Ajker Patrika

আইকনিক ভবনসহ ভাঙ্গা স্টেশন হবে আধুনিক: রেলমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ভাঙ্গা থেকে ফিরে
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ৪৬
আইকনিক ভবনসহ ভাঙ্গা স্টেশন হবে আধুনিক: রেলমন্ত্রী

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ভাঙ্গা স্টেশন অত্যন্ত আধুনিক এবং আইকনিক বিল্ডিং দিয়ে তৈরি হবে। আজ বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতু হয়ে প্রথমবার ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যায় ট্রেন। ভাঙ্গায় নেমে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। 

রেলমন্ত্রী বলেন, এটি জনগণের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেতু। পদ্মা সেতু মানুষের স্বপ্নের সেতু। প্রধানমন্ত্রী এক বছর আগে উদ্বোধন করেছেন। এখন পদ্মা রেল সেতু ও কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন প্রস্তুত হয়েছে। 

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘ঢাকা থেকে যশোর ১৭২ কিলোমিটার এই রেললাইনের আজ ঢাকা থেকে ভাঙ্গা আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রায়াল রান করলাম। এটা প্রস্তুত হয়েছে সেটা দেখলাম। আমাদের সঙ্গে যাত্রী হয়ে সাংবাদিকেরা এসেছেন। রেলের ডিজি, সেনাবাহিনী সংশ্লিষ্টদের যারা এই প্রকল্পের জন্য নিরলস কাজ করেছেন। সবাইকে ধন্যবাদ।’ 

এর আগের কোনো সরকার রেল নিয়ে কাজ করেনি উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১১ সালে রেল মন্ত্রণালয় গঠন করে রেলের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। রেলের আমাদের যে পরিকল্পনা মোটা দাগে, আমরা সমগ্র জেলায় রেল সংযোগ পৌঁছে দিতে চাই।’ 

পদ্মা সেতুতে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ট্রেন চালান বাংলাদেশ রেলওয়ের লোকোমাস্টার মো. এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চালানো স্বপ্নের বাস্তবায়ন। স্বপ্নের পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেন চালাব—এটা আমার জীবনের বাড়তি আনন্দ। আমি নিজেকে অনেক ধন্য মনে করছি। আমি অনেক আনন্দিত।’ 

ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। পথে কয়েকটি জায়গায় গতি কমেছে। মাওয়া এবং জাজিরা স্টেশনে কিছুক্ষণের জন্য থেমেছিল পরীক্ষামূলক এই ট্রেন বলে জানান এনামুল। 

এনামুল হক বলেন, ‘পুরোদমে ট্রেন চলাচল শুরু হলে ট্রেনের গতি আরও বাড়বে। সামনে যখন সিগন্যালিং ব্যবস্থা এবং রেল ট্র্যাক ক্লিয়ার হয়ে যাবে তখন এই পথ যেতে দেড় ঘণ্টার মতো লাগবে।’ 

পরীক্ষামূলক এই ট্রেনে সহকারী লোকোমাস্টার আবুল কাশেম বলেন, তিনি এর আগে প্রথম ট্রায়ালেও ছিলেন। আজ পরীক্ষামূলক ট্রেনেও তিনি আছেন। 

স্থানীয় কৃষক উজ্জ্বল মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা যাওয়া এখন অনেক সহজ হবে ৷ বাস চললেও তাতে ভাড়া বেশি। ট্রেনে কম টাকায় ঢাকা ঘুরে আসা যাবে।

আরেক স্থানীয় শফিকুল ইসলাম বলেন, এই অঞ্চল আগে পুরোটা পানিবেষ্টিত ছিল। এখন এত বড় বড় রাস্তা আর রেললাইন। এ যেন নতুন এক জায়গায় রূপ নিয়েছে। 

পদ্মা সেতুতে আগামী ১০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

পদ্মা বহুমুখী সেতুতে সড়ক ও রেল একই সঙ্গে চলাচলের কথা ছিল। কিন্তু সড়ক অংশ চালু হলেও উদ্বোধন হয়নি রেল চলাচল। তবে আগামী ১০ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ আরও সহজ হবে। 

পুরো প্রকল্প যশোর পর্যন্ত। সেটি উদ্বোধন হবে ২০২৪ সালের জুনে। আর এ বছর চালু হবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। 

এই রেললাইন নির্মাণে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়ন শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত