Ajker Patrika

জাবি নিরাপত্তা অফিসের তালা ভেঙে মারধর করা হয় শামীমকে 

জাবি সংবাদদাতা 
জাবি নিরাপত্তা অফিসের তালা ভেঙে মারধর করা হয় শামীমকে 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসে রাখার পর সেখানকার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মারধর করা হয়। এর আগে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটে তাঁকে মারধর করা হয়। এরপর কয়েক দফায় চলে মারধর।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শামীম মোল্লার মৃত্যুতে কর্তৃপক্ষ শোক প্রকাশ করে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলেও জানানো হয়।

শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সাভারের আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-২০১০ শিক্ষাবর্ষের ৩৯-তম ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা ক্যাম্পাসের প্রান্তিক গেটে গণপিটুনির শিকার হন। পরবর্তীতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শোক এবং দুঃখ প্রকাশ করে। তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গতকাল আনুমানিক সন্ধ্যা ৫টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেটে শামীম মোল্লাকে কতিপয় ব্যক্তি মারধর করতে থাকে। এ খবর প্রক্টরিয়াল টিম জানতে পেরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলমসহ প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে নিরাপত্তার স্বার্থে প্রক্টর অফিসের একটি কক্ষে রাখেন। এ সময় আশুলিয়া থানা-পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করা হয়। কিছুক্ষণ পর কতিপয় ব্যক্তি প্রক্টরিয়াল টিমকে না জানিয়ে জোরপূর্বক শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসের পাশে অবস্থিত নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে যায়। তৎক্ষণাৎ প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলম ঘটনাটি জানতে পেরে নিরাপত্তা অফিসে গিয়ে বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দেয় এবং নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ করে দেয়।

নিরাপত্তা অফিসের কলাপসিবল গেট ভেঙে কতিপয় ব্যক্তি ভেতরে প্রবেশ করে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, শামীম মোল্লাকে আবারও মারধর করা হয়। এ সময় প্রক্টরের নেতৃত্বাধীন প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখার কর্মকর্তাগণ নিজেরা ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লার সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষুব্ধ জনতাকে নিবৃত্ত করে। রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টায় পুলিশ প্রক্টর অফিসে আসে। পুলিশ খোঁজ-খবর নিয়ে জানায়, শামীম মোল্লার নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রাত আনুমানিক ৮টায় প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা শাখা আবারও ঢালস্বরূপ শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দেয়। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ফোন করে জানান যে, শামীম মোল্লা স্থানীয় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেকোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে। কর্তৃপক্ষ শামীম মোল্লার ওপর হামলার নিন্দা জানাচ্ছে। একই সঙ্গে, এ হামলার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত