে তাঁর বিভাগে। সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা হয়। পরে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সাম্যর দ্বিতীয় জানাজা হয়। এতে অংশ নেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মী, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে পরিবারের লোকজন, তাঁর বিভাগের শিক্ষক ও সহপাঠীরা মরদেহ নিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন।
গ্রামের বাড়িতে মাতম
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সাম্যর গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে চলছে মাতম। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসী তাঁর বাড়িতে জড়ো হন। স্যাম্যর লাশ গতকাল রাত ৭টার দিকে বাড়িতে পৌঁছায়। রাত ১১টার দিকে জানাজা শেষে লাশ দাফনের কথা ছিল।
সাম্য বেলকুচির সরাতৈল গ্রামের ফরহাদ সরদারের ছেলে। তাঁর মা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
সাম্যর বড় চাচা কাউসার আলম বলেন, ‘কী অপরাধ ছিল আমার ভাতিজার যে তাকে হত্যা করা হলো। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যারা এই হত্যার সাথে জড়িত, তাদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝোলানো হোক।’
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভাসানী মিলনায়তন চত্বরে এসে শেষ হয়।
তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি
সাম্য হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে গতকাল সাত সদস্যের কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার। কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী প্রক্টর শারমীন কবির। পাশাপাশি ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) সাচিবিক দায়িত্বে থাকবেন।
মাদারীপুরে আসামির বাড়িতে আগুন
মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকার তামিম হাওলাদারের গ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে এ ঘটনা ঘটে। কে বা কারা দিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটক তামিম হাওলাদার ওই এলাকার এরশাদ হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তার তিনজনই এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। সরকারের পতনের আগপর্যন্ত তামিম ও পলাশ গ্রামে অবস্থান করতেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। সম্রাট মল্লিক মাদকাসক্ত বলে এলাকাবাসীর ভাষ্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) খুনের ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার দিনভর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ, মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রদল। নিহত সাম্য ছাত্রদল নেতা ছিলেন।
সাম্য খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ বলছে, তিনজনই মাদকসেবী। মঙ্গলবার রাতে তাঁরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েছিলেন মাদক সেবন করতে। এ সময় মোটরসাইকেল ধাক্কা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে তাঁরা সাম্যকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে। তিনি এই হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায়।
গ্রেপ্তারের পর তিনজন কারাগারে
সাম্য হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজধানীর রাজাবাজার ও গ্রিন রোড এলাকা থেকে। তাঁরা হলেন মো. তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও মো. পলাশ সরদার (৩০)।
তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনই ‘বহিরাগত’। তাঁরা ১৫-২০ দিন আগে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসেন। ফার্মগেট এলাকায় ফুটপাতে গেঞ্জির ব্যবসা শুরু করেন। থাকেন রাজধানীর রাজাবাজার এলাকায়। ঘটনার দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক সেবনের জন্য গিয়েছিলেন।
শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, সাম্যর ভাই শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে গ্রেপ্তার দুজন ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে তথ্য দিয়েছেন সাম্যর বন্ধু। ওই বন্ধুই তাঁদের শনাক্ত করেছেন।
গতকাল বিকেলে গ্রেপ্তার তিনজনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌফিক হাসান। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামশেদ আলম তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গ্রেপ্তার তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাঁরা প্রায় ২০ দিন আগে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় আসেন। রাজাবাজার এলাকায় থাকেন। ঘটনার দিন তাঁরা মাদক সেবনের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন।
ঘটনার বর্ণনা
সাম্যর বন্ধুরা জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সাম্য। এ সময় অন্য একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে তাঁর মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ের ঊরুতে আঘাত করে পালিয়ে যায় ওই মোটরসাইকেলের আরোহী। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মুক্তমঞ্চ ও রমনা কালীমন্দিরের মাঝখানের খোলা জায়গায় ক্রাইম সিন চিহ্নিত করে রেখেছে সিআইডি। সেখানে কয়েকটি ইট ও ঘাসের মধ্যে রক্ত লেগে রয়েছে।
কালীমন্দিরের ফটকের পাশে থাকা একাধিক দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১১টায় কয়েকজন মারামারি করে। কিন্তু কী নিয়ে, কেন মারামারি করেছে, তা তাঁরা জানেন না। পরে শোনেন, একজন মারা গেছেন।
এক দোকানি বলেন, মাঝেমধ্যে মাদক সেবন নিয়ে এমন মারামারি লাগে। গতকাল কী জন্য মারামারি লেগেছে, তা জানেন না।
উপাচার্য, প্রক্টর ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি ছাত্রদলের
সাম্য খুন হওয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে জড়ো হন তাঁর বন্ধু, সহপাঠী ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান তাঁরা। রাত ২টার দিকে মিছিল ভিসি চত্বরে এসে জড়ো হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’; ‘আমার ভাই মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন। তখন অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং উপাচার্যের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্য ও প্রক্টর মিছিল নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। নিহত শিক্ষার্থীকে দেখতে ভেতরে ঢুকতে চাইলে শিক্ষার্থীদের বাধায় ঢুকতে পারেননি। পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে স্থান ত্যাগ করেন উপাচার্য ও প্রক্টর।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় সাম্য হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরের সামনে গিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সমাবেশে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান, প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি তোলেন তাঁরা। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তাঁরা।
সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘আমরা দেখছি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে; অথচ সরকার তা নিয়ে নিশ্চুপ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘অতিদ্রুত আমরা এই ভিসি ও প্রক্টরকে সরানোর অনুরোধ করছি সরকারের কাছে। না হলে আমরা এই সরকারকে সরাতে বাধ্য হব।’
আজ অর্ধদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গতকাল মানববন্ধন করেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এ সময় সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানান তাঁরা। সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠন। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রদল।
গতকাল বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বৈঠক করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রতিনিধিরা।
বৈঠক শেষে বিকেলে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান সাম্যকে হত্যার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার শোক পালন ও অর্ধদিবস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেন।
উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেটটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে রমনা পার্কের মতো একটি স্মার্ট পার্ক হিসেবে গড়ে তোলা হবে।’ এ ছাড়া নিয়মিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অভিযানের জন্য একটা টিমও গঠন করা হবে বলে জানান উপাচার্য।
সাম্যর মৃত্যু নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সাম্যর মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে কী ধরনের অপরাধ চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষার্থীদের দাবি সরকার গুরুত্বসহকারে দেখছে।’ বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা
গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে সাম্যর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে তাঁর বিভাগে। সেখানে তাঁর প্রথম জানাজা হয়। পরে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সাম্যর দ্বিতীয় জানাজা হয়। এতে অংশ নেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মী, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জানাজা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে পরিবারের লোকজন, তাঁর বিভাগের শিক্ষক ও সহপাঠীরা মরদেহ নিয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে রওনা দেন।
গ্রামের বাড়িতে মাতম
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সাম্যর গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে চলছে মাতম। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসী তাঁর বাড়িতে জড়ো হন। স্যাম্যর লাশ গতকাল রাত ৭টার দিকে বাড়িতে পৌঁছায়। রাত ১১টার দিকে জানাজা শেষে লাশ দাফনের কথা ছিল।
সাম্য বেলকুচির সরাতৈল গ্রামের ফরহাদ সরদারের ছেলে। তাঁর মা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
সাম্যর বড় চাচা কাউসার আলম বলেন, ‘কী অপরাধ ছিল আমার ভাতিজার যে তাকে হত্যা করা হলো। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যারা এই হত্যার সাথে জড়িত, তাদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝোলানো হোক।’
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ভাসানী মিলনায়তন চত্বরে এসে শেষ হয়।
তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি
সাম্য হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে গতকাল সাত সদস্যের কমিটি করা হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তৈয়েবুর রহমান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম এবং ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার। কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী প্রক্টর শারমীন কবির। পাশাপাশি ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) সাচিবিক দায়িত্বে থাকবেন।
মাদারীপুরে আসামির বাড়িতে আগুন
মাদারীপুর প্রতিনিধি জানান, সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকার তামিম হাওলাদারের গ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে এ ঘটনা ঘটে। কে বা কারা দিয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আটক তামিম হাওলাদার ওই এলাকার এরশাদ হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গ্রেপ্তার তিনজনই এলাকায় বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিলেন। সরকারের পতনের আগপর্যন্ত তামিম ও পলাশ গ্রামে অবস্থান করতেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে চলাফেরা করতেন। সম্রাট মল্লিক মাদকাসক্ত বলে এলাকাবাসীর ভাষ্য।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না জবি শিক্ষার্থীরা। চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে জবি ছাত্রদলের সদস্যসচিব সামসুল আরেফিন এ কথা বলেন...
১ ঘণ্টা আগেপুলিশি হেফাজত থেকে যুবক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আজ বুধবার বরিশাল স্টিমারঘাট পুলিশ ফাঁড়ির দুই কর্মকর্তাসহ চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা হলেন উপপরিদর্শক (এসআই) রেজা ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাহবুব। বাকি দুজন কনস্টেবল।
৩ ঘণ্টা আগেসিরাজগঞ্জে মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিহত শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫)। আজ বুধবার রাত সোয়া ১০টার দিকে বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সরাতৈল গ্রামে সরাতৈল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা হয়। পরে তাঁকে দাফন করা হয় পাশের জান্নাতুল বাকি...
৩ ঘণ্টা আগেশিক্ষার মান উন্নয়নে শিল্প খাতের মতামত জরুরি উল্লেখ করে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, শিক্ষার সঙ্গে শিল্প ও চাকরির প্রয়োজনীয়তার মধ্যে বড় একটি ব্যবধান রয়েছে। তাই পাঠ্যক্রম উন্নয়ন, হাতে-কলমে শেখার সুযোগ ও ক্যারিয়ার গাইডেন্সের গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানীর ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে...
৩ ঘণ্টা আগে