Ajker Patrika

বাজারদর

ডিম-মাংসের দাম বাড়ল, সবজির বাজারও চড়া

  • দুই সপ্তাহ ধরে কমছে চালের দাম। ক্রেতার বড় স্বস্তি।
  • গরুর মাংস ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

বোরোর মৌসুম শুরু হওয়ায় দুই সপ্তাহ ধরেই কমছে চালের দাম। মৌসুম শুরু হওয়ার আগের তুলনায় ধরনভেদে চালের দাম ৮-১০ টাকা কমেছে পাইকারি ও খুচরা দোকানগুলোয়। এতে চালের বাজারে অস্বস্তি অনেকটাই কেটেছে ক্রেতার। এখনো যেসব চালের দাম বেশি রয়েছে, সামনের দিনগুলোয় সেগুলোর দামও কমবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

চালের দাম কমে স্বস্তি এলেও সবজির দামে অস্বস্তি বাড়ছে বাজারগুলোয়। এ ছাড়া চড়া দামের সবজির সঙ্গে চলতি সপ্তাহে কিছুটা বেড়েছে প্রোটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম একই রকম আছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাড্ডা, রামপুরা, সেগুনবাগিচা, মগবাজারসহ কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সবজির বাজারে শুধু আলুর দাম মানভেদে ২৫-৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। কোনা কোনো সবজির দাম শতকের কাছাকাছি উঠেছে। বাজারে ভালো মানের প্রতি কেজি বেগুনের দাম ৮০-১০০ টাকা কেজি। ঢ্যাঁড়স ও পটোল বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি, যা সপ্তাহখানেক আগেও ৪৫-৫০ টাকা ছিল। ধুন্দুল, বরবটি, চিচিঙ্গা, করলা মান ও বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮৫ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ৬০-৭০ টাকা কেজি ছিল। এ ছাড়া কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা নূরে আলম বলেন, সবজির চড়া দামের কারণে অনেক মানুষই সবজি কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। চেনা অনেক ক্রেতাই শুধু দামের কারণে আগে যা কিনত, তার অর্ধেক সবজি কেনে।

গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকা, যা চলতি সপ্তাহে ১৪০-১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম না বাড়লেও বেড়েছে সোনালি মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ২৪০-২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০০-৩১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাংস বিক্রেতারা বলছেন, কোরবানির বাজারে ভালো দামের আশায় সারা দেশের মানুষ এখন গরু বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। যাঁরা বিক্রি করছেন, তাঁদের কাছ থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

বনশ্রীর গরুর মাংস বিক্রেতা মো. স্বপন বলেন, ‘কোরবানির জন্য এখন গরুর সরবরাহ খানিকটা কমেছে। যা পাচ্ছি, সেটাও বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে; যে কারণে মাংসের দাম বেড়েছে।’

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবজির চড়া দামের কারণে নিম্ন আয়ের মানুষ ডিম খাওয়া বাড়িয়েছেন; কিন্তু এখন ডিমের দামও বাড়ছে।

উৎপাদনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ চাহিদার চেয়ে বেশি থাকায় কয়েক মাস ধরে বাজারে কম দামে ডিম বিক্রি হয়েছে। ফলে খামারিদের বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে ডিম বিক্রি করতে হয়েছে, যে পরিস্থিতি এখনো বিরাজ করছে।

রামপুরা বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘চারজনের পরিবারের সংসারে বাজার খরচের বরাদ্দ বাড়ানোর সুযোগ নেই, যে কারণে সবজি কেনার পরিমাণ অর্ধেকে নামিয়েছি। তা ছাড়া উপায় নেই; কারণ, পণ্যের মূল্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমার আয় বাড়েনি।’

পুরোনো চালের দাম উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল থাকলেও বাজারে নতুন আসা মিনিকেট চাল তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগেও এই চাল কিনতে ৭৮-৮২ টাকা লাগত।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত