Ajker Patrika

ভারতের ভিসা জটিলতা

এমআরসিপি পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কায় ৪৪ চিকিৎসক

মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৫১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাজ্যের মেম্বারশিপ অব দ্য রয়্যাল কলেজেস অব ফিজিশিয়ানস (এমআরসিপি) পরীক্ষার তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্ব। এই পরীক্ষায় ভারতের বিভিন্ন কেন্দ্রে অংশ নেবেন বাংলাদেশি ৪৪ জন চিকিৎসক। তবে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের ভিসা প্রদান বন্ধ রেখেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকদের কেউ অনলাইনে, আবার কেউ সরাসরি ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে গিয়ে আবেদন করলেও ভিসার বিষয়ে এখনো কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। শুধু ভিসার কারণে এমআরসিপি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাঁদের।

রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস (আরসিপি) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশসহ ১৯টি দেশের ৩৬টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের কেন্দ্র পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন ৪৫ জন চিকিৎসক, আর ভারতের নয়টি বড় শহরের কেন্দ্রগুলোতে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষায় অংশ নেবেন বিভিন্ন দেশের ৪২০ জন চিকিৎসক। প্রতি পর্বের পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে প্রার্থীকে আবেদনের সময় পছন্দের চারটি কেন্দ্রের নাম সংযুক্ত করা যায়। এরপর রয়্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ আসন বণ্টন করে। সেই হিসাবে চূড়ান্ত পর্বে বাংলাদেশের ৪৪ জনের আসন পড়েছে ভারতের কেন্দ্রে।

এমআরসিপির তৃতীয় পর্বের পরীক্ষায় অংশ নেবেন এমন অন্তত পাঁচজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে রয়্যাল কলেজ থেকে প্রাপ্ত নিশ্চিতকরণ চিঠি তাঁরা পেয়েছেন। ওই নিশ্চিতকরণ চিঠি সংযুক্ত করে তাঁরা ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করেছেন। গত আগস্টের পর ভারতের ভিসার জন্য অনলাইন আবেদন বিভিন্ন সময় বন্ধ থাকায় তাঁদের কেউ সরাসরি সশরীরে ভিসা কেন্দ্রে গিয়ে আবেদন করেছেন, আবার কেউ আবেদন করেছেন অনলাইনে। আবেদনের বিপরীতে ভিসা কেন্দ্র থেকে তাঁরা কোনো প্রাপ্তিস্বীকার পত্র কিংবা মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাননি। বিষয়টি জানিয়ে ভিসা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে ই-মেইলও করেছেন তাঁদের কেউ কেউ। তবে এখন পর্যন্ত তাতেও সাড়া মেলেনি।

জানা যায়, প্রতিযোগিতামূলক এমআরসিপি পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য চিকিৎসক আবেদন করেন। তবে তাঁদের মধ্যে খুব কমসংখ্যক আবেদনকারী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। প্রতি পরীক্ষার জন্য একজনকে ফি দিতে হয় ১ হাজার ২৭৮ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি ১ লাখ ৯২ হাজার টাকার বেশি। বাংলাদেশি চিকিৎসকেরা সাধারণত ভারত, সিঙ্গাপুরের কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার কেন্দ্র নিশ্চিত হওয়ার পর কোনো চিকিৎসক তাতে অংশ নিতে না পারলে ফি থেকে ৪০ শতাংশ টাকা কর্তন করা হয়।

এমআরসিপির তৃতীয় পর্বের পরীক্ষায় যাঁরা অংশ নেবেন, তাঁদেরই একজন ডা. সুদেষ্ণা চক্রবর্তী পূর্বা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) এফসিপিএস দ্বিতীয় পর্বের এই শিক্ষানবিশ চিকিৎসক জানান, তাঁর তৃতীয় পর্বের এমআরসিপির পরীক্ষা কেন্দ্র ভারতের হায়দরাবাদে। আগামী ২১ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার এক থেকে দেড় মাস আগে রয়্যাল কলেজ থেকে অ্যাডমিট কার্ড পাবেন তিনি। গত মাসে ভারতের ভিসা কেন্দ্রে গিয়ে সরাসরি আবেদন করেছেন। এরপর ই-মেইলও করেছেন তিনি। তবে এখনো কোনো উত্তর মেলেনি ভারতের ভিসা কেন্দ্র থেকে।

ডা. সুদেষ্ণা চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই পরীক্ষা খুবই প্রতিযোগিতামূলক। আবেদন করলেই যে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ মিলবে, এমনটি নয়। তৃতীয় পর্বের পরীক্ষা দিতে ভারতে যেতে হবে। বাংলাদেশে সম্প্রতি তৃতীয় পর্বের পরীক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে একটি কেন্দ্র হওয়ায় মাত্র ৪৫ জন চিকিৎসক তাতে সুযোগ পাচ্ছেন। আমি ডিসেম্বরে ভিসা কেন্দ্রে গিয়ে আবেদনের হার্ড কপি জমা দিয়েছি। তারা কিছু বলেনি। এরপর ই-মেইল করেছি। এখনো কোনো উত্তর পাইনি।’

বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের এমআরসিপি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. জিনাত রেহানা। তিনি তৃতীয় পর্বের পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র বাছাইয়ে চারটি পছন্দ দিয়েছেন। এগুলোর মধ্যে ভারতে দুটি, একটি নেপালে এবং একটি বাংলাদেশে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে চট্টগ্রাম বা অন্য কোথাও পরীক্ষার সুযোগ থাকলে আমি পছন্দ তালিকায় দিতাম। বাংলাদেশে একটিই কেন্দ্র। চারটি চয়েজ দেওয়ার সুযোগ থাকে। আমি দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষা দিই ২০২২ সালে। এরপর থেকে লাগাতার চেষ্টা করে এ বছর সুযোগ পাই। খরচ, যাতায়াত বিবেচনায় আমি বাংলাদেশের বাইরে ভারত ও নেপালের জন্য চয়েজ পূরণ করেছিলাম।’

ভিসার জন্য গত নভেম্বরে আবেদন করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনসের (বিসিপিএস) এফসিপিএস দ্বিতীয় পর্বের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক সালমান সাইফী। তিনি বলেন, ‘আমি গত মে মাসে দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। এরপর তৃতীয় পর্বের জন্য আবেদন করি। আমার সিট পড়েছে হায়দরাবাদে। ভারতীয় ভিসার জন্য নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আবেদন করি। তবে তারা কোনো রিপ্লে আমাকে জানায়নি। পরে ভারতীয় হাইকমিশনে আবারও যোগাযোগ করেছি। তারা কিছু পেপার নিয়ে যেতে বলেছে।’

চিকিৎসকেরা বলছেন, বৈশ্বিকভাবে চিকিৎসকদের মর্যাদাপূর্ণ উচ্চতর ডিগ্রির পরীক্ষা এমআরসিপি। প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি চিকিৎসক এমআরসিপিতে উত্তীর্ণ হয়ে যুক্তরাজ্য, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন। বাংলাদেশি চিকিৎসকেরা ভারতের বিভিন্ন শহরে আয়োজিত কেন্দ্রে এই পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আসছেন। তবে এখন ভারতীয় ভিসা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আগামী পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুলিশের উদ্যোগে ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল শিক্ষার্থীদের ‘শান্তিচুক্তি’, এল না সিটি কলেজ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শান্তিচুক্তির পর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
শান্তিচুক্তির পর ঢাকা কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের উল্লাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভবিষ্যতে কোনো প্রকার বিবাদে না জড়ানোর অঙ্গীকার করে রাজধানীর ঢাকা কলেজ ও ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মৌখিক ‘শান্তিচুক্তি’ হয়েছে। তবে এই চুক্তিতে যোগ দিতে আসেননি সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার দুপুরে ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিবাদে না জড়ানোর অঙ্গীকার করেন।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। কখনো কখনো তা ব্যাপক সংঘর্ষে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের এই সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেমন বিপাকে পড়তে হয়, তেমনি ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাস্তায় চলাচল করা সাধারণ মানুষদেরও।

তাই এই ‘শান্তিচুক্তি’ সম্পাদনের আয়োজন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নিউমার্কেট থানা। ওই থানার ওসি এ কে এম মাহফুজুল হকের উদ্যোগে তিন কলেজের ‘শান্তিচুক্তি’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

জানতে চাইলে এ কে এম মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমরা ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ “শান্তিচুক্তি” অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে আসেননি। এখানে আমরা কী করব বলেন?’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা যে মৌখিকভাবে শান্তি চুক্তি করেছেন আমরা এই বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাই। পুলিশ, দুই কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে আমরা একটি কমিটি করে দেব। ভবিষ্যতে যদি এই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো বিবাদ ঘটে তা এই কমিটির মাধ্যমে সুরাহা করা হবে।’

এই ‘শান্তিচুক্তি’ যেন দীর্ঘদিন বজায় থাকে সে কামনা করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘শান্তিচুক্তি’ অনুষ্ঠানে এলে তাঁদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁদের কোলাকুলি করতেও দেখা যায়।

‘শান্তিচুক্তি’ অনুষ্ঠানে ওসি এ কে এম মাহফুজুল হক, ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস, আইডিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহাম্মদ রেযওয়ানুল হকসহ কলেজ দু’টির শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনায় ইজিবাইকের মোটরের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে সুরাইয়া (২৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার নগরীর বয়রা বাজার শেরের মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সুরাইয়া যশোরের অভয়নগর উপজেলার হিতিয়া এলাকার মো. আতিয়ার মোল্লার মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, আজ সকালে অভয়নগর থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন ওই নারী। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পথে চলন্ত ইজিবাইকের মোটরের সঙ্গে তাঁর ওড়না পেঁচিয়ে যায়। এ সময় ইজিবাইক থেকে ওই নারী নিচে পড়ে গিয়ে গলায় গুরুতর আঘাত পান। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ওই নারীর আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কাটা গলা নিয়ে রিকশা চালিয়ে ৩ কিলোমিটার, হাসপাতালে মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রিকশাচালক ফজলুর রহমানের (৩৫) গলা কেটে দেওয়া হয়েছিল। তারপরও রিকশা চালিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে তিনি বাজারে আসেন। এরপর হাসপাতালে পাঠানো হলে তিনি মারা যান। শনিবার রাতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজলুর রহমানের বাড়ি তানোর উপজেলার অমৃতপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ইবরাহিম আলী। ফজলুর রহমানের ব্যাটারিচালিত রিকশাটি ছিনিয়ে নিতে ছুরি দিয়ে তাঁর গলা কেটে দেওয়া হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে মৃত্যুর আগে তিনি কিছু বলে যেতে পারেননি।

মোহনপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোদাচ্ছের হোসেন খান জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর শিয়ালকোলা এলাকায় রিকশাচালক ফজলুর রহমানের গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়। এরপর তিনি নিজেই রিকশা চালিয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরের কেশরহাট বাজারে আসেন। সেখান থেকে স্থানীয় লোকজন তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠান। এরপর রাত ১০টার দিকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এসআই মোদাচ্ছের হোসেন খান জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত হচ্ছে। এরপর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। স্বজনেরা থানায় আসার পর এ ব্যাপারে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬: ইয়াসিনকে প্রার্থী করার দাবিতে নির্যাতিত বিএনপি পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা-৬ আসনে হাজি ইয়াসিনকে প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে বিএনপির কারা নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লা-৬ আসনে হাজি ইয়াসিনকে প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে বিএনপির কারা নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াসিনকে চূড়ান্তভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় নগরীর টাউন হল মাঠের বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মঞ্চে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলা ও নির্যাতনের শিকার হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব চৌধুরীর স্ত্রী নাসরিন খানম। তিনি বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপিকে সমর্থন করার কারণে বহু পরিবারের স্বামী, বাবা, ভাই ও সন্তানেরা মামলা, হামলা, কারাবরণ ও হত্যার শিকার হয়েছেন। সেই কঠিন সময়ে এসব পরিবারের পাশে থেকে আইনি সহায়তা, আটক নেতা-কর্মী ও তাঁদের পরিবারের ভরণপোষণ, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসনসহ সকল মানবিক সহায়তা দিয়েছেন আমিন উর রশিদ ইয়াসিন।

লিখিত বক্তব্যে নাসরিন খানম দাবি করেন, এই সময়ে কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে শত শত মামলা হয়েছে এবং হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাবরণ করেছেন। নিরাপত্তার কারণে নেতা-কর্মীরা নিজ বাড়িতে রাত কাটাতে পারেননি, এমনকি স্বজনদের জানাজা ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতে পারেননি। সেই দুঃসময়ে পরিবারগুলোর অন্যতম ভরসা ছিলেন আমিন উর রশিদ ইয়াসিন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় কুমিল্লা-৬ আসনে আমিন উর রশিদ ইয়াসিনের নামের পরিবর্তে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বক্তারা মনিরুল হক চৌধুরীকে এই অঞ্চলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের কাছে ‘কম পরিচিত’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের দাবি, গত ১৭ বছরের রাজনৈতিক সংকট ও নির্যাতনের সময়ে মনিরুল হক চৌধুরী এলাকায় নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন না।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে দলের ত্যাগী, জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতাকে মনোনয়ন না দিলে বিজয় অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী আনা আজিজা আবেগঘন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর নামে ৩২টি মামলা ছিল। প্রতিটি মামলার আইনি সহায়তা, জেলখানায় পিসির খরচ, চিকিৎসা, জামিন, পরিবারের দেখাশোনাসহ সকল কিছুর দায়িত্ব নিয়েছিলেন হাজি ইয়াসিন। বিগত ১৭ বছর তিনি আমার মতো শত শত নির্যাতিত নেতা-কর্মীর অভিভাবক হয়ে বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়েছিলেন। আমরা তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ জানাই, আমাদের বটবৃক্ষকে যেন উপড়ে না ফেলা হয়।’

এ সময় গত ১৭ বছরে রাজনৈতিক মামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের পরিবারের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য দেন মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রী আবিদা সুলতানা প্রমী, বিএনপি নেতা ইকরাম হোসেনের স্ত্রী নাসিমা বেগম, মনির হোসেনের স্ত্রী লাকি আক্তারসহ অন্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত