Ajker Patrika

জিয়ার ম্যুরাল ভাঙার জন্য তৃতীয় পক্ষকে দুষলেন শামীম ওসমান 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ৫০
জিয়ার ম্যুরাল ভাঙার জন্য তৃতীয় পক্ষকে দুষলেন শামীম ওসমান 

নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার জন্য তৃতীয় পক্ষকে দায়ী করেছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। আজ শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তিনি। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এ ঘটনার জন্য তাঁকে দায়ী করেন বিএনপির নেতারা। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গতকাল (৪ এপ্রিল) আমাদের টাউন হল কমিটির মিটিং (সভা) হয়েছে। সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে মিলনায়তনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার দুদিন আগে এ বিষয়ে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। 

‘গতকাল আমি সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে পারি, ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এর জন্য আমাকে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু আমরা তো জানি ৪ (এপ্রিল) তারিখে সিদ্ধান্ত হবে এটা ভেঙে ফেলার। সিদ্ধান্ত যদি আগেই হয়ে থাকে তাহলে কেন আমরা ৩ এপ্রিল ম্যুরাল ভাঙতে যাব? নিশ্চয়ই এই চিঠি বাইরে কেউ পেয়ে ম্যুরাল ভেঙে এই কাজ বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। 

‘আর আমার যদি ভাঙতে হয়, তাহলে এত দিন ভাঙলাম না কেন? এটা কেউ ভেঙেছে, অথবা নিজে নিজে পড়ে গেছে কিংবা ঠাডা (বজ্রপাত) পড়ে ভেঙে গেছে। তবে ঠাডা পড়ে নাই এটা কনফার্ম।’ 

তিনি বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে যেই ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে, সেটা তো এত দিন থাকারই কথা না। পঞ্চম সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্ট জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। আদালত বলেছে, জিয়ার সমস্ত কার্যকলাপ অবৈধ, তার কোনো ম্যুরালই থাকতে পারে না। কেউ যদি ব্যক্তিগত বাড়ির ছাদে লাগাতে চায়, তাহলে লাগাতে পারে। আর তাদের ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটামের শক্তি আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী দেখতে চাই।’ 

তাঁকে দায়ী করা বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে শামীম ওসমান বলেন, ‘যারা আমাকে দায়ী করছে, তাদের আমি সেই পর্যায়ের নেতা মনে করি না। তাদের কথার জবাব দেওয়ার রুচি আমার নাই। তারা এমনই নেতা যে সরকারকে উল্টো হেল্প (সহযোগিতা) করেছে। ২ নম্বর রেলগেটে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি হয়েছিল। সেই ঘটনায় নিজেদের রক্ষা করার জন্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির খানকে ধরিয়ে দেয় তাদেরই একজন। সে কোথায় থাকে, কী করে সবকিছু জানিয়ে দেয় প্রশাসনের কাছে। এই হলো তাদের অবস্থা।’ 

তিনি বলেন, ‘তারা নাকি আমার সম্পর্কে অশ্লীল কথা বলেছে। তাদেরই কেউ কেউ ফোন করে বলেছে ভাইকে (শামীম ওসমান) মাইন্ড করতে মানা কইরেন। ভাইয়ের বিরুদ্ধে কিছু বললে, আমাদের দাম বাড়ে সেন্ট্রালে। আমার বিরুদ্ধে বলে যদি বড় নেতা হওয়া যায় তাহলে বলুক, আমার আপত্তি নাই।’ 

শামীম ওসমান বলেন, ‘জাতীয় সংসদে বক্তব্য প্রদানকালে বলেছিলাম, জাতির পিতা নারায়ণগঞ্জে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। যেখানে সভাপতিত্ব করেন আমার বাবা এ কে এম সামসুজ্জোহা। ২০১৪ সালে টাউন হল (জিয়া হল) পরিত্যক্ত করা হয়েছিল। এটা জেলা প্রশাসকের সম্পত্তি। শর্ষের মধ্যে যেমন ভূত থাকে, প্রশাসনের মধ্যেও ভূত আছে। অতি আওয়ামী প্রশাসনের কারণে গত ১০ বছরে এই হলের সুরাহা হয়নি। আমি সংসদে যখন বললাম, এখানে ছয় দফা মঞ্চ করা হোক। আমরা মনে করেছি, এখানে নির্মিত মঞ্চে সাংস্কৃতিক চর্চা হবে। পুরো বাউন্ডারিতে আমাদের ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা হবে। সেই ভাষণ দেওয়ার পরে কিছু এক্সটিম লেফট, যারা তাদের সন্তান নিয়ে রাজনীতি করে, তারা জলঘোলা করার চেষ্টা করেছিল।’ 

সরকারদলীয় এমপি আরও বলেন, ‘একের পর এক ষড়যন্ত্রে শুধু ডান, বাম আর জামায়াত নয়। এরা একটা গ্রুপ, এরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করে এসব কাজ বাধাগ্রস্ত করতে। অশান্তির রাজনীতি যারা করতে চান, তারা সাবধান হয়ে যান। অন্য কোথাও গিয়ে করেন। এমন কিছু করবেন না যাতে নারায়ণগঞ্জ অশান্ত হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত