Ajker Patrika

বাড়ির আঙিনা ও পরিত্যক্ত জমিতে বস্তায় আদা চাষ, আয় বাড়ছে কৃষকের

মো. আনোয়ারুল ইসলাম ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা)
ব্রাহ্মণপাড়ায় কৃষকেরা বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব্রাহ্মণপাড়ায় কৃষকেরা বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষ করছেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত জমিও এখন ফসল ফলানোর ভূমি হয়ে উঠেছে। আগে যেখানে ঘাস, আগাছা জন্মাত বা কোনো জায়গা অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখা হতো, সেখানে এখন বস্তায় চাষ হচ্ছে আদা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগ ও পরামর্শে এ বছর উপজেলায় প্রায় ৭ হাজার বস্তায় আদা রোপণ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, আলোছায়া ঘেরা উঁচু জমি বা বাগানের নিচের অংশ আদা চাষের জন্য উপযোগী। বড় কোনো জমি প্রয়োজন হয় না, ছোট জায়গাতেই মিলছে ভালো ফলন। প্রতিটি বস্তায় মাত্র ৫০ গ্রাম বীজ রোপণ করে ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া সম্ভব। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আদা বিক্রি করে আয় করছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকেরা জানাচ্ছেন, এই নতুন পদ্ধতি শুধু অব্যবহৃত জমিকে কাজে লাগাচ্ছে না, বরং গ্রামীণ অর্থনীতিতেও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে। বাড়ির আঙিনা, বাগানের কোনা কিংবা পরিত্যক্ত জমি—সব জায়গাই এখন হয়ে উঠছে আয়-উপার্জনের ক্ষেত্র।

সাহেবাবাদ গ্রামের কৃষক নাঈম হাসান বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথমবার বস্তায় আদা চাষ করছি। আগে এখানে কিছুই করতাম না। এবার ৫০ বস্তায় চাষ করেছি, গাছের অবস্থা ভালো। লাভ হলে আগামীতে আরও করব।’

দুলালপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, ‘আমাদের এলাকায় আগে আদা চাষের প্রচলন ছিল না। কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রদর্শনী হিসেবে ৩০ বস্তা এবং নিজ উদ্যোগে ১২০ বস্তায় চাষ করেছি। আমার বাড়ির ফলবাগানের নিচের ছায়াযুক্ত জায়গায় এই চাষ করেছি, যেখানে আগে কোনো ফসল হতো না। এ কাজে খরচও বেশি নয়—প্রতি বস্তায় ৫০-৫৫ টাকা। আশা করছি ভালো ফলন পাব।’

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা আক্তার ও নাঈমা হক আঁখি জানান, ‘বস্তায় আদা চাষ পদ্ধতি তুলনামূলকভাবে সহজ এবং খরচও কম। আমরা কৃষকদের বীজ, সার ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের পাশাপাশি নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। কোন সময়ে পানি দিতে হবে, সার প্রয়োগের ধরন কেমন হবে কিংবা রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণের উপায়—সব বিষয়েই আমরা সরাসরি সহায়তা করছি। অনেক কৃষকই প্রথমবার এভাবে চাষ করছেন এবং ইতিমধ্যে গাছের বৃদ্ধি দেখে তাঁরা উৎসাহিত হয়েছেন। আশা করছি এই পদ্ধতি ভবিষ্যতে ব্রাহ্মণপাড়ার গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘ব্রাহ্মণপাড়ায় আগে আদা আবাদের প্রচলন ছিল না। মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তির সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ, সার ও বস্তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কারিগরি সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে, আগামীতে এই পদ্ধতিতে আদা চাষ আরও বাড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

এপিএসের বেতন ১ বছরে বেড়েছে ১৮ বছরের সমান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত