Ajker Patrika

ধারণক্ষমতার চার গুণ বন্দী নারায়ণগঞ্জ কারাগারে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০: ১১
ধারণক্ষমতার চার গুণ বন্দী নারায়ণগঞ্জ কারাগারে

ধারণক্ষমতার চার গুণ বন্দী রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে। তবে আসন সংকুলান নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে দাবি কারা কর্তৃপক্ষের। জামিনে বেরিয়ে আসা আসামিদের ভাষ্য, বন্দীরা ঘুমানো, গোসলসহ বিভিন্ন কাজে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

জেলা কারা সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ কারাগারে নারী-পুরুষসহ মোট বন্দীর ধারণক্ষমতা ৫৪০ জন। এর মধ্যে নারীদের জন্য ৩০ ও পুরুষদের জন্য ৫১০ জনের ধারণক্ষমতা রাখা হয়েছে ওয়ার্ডগুলোতে। কিন্তু বর্তমানে ২ হাজার ২২৫ জন বন্দী রয়েছেন কারাগারে। তাঁদের মধ্যে নারী ৮৯ জন ও পুরুষ ২ হাজার ১৩৬ জন। এ ছাড়া হাসপাতাল বেড আছে ২০টি।

আজ মঙ্গলবার রাতে কারাগারের ডেপুটি জেলার সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। বাড়তি বন্দীদের স্থান সংকুলান কীভাবে হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তেমন সমস্যা হচ্ছে না। সম্প্রতি কারাগারে ৬ তলা একটি বন্দী ব্যারাক ও ৬ তলা সেল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেই কারণে বন্দীদের সেভাবে কষ্ট হচ্ছে না। যাঁরা বন্দী আছেন, তাঁরা ভালোভাবেই থাকতে পারছেন।’

তবে বন্দীদের বিষয়ে জানান কারাবাস করে আসা মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারাগারে ধারণক্ষমতার বেশি বন্দী থাকায় কী পরিমাণ যে কষ্ট হচ্ছে, তা বলার বাইরে। আমি রাজনৈতিক মামলায় দুই মাস আগে কারাগারে ছিলাম। সে সময় দেখেছি, বন্দীরা এক কাত হয়ে ঘুমায়। ইলিশ ফাইলের মতো (ইলিশ মাছ যেভাবে সংরক্ষণ করা হয়)। এখন তো আরও বন্দী বেড়েছে। তাঁদের অবস্থা শোচনীয়। বন্দীদের জন্য সরকারি খাবার খুব কষ্ট করে খেতে হয়। আর ক্যানটিনের খাবারের দাম কয়েক গুণ বেশি। এগুলো সাধারণ বন্দীদের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব না।’

সাগর আরও বলেন, ‘বন্দীদের জন্য সরকারিভাবে সাবান, কম্বল দেওয়ার নিয়ম আছে। কিন্তু সেগুলোও পাওয়া যায় না। ওয়ার্ড ও সেলগুলোতে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় সিট-বাণিজ্য চলে। রাজনৈতিক মামলার আসামি হলে এই বাণিজ্য আরও বেড়ে যায়। মোটকথা, মানবাধিকার বলতে কিছুই থাকে না।’

সম্প্রতি জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘২৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৫টি মামলায় মোট ২৫৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।’ তাঁর সেই ব্রিফিংয়ের পর আরও বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের হাতে। যাঁরা সবাই নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দী।

২০০৩ সালের ২১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার চালু হয়। কারাগারটি মোট ১৩ একর জায়গার ওপর নির্মিত। এর মধ্যে ৮ একর জায়গা কারা অভ্যন্তরে ও ৫ একর কারাগারের বাইরে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত