Ajker Patrika

টিকটক করতে স্ত্রী ৪-৫ দিন উধাও, ঘরে ফিরল লিগ্যাল এইডের মধ্যস্থতায়

সুলতান মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, ২২: ৩৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

শরিফুল ইসলাম (ছদ্মনাম)। বাড়ি পাবনা জেলায়। ঢাকায় গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। দুই বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন রমিলা খাতুনকে (ছদ্মনাম)। তাঁরা ঢাকায় বসবাস করছেন। দাম্পত্যজীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু তিন-চার মাস ধরে কলহ চলছিল। কারণ, রমিলা (২৩) টিকটকে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। ঘরে-বাইরে ভিডিও বানিয়ে টিকটকে প্রকাশ করেন। অপরিচিত লোকদের সঙ্গে বাইরে গিয়ে ভিডিও শুট করেন। শরিফুলের (৩২) এটি পছন্দ নয়। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কলহ চলছে। একপর্যায়ে রমিলা বাবার বাড়ি চলে যান। শরিফুলও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

স্বামী যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় ৭ জুলাই ঢাকায় লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করেন রমিলা। রমিলা অভিযোগে বলেছেন, স্বামী তাঁকে মারধর করে বের করে দিয়েছেন। ভরণপোষণ দেন না।

ওই দিনই তাঁর স্বামীকে এসএমএস ও ফোনকল করে বিষয়টি জানায় লিগ্যাল এইড। আজ বুধবার (৩০ জুলাই) ছিল তাঁদের মীমাংসা সভার তারিখ। ঢাকার লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মো. সায়েম খানের উপস্থিতিতে শুনানি হয়। এ সময় উভয় পক্ষ অভিযোগ তুলে ধরেন। তখন দুই পক্ষের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন।

শুনানির সময় রমিলা স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ না করার অভিযোগ তুলে ধরেন। আর স্বামী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘স্ত্রী তিন-চার মাস ধরে টিকটকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাই তার সঙ্গে আমার একটু মনোমালিন্য হয়েছে। টিকটক ছাড়লে তাকে নিয়ে সংসার করতে আমার কোনো আপত্তি নেই।’

রমিলাও তাঁর সমস্যার কথা তুলে ধরেন। পরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন এবং মামলা ছাড়াই সমস্যার সমাধান করে দেন।

শরিফুল ইসলামের পক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, লিগ্যাল এইডের মধ্যস্থতায় তাঁদের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে। এতে উভয় পক্ষই খুশি।

পরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বছর আগে প্রেম করে বিয়ে হয়েছে। ঢাকায় বাইপাইলে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকি। তিন-চার মাস আগে স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কিছু লোকের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। মাঝেমধ্যে টিকটক ভিডিও শুট করার কথা বলে বিভিন্ন স্থানে যেত। একবার এভাবে বেরিয়ে যাওয়ার পাঁচ দিন পর বাসায় ফিরেছে। এ নিয়ে তার সঙ্গে ঝগড়া হয়। এরপর সে বাবার বাড়ি চলে যায়। এরপর আমি আর যোগাযোগ করিনি।’

শুনানির সময় রমিলার কাছ থেকে মারধর ও নির্যাতনের মেডিকেল সার্টিফিকেট চাওয়া হলে তিনি দিতে পারেননি। অভিযোগের পক্ষে সুস্পষ্ট কোনো প্রমাণও দিতে পারেননি তিনি। শরিফুল স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, টিকটক ভিডিওতে আসক্ত হওয়া এবং অপরিচিত লোকদের সঙ্গে বাইরে যাওয়া নিয়ে তাঁর আপত্তি। স্ত্রী টিকটক ভিডিও বানানো ছেড়ে দিলে তাঁকে গ্রহণ করতে তাঁর কোনো আপত্তি নেই।

পরে রমিলা স্বামী শরিফুলের এই শর্তে রাজি হয়েছেন। এরপর তাঁদের লিগ্যাল এইড অফিস থেকে একটি নিষ্পত্তিনামা দেওয়া হয়। তাঁরা শর্ত মেনে একসঙ্গে থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) মো. সায়েম খান বলেন, লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে প্রচলিত বিচারব্যবস্থার বাইরে স্বল্প সময়ে ও বিনা খরচে প্রার্থীদের সেবা দেওয়া হয়। লিগ্যাল এইড থেকে সেবা নিতে বা আবেদন করতে কোনো টাকাপয়সা লাগে না। কেউ আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিপক্ষকে এসএমএসের মাধ্যমে মীমাংসা সভার জন্য নির্ধারিত তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (বিচারক) উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন।

লিগ্যাল এইড থেকে সেবা পাবে যারা—

(ক) শিশু।

(খ) মানব পাচারের শিকার ব্যক্তি।

(গ) শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশু।

(ঘ) নিরাশ্রয় ব্যক্তি বা ভবঘুরে।

(ঙ) ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বা নৃগোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের ব্যক্তি।

(চ) পারিবারিক সহিংসতার শিকার বা সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছেন এমন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি।

(ছ) বয়স্ক ভাতা পান এমন ব্যক্তি।

(জ) ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মা।

(ঝ) দুর্বৃত্তের ছোড়া অ্যাসিডে দগ্ধ নারী বা শিশু।

(ঞ) আদর্শ গ্রামে গৃহ বা ভূমি বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তি।

(ট) অসচ্ছল বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও দুস্থ নারী।

(ঠ) প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।

(ড) আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আদালতে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা আত্মপক্ষ সমর্থন করতে অসমর্থ ব্যক্তি।

(ঢ) বিনা বিচারে আটক ব্যক্তি, যিনি আত্মপক্ষ সমর্থনের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আর্থিকভাবে অসচ্ছল।

(ণ) আদালত কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে বিবেচিত ব্যক্তি।

(ত) জেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আর্থিকভাবে অসহায় বা অসচ্ছল বলে সুপারিশকৃত বা বিবেচিত ব্যক্তি।

(থ) লিগ্যাল এইড কর্তৃক চিহ্নিত আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন, নানাবিধ আর্থসামাজিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, যিনি আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অধিকার প্রতিষ্ঠা বা মামলা পরিচালনায় অসমর্থ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইনি স্বীকৃতিসহ ১৫ দফা দাবিতে রাজধানীতে বাকপ্রতিবন্ধীদের অবস্থান কর্মসূচি-র‍্যালি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পল্টন এলাকা থেকে একটি মিছিল শুরু করে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন এলাকা থেকে একটি মিছিল শুরু করে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

আইনগত স্বীকৃতি ও সুরক্ষাসহ ১৫ দফা দাবি নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীরা। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় বধির ঐক্য পরিষদ ব্যানারে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। এর আগে পল্টন এলাকা থেকে একটি মিছিল শুরু করে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

লিখিত বক্তব্যে শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীরা জানান, প্রতিবন্ধী সুরক্ষা আইন ২০১৩-এ শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধী শব্দের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ‘বধির’ ব্যবহার করতে হবে। বাকপ্রতিবন্ধীদের মালিকানাধীন সম্পত্তি রক্ষায় বিরোধ মামলার জন্য ৫০ শতাংশ খরচ মওকুফ করতে হবে। জাতীয় সংসদে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মোট পাঁচ শতাংশ সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ এবং শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথকভাবে দুই শতাংশ কোটা নিশ্চিত করতে হবে।

তাঁরা আরও জানান, শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক আবাসিক কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও কার্যকরীকরণ নিশ্চিত এবং শিক্ষকদের জন্য ইশারা ভাষায় প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। এছাড়া প্রশিক্ষণ ও শিক্ষক নিয়োগ, আর্থিক ভাতা ও সহায়তা, কর্মসংস্থান ও কোটা, বাসস্থান ও ভূমি সংক্রান্ত সুবিধাসহ ১৫ দাবি জানান তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রোগী সেজে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চুরি, সাত নারী গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
গ্রেপ্তারকৃত সাত নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তারকৃত সাত নারী। ছবি: আজকের পত্রিকা

রোগী সেজে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চুরির ঘটনায় সাত নারীকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা সবাই জামালপুর ও বগুড়ার সারিয়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিনিয়ত সদর হাসপাতালে লাইনে দাঁড়ানো রোগীদের টাকা, গয়না ও মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটছে। গতকাল রোববার দুপুরে কুলসুমা বেগম নামে এক নারী ডাক্তার দেখানোর জন্য টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়ান। এ সময় তাঁর ব্যাগ থেকে ছয় হাজার টাকা চুরির করার সময় হাতেনাতে এক নারীকে আটক করে স্থানীয়রা। পরে তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাতে শহরের বিভিন্ন বাসায় অভিযান চালিয়ে আরও ছয় নারীকে আটক করা হয়। জড়িত সাত নারীই সদর হাসপাতালে রোগী সেজে চুরির সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁরা একই এলাকায় দুই থেকে তিন মাসের বেশি অবস্থান করেন না।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত সবাই চোর চক্রের সদস্য। তারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী সেজে চুরিসহ নানা অপরাধ করে থাকে। তারা কয়েক দিন আগে এই শহরে বাসাভাড়া নিয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন স্থানে একই কাজ করে আসছিল এই চক্র। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
ড. নাজমুল করিম খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড. নাজমুল করিম খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) সাবেক কমিশনার নাজমুল করিম খানকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নাজমুল করিমকে জনস্বার্থে সরকারি কাজ থেকে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন হওয়ায় সরকারি চাকরি আইনের ৩৯ (১) ধারা অনুযায়ী তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

নাজমুল করিমকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে তা জানানো হয়নি।

তবে রাস্তা বন্ধ করে এই পুলিশ কর্মকর্তার অফিসে যাতায়াত নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ১ সেপ্টেম্বর জিএমপি কমিশনার পদ থেকে প্রত্যাহার করে তাঁকে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

সরকারি চাকরি আইনের ৩৯ (১) ধারার বিধান অনুযায়ী কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করা হলে বা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হলে তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা যায়।

নাজমুল করিমকে বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা প্রজ্ঞাপনে তা জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ১৭
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে সকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তারিক সাইফ মামুন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, মামুনের বাবার নাম এস এম ইকবাল। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার মোবারক কলোনি এলাকায়।

ওই ব্যক্তি পেশায় ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী। তবে পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তি চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, ‘গুলিতে নিহত ব্যক্তিটি শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। তিনি কোনো ব্যবসায়ী নন। তিনি ইমন-মামুন গ্রুপের মামুন।’

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ঢালিউড নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ভাই সাইদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলায় ঢাকার আন্ডারগ্রাউন্ড সন্ত্রাসী গ্রুপ ইমন-মামুন জড়িত। এই গ্রুপের ইমন বর্তমানে পলাতক। মামুন আজ মামলায় হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন।

ঘটনার বর্ণনায় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনে গোলাগুলি হয়। গুলির শব্দ শুনে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে এসে তিনি এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভেতরে আনা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে নিহতের পূর্বপরিচিত দাবি করা জনৈক ফাইজুল হক অপু জানান, সকালে তারিক সাইফ মামুনের ফোন নম্বর থেকে তাঁকে কল করে ঘটনাটি জানানো হয়। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেলে এসে পরিচয় শনাক্ত করেন।

ঢামেকে মামুনের স্ত্রী দীপা জানান, মিরপুরে মামুনের গার্মেন্টস ব্যবসা রয়েছে। দুই মেয়েকে নিয়ে আফতাবনগরের এফ-ব্লকে থাকেন তাঁরা। তিনি আরও জানান, দুই দিন পর আজ সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মামুন। জজকোর্টে একটি মামলার হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। এরপরই ফোনে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে।

দীপা বলেন, ‘কারা আমার স্বামীকে খুন করছে জানি না।’ এ সময় ‘ইমন’ নামে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইমন ছাড়া কেউ এই কাজ করে নাই। কয়েক দিন আগে ইমনই লোক দিয়ে মামুনকে মারধর করেছিল।’

তবে ইমনের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হননি দীপা।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত