Ajker Patrika

বিচার বিভাগে দ্রুত সংস্কার চান সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি খোকন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩: ৩৬
বিচার বিভাগে দ্রুত সংস্কার চান সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি খোকন

বিচার বিভাগে দ্রুত সংস্কারের দাবি করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান। 

খোকন বলেন, শত শত রাজনৈতিক কর্মী গুম হয়েছে, অনেককে আয়না ঘরে রাখা হয়েছে ১০–১১ বছর। মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকার দলীয়রা অনেককে হত্যা করেছে, আহত করেছে। বিচার বিভাগ সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ কারনে মানুষ কোনো বিচার পায়নি। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ অর্থনৈতিক খাতে ব্যাপক লুট–পাট করেছে। তারা যেসব ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছিল সেগুলো খালি হয়ে গেছে। সব টাকা তারা নিয়ে গেছে। সব স্তরেই দুর্নীতি হয়েছে। মানুষ আদালতে আসতে পারেনি, আদালতও স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো রুল জারি করেনি। কারণ বিচার বিভাগ ছিল পুরোপুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করেই সরকার ক্ষমতায় ছিল। তাদের নিয়ন্ত্রণের ফলেই মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। তার চিকিৎসা হয়নি। তাদের (আওয়ামী লীগের) পছন্দ মতো রায় না হলে বিচারকদের হয়রানি করত, অপমান করত।

বারের সভাপতি বলেন, বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় চাই। নিম্ন আদালতকে আইন মন্ত্রণালয় মুক্ত করতে হবে। যারা মিথ্যা মামলায় কথায় কথায় রাজনৈতিক কর্মীদের রিমান্ডে দিত, গায়েবি মামলায় জামিন দিত না, যারা আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করত, ঘুরে–ফিরে তারাই আছে। 

নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টে অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি–স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে। গত ১৬ বছর যারা শপথ ভঙ্গ করে রাজনৈতিক বিচার করেছেন, যারা আইনজীবীদের সঙ্গে সিন্ডিকেটের হয়ে কাজ করেছেন তাদের অপসারণ করতে হবে।  

তিনি বলেন, নতুন বিচারক নিয়োগ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পদক্ষেপ নেয়নি। বিচারক নিয়োগের কোনো নীতিমালা বা আইন করা হয়নি। অবশ্যই মেধাবী, সৎ ও যোগ্যদের বিচারক নিয়োগ করতে হবে। বিচার বিভাগ শক্তিশালী না হলে যারা জীবন দিয়েছে তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। 

দুদকের বিষয়ে বারের সভাপতি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন ছিল সরকারের আজ্ঞাবহ। সরকার যাকে ধরতে চায় তাদেরকে ধরেছে। দুদক গত ১৬ বছরে তার দায়িত্ব পালন করেনি। এটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হয়ে গেছে। তারা নিবেদিত ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য। দুদক চেয়ারম্যানসহ সকল কর্মকর্তা ও আইনজীবী প্যানেল পরিবর্তন করতে হবে। 

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে কত মানুষ ক্রসফায়ারে মারা গেছে, কোথায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে– কোনো রিপোর্ট নেই। ছাত্র আন্দোলনে কত মানুষ মেরেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, এটা দেখার দায়িত্ব ছিল না? তারা পালন করেনি। মানবাধিকার কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই। এটি ভেঙে দেওয়া উচিত। 

নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, সব নির্বাচন কমিশনার সরকারের দালালি করেছে। তারা ভোট জালিয়াতিতে সহযোগিতা করেছে। দুর্নীতিতে ব্যস্ত ছিল তারাও। তাদের শুধু বরখাস্ত নয়, তাদের অপরাধের জন্য বিচারের আওতায় আনতে হবে। তারা সারা দেশের শিক্ষকদেরও ভোট ডাকাতিতে যুক্ত করেছে। মহা অন্যায় করেছে তারা। 

ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে কত লোক মারা গেছে তার সংখ্যা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। দ্রুত এটি প্রকাশ করা হোক। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির রিপোর্ট এখনো প্রকাশ করা হয়নি। দেশের টাকা কারা চুরি করল সেটা প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত