Ajker Patrika

ডিম–মুরগির দাম বাড়লেও স্বস্তিতে নেই নরসিংদীর খামারিরা

নরসিংদী প্রতিনিধি
ডিম–মুরগির দাম বাড়লেও স্বস্তিতে নেই নরসিংদীর খামারিরা

মুরগি পালনে প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম ও ব্রয়লারের দাম বাড়লেও স্বস্তিতে নেই নরসিংদী জেলার খামারিরা। লাভের আশায় পুঁজি বিনিয়োগ করেও লাভের মুখ দেখতে না পারায় ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছেন অনেক খামারি। অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কোনোরকমে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। 

ব্রয়লার ও লেয়ার পোলট্রি খামারকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে জেলার অনেক বেকার যুবকের। এখানকার খামারে উৎপাদিত মুরগি ও ডিম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দখল করেছে রাজধানীর বাজারের একটি বড় অংশ। কিন্তু দফায় দফায় মুরগির খাবার, ওষুধ ও একদিনের বাচ্চার দাম বাড়ার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক খামার। এ ছাড়া বাচ্চা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো মুরগি পালন ও বিক্রির সময় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। খামারিরা পুঁজি বিনিয়োগ এবং শ্রম দিয়ে বছরের পর বছর লোকসান গুনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। নতুন করে যোগ হয়েছে জ্বালানি তেলের দামের প্রভাব। মুরগি ও ডিমের উৎপাদন খরচ বাড়লেও আশানুরূপ লাভ না পাওয়ায় হতাশ খামারিরা। 

নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দি এলাকার কাজী পোলট্রি ফার্মের মালিক মো. রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ব্রয়লার ও লেয়ার মুরগি পালনের জন্য ওষুধ ও খাবারসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম দফায় দফায় বেড়েছে। সর্বশেষ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার ফলে পণ্যের দাম আরও বেড়েছে। এতে খামারে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন খরচ হয় ৯ টাকার ওপরে। গরমে মুরগির ওষুধের খরচ বেশি হওয়ায় ডিম উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়।’ 

রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘খামার থেকে গত ১৫ আগস্ট প্রতি পিছ ডিম বিক্রি করতে পেরেছি ১১ টাকা ৬০ পয়সায়, ১৬ আগস্ট ১০ টাকা ৮০ পয়সা, ১৭ আগস্ট ৯ টাকা ৬০ পয়সা এবং আজ বৃহস্পতিবার প্রতি পিছ ডিম বিক্রি হয়েছে ৮ টাকা ৬০ পয়সায়। আজ প্রতি পিছ ডিমে ৭৫ পয়সা লোকসান হয়েছে।’ 

বেলাব উপজেলার হোসেন নগর গ্রামের নাদিম পোলট্রি ফার্মের মালিক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘আজ সকালে খামারে ১০০ ডিম বিক্রি করেছি ৯২০ টাকা দরে। ডিম উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। খাবারের দাম ও ওষুধের দাম বেশি হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে।’ 

একই উপজেলার বারৈচা বাজারের পোলট্রি ডিলার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোম্পানিকে অগ্রিম টাকা দিয়ে বাচ্চা, ফিড ও ওষুধ আনার পর খামারিদের বাকিতে দিতে হয়। খাবার ও ওষুধের দাম বাড়ার কারণে খামারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ পড়ে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। বিক্রি করতে হয় উৎপাদন খরচের চেয়েও কম মূল্যে। এ ছাড়া নানা রোগে মুরগির মরক লাগে। সম্প্রতি মুরগির দাম বাড়লেও সেটাও স্থায়ী হয়নি। আজ খামার থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে মুরগি বিক্রি হয়েছে। মুরগির দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোম্পানিগুলো বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দিতে দেরি করে না।’ 

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘নরসিংদী জেলায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের নিবন্ধিত ব্রয়লার মুরগির খামারের সংখ্যা ৩ হাজার ৪০০ ও লেয়ার খামারের সংখ্যা ১ হাজার ৫০০। এর বাইরেও অনেক খামারি রয়েছেন। খামারিরা মূলত দফায় দফায় খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে সংকটের মধ্য দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সাশ্রয়ী মূল্যে মুরগির বাচ্চা ও খাবার পেলে খামারিদের লোকসানে পড়তে হতো না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত