Ajker Patrika

দেড় মাস বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি বন্ধ, দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবে পদ্মাসেতু

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
দেড় মাস বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি বন্ধ, দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবে পদ্মাসেতু

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে নৌযানের ভোগান্তি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার একমাত্র ভরসা এখন পদ্মা সেতু। গত আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ থেকে ফেরি বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের যে দুর্ভোগ হচ্ছে তা পদ্মা সেতু চালু না হলে স্থায়ীভাবে সমাধান হচ্ছে না। আবার ফেরি চালু হলেও শীত মৌসুমে বরাবরের মতো কুয়াশা আর ডুবোচরে বাধাগ্রস্ত হতে হয়। ফলে আগামী বছর সেতু চালু হলেই এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা করছেন এ পথ দিয়ে চলাচলরত লোকজন। 

শিবচরের বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌরুটে স্রোতের তীব্রতার কারণে ফেরি চলাচল হুমকিতে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য গত আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ দুপুর থেকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে পদ্মায় পানি কমলেও স্রোত না কমায় ফেরি চালু হয়নি। ফেরি বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করে পণ্যবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করছে। প্রত্যেকদিন বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ৪টি রোরো ফেরিসহ মোট ১৬ থেকে ১৮টি ফেরি চলাচল করত। শুধু তাই নয়, ফেরি চলাচল বন্ধ হওয়ার কয়েক দিন আগে এ নৌরুটে আরও দুটি নতুন ফেরি যুক্ত করা হয়েছিল। 

এ নৌরুটে বর্তমানে চালু রয়েছে লঞ্চ চলাচল। ফেরি বন্ধ থাকায় লঞ্চে যাত্রীদের চাপ স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি। 

ফেরি বন্ধের বিষয়ে ঢাকাগামী যাত্রীদের সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা বলেন, প্রায় দেড় মাস ধরে ফেরি বন্ধ। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের জন্য দুই/তিনটা ছোট ফেরি চালু রাখলেও মানুষের ভোগান্তি কমতো। এখন অনেকেই বলে দুই/এক দিনের মধ্যেই নাকি ফেরি চালু হবে। কিন্তু ফেরিঘাটে গিয়ে তেমন কোনো আভাস পেলাম না। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকা যেতে এই দুর্ভোগ ফেরি চালু হলেও কমবে না। আজ স্রোত, কাল ডুবোচর, পরশু কুয়াশা এই সব নিয়েই তো এ পর্যন্ত এসেছি। শুধু মাত্র আগামী বছর সেতু চালু হলেই আমাদের এ দুর্ভোগ কমবে। 
 
লঞ্চে ঢাকাগামী যাত্রী মো. তানভীর বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে শিবচর থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা। নৌপথের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ঢাকায় যাওয়া-আসা করা যাবে। আমরা এখন সেই অপেক্ষায় আছি। ফেরির আশাবাদ দিয়েছি। 

বরিশাল থেকে মাইক্রোবাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে একই পরিবারের কয়েকজনকে নিয়ে বাংলাবাজার লঞ্চঘাটে আসেন এক চালক আব্দুর রহিম। এ সময় তিনি বলেন, আজ ফেরি চালু থাকলে সরাসরি ঢাকা যেতাম। বিকল্প রুটের দূরত্ব বেশি থাকায় বাংলাবাজার লঞ্চঘাট পর্যন্ত ভাড়ায় এসেছি। পদ্মাসেতু চালু হলে এই দুর্ভোগ আর থাকবে না। ফরিদপুরের ভাঙা থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত যে এক্সপ্রেসওয়ে তাতে করে সেতু চালু হলে ঢাকা যেতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে না। 

বিআইডব্লিউটিএ'র শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা যায়, পদ্মায় স্রোতের মাত্রা কমে এলেই ফেরি চলাচল শুরু করা হবে। সার্বক্ষণিক নৌরুটে মনিটরিং করা হচ্ছে। নদীর পানি কমলেও স্রোত আশানুরূপ কমেনি। 

অপরদিকে বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ঘাটের সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসের অক্টোবরের ৩ / ৪ তারিখের দিকে ফেরি চালু হওয়ার একটি সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ১ তারিখেই চালু হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু আপাতত তেমন কোনো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই নৌরুটে ফেরি চালু করা হবে। 

লঞ্চে পার হওয়া একাধিক যাত্রী বলেন, পদ্মায় পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে স্রোত কমেছে। আগের মতো প্রচণ্ড স্রোত এখন নেই। তারপরও ফেরি কেন চালু হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। 

বিআইডব্লিউটিএ'র মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া) আহমদ আলী বলেন, এখনো ফেরি চালু হওয়ার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। পদ্মায় স্রোত এখনো রয়েছে। ফেরি চালুর বিষয়ে নতুন কোন সংবাদ আপাতত দেওয়া যাচ্ছে না। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত