Ajker Patrika

জীর্ণশীর্ণ বাঁশ আর গাছ যখন বিদ্যুতের খুঁটি

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ২০
জীর্ণশীর্ণ বাঁশ আর গাছ যখন বিদ্যুতের খুঁটি

টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌর এলাকায় নড়বড়ে বাঁশের খুঁটি আর গাছ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। সড়কের পাশ দিয়ে গাছ ও বাঁশের খুঁটিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। ফলে জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচাবাজারসংলগ্ন এলাকার হাজারো মানুষের। 

এ বিষয়ে স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বৈদ্যুতিক তারের খুঁটি প্রতিস্থাপনের দাবি জানিয়ে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। 

গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সখীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে হজরত শাহ কামাল (রহ.) সড়ক ঘেঁষে বসানো হয়েছে ১১ হাজার কেভি ভোল্টেজের ট্রান্সফরমার। বৈদ্যুতিক খুঁটি না বসিয়ে ট্রান্সফরমার থেকে শুধু বাঁশের খুঁটিতে তার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৩০-২৫০ ভোল্টেজের এলটি লাইন (লো-টেনশন লাইন)। ওই লাইনের অধিকাংশ জায়গায় তারের ভারে বাঁশগুলো হেলে পড়েছে। কোথাও কোথাও ওই হেলে পড়া বাঁশকে অন্য বাঁশ দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছে। 

জীর্ণশীর্ণ বাঁশ আর গাছ যখন বিদ্যুতের খুঁটিএ ছাড়া রাস্তার পাশে নালা ও পুকুরের পানি ছুঁই ছুঁই করছে বিদ্যুৎ লাইন। কোথাও লতাপাতা জড়িয়ে বৈদ্যুতিক তারগুলোকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তাজুড়ে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে ওই এলাকার কয়েক শ বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এলটি লাইনের মধ্যবর্তী এক জায়গায় গিয়ে দেখা যায় আরও ভয়ংকর চিত্র, যেখানে আকাশমণি গাছকেই খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম হান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুতের খুঁটির জন্য চেষ্টা করছেন। কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটির ব্যবস্থা না করে কর্তৃপক্ষ বাঁশের খুঁটিতে সংযোগ দিয়েছেন। গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে দেখছি এভাবেই চলছে।’

শরীফুল ইসলাম হান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘আজব খুঁটিতে দাঁড়িয়ে আছে বৈদ্যুতিক তার। যতবারই খুঁটির কথা বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষ শুধু অপেক্ষা করতে বলেছেন। দ্রুতই খুঁটি স্থাপন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু বিদ্যুতের খুঁটি আজও বসানো হয়নি।’ 

জীর্ণশীর্ণ বাঁশ আর গাছ যখন বিদ্যুতের খুঁটিএ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মনিরা বেগম বলেন, ‘আমার ছোট দুটি সন্তানসহ স্থানীয় শিশুরা অধিকাংশ সময় ওই রাস্তায় খেলাধুলা করে। সেখানে বিদ্যুতের তার রয়েছে শিশুদের হাতের নাগালে। তাই সব সময় চিন্তায় থাকি, এই বিপজ্জনক তারে কখন যেন কী হয়ে যায়।’ 

গৃহবধূ লাকি ও পপি আক্তার বলেন, ‘পৌর শহরের আবাসিক এলাকার গাছকেও খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এটি অবশ্যই আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক এবং বিদ্যুৎ বিভাগের চরম গাফিলতি। দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এই গাছ ও বাঁশের খুঁটিগুলো পরিবর্তন করা প্রয়োজন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সখীপুরের (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, 'বর্তমানে খুঁটি বসানোর যাবতীয় কাজ প্রজেক্টের মাধ্যমে করা হয়। এরই মধ্যে সরবরাহকৃত লাইনে খুঁটি স্থাপনের জন্য একটি প্রজেক্টের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করতে দেরি করছে। তবে ওই লাইনের ড্রয়িং সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত খুঁটি বসানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত