Ajker Patrika

দৃক গ্যালারিতে ‘কার্টুন বিদ্রোহ’ প্রদর্শনী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২৪, ২১: ০৩
দৃক গ্যালারিতে ‘কার্টুন বিদ্রোহ’ প্রদর্শনী

রাজধানীর পান্থপথের দৃক গ্যালারিতে শেখ হাসিনার একটি কার্টুনে আঁকা প্রতিকৃতি রাখা। তাতে বাঁধা বেশ কয়েকটি রশি। দেখে যে কারও মনে হবে, সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি হীরক রাজার দেশের জনপ্রিয় সংলাপ ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান’। আদতে দড়ি ধরে টান না দিলেও সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কার্টুন যে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিল, তা গত এক মাসে প্রমাণিত। সেসব কার্টুন নিয়ে এবার দৃক গ্যালারিতে শুরু হয়েছে ‘কার্টুনে বিদ্রোহ’ নামে প্রদর্শনী। 

আজ শুক্রবার বিকেলে কার্টুনে বিদ্রোহ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। 

স্বাগত বক্তব্যে আলোকচিত্রী শহীদুল আলম বলেন, ‘কার্টুনিস্টরা যেভাবে প্রতিবাদ করে, ভুল বুঝিয়ে দেয় সেটা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, এর সঙ্গে আরেকটি জিনিস গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো, যাদেরকে প্রশ্ন করে তাঁরা কীভাবে বিষয়টি নেয়। এই জায়গায় আমি মনে করি, আমাদের বড় একটা পরিবর্তনের আশা রাখি। সারা পৃথিবীতে অনেক কিংবদন্তিতুল্য নেতা ছিলেন। তাঁদেরও ভুল হয়। কার্টুনিস্টরা যখন তাদের ভুল ধরিয়ে দেয়, আর তাঁরাও ভুল শোধরাতে পারে সেই সম্পর্কটার একটা অর্থ থাকে। কার্টুনিস্টরা কার্টুন আঁকছে, প্রতিবাদ করছে। শুধু এটা করলেই হবে না। যাদের উদ্দেশ্য করে করা, তাঁদের যেন চোখে পড়ে একটা জবাবদিহি তৈরি হয় সেই জায়গাটা যেন থাকে।’

কার্টুনিস্ট আহসান হাবিব তাঁর কাউন্টডাউন কার্টুন নিয়ে বলেন, ‘আমি যখন কার্টুনটা আঁকি, বিদেশ থেকে অনেকেই ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেছে। আপনি কী জানেন? কখন? আমি বললাম, আমি জানি না। তবে সিচুয়েশন এমন যে যেকোনো সময় ঘটতে পারে।’ 

কার্টুনিস্ট মেহেদী হক বলেন, ‘এটা আমার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যাপার। বেশ কিছুদিন এমন ছিল আমি একাই আঁকছি। অনেকেই বলেছিল এটা কি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? আমি যেহেতু আঁকছি বলতে পারি না, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমার সম্পাদক আমাকে স্পেস তৈরি করে দিয়েছেন। অনেকের এটা ছিল না। কিন্তু অভূতপূর্ব বিষয় হলো এক মাসে প্রায় ৫০০ মতো কার্টুন ডাউনলোড করেছি। এটা অবিশ্বাস্য। আমরা বলি, কার্টুন হয় না। কিন্তু যখন প্রয়োজন তখন কিন্তু হয়ে যায়। একটা আগ্রহের জায়গা তৈরি হয়েছে। এটা তরুণেরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এটাকে ছাড়া যাবে না। এটাকে নিয়ে যেতে হবে।’ 

ইয়ার্কি সম্পাদক সিমু নাসের বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে বলি, আর্ট কালচার কী কাজে লাগে আমাদের? গান, কবিতা কী কাজে লাগে আমাদের। এই আন্দোলনে গিয়ে সবচেয়ে যেটা বেশি দেখলাম, সেটা হলো আর্ট কালচার। কার্টুন, গান, র‍্যাপ গান, গ্রাফিতি, স্লোগান। আমরা আসলে একটা ভয়হীন জায়গা পেলে কত কী যে করতে পারি, এই কার্টুনগুলো সেই প্রমাণ।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, ‘ছাত্র-জনতার এই গণ-অভ্যুত্থানের পরে আমাদের সুশীল সমাজ সকলের দায়িত্ব যেন রাষ্ট্রকে সংস্কার করে ভালোর দিকে নিয়ে যেতে পারি। আর কার্টুনিস্ট সমাজের কাছে আশা রাখি, তাঁরা যেন শুধু ফ্রিডম অব স্পিচের দিকে ফোকাস না করে রাষ্ট্রের কাঠামোর সংস্কারের দিকে ফোকাস করে। যাতে জনগণ সব সময় রাষ্ট্রের কাঠামো নিয়ে কথা বলে। আমি স্মরণ করি মুশতাক ভাই, কিশোর ভাইকে। যখন কেউ কথা বলেনি, তাঁরাই প্রথম এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠিয়েছিলেন।’

অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই দর্শকে পূর্ণ হয়ে যায় গ্যালারি। কার্টুন ছাড়াও ছিল ইনস্টলেশন আর্ট। সেখানে ঝুলন্ত পানির বোতলে লেখা ছিল শহীদ মুগ্ধর নাম, ছিল এই পথপরিক্রমা নিয়ে ভিডিও। 

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আঁকা কার্টুন সংগ্রহ করে ৩০০ বেশি কার্টুন নিয়ে চলছে এই প্রদর্শনী, চলবে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দেখা যাবে। প্রদর্শনীর আয়োজনে রয়েছে বাংলাদেশ কার্টুনিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, দৃক ও ইয়ার্কি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত