Ajker Patrika

তিন আসামির দায় স্বীকার, একজন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০২১, ২১: ৫৪
তিন আসামির দায় স্বীকার, একজন রিমান্ডে

রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কেশব রায় পাপনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তিন আসামি। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের খাসকামরায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তাঁরা। একই মামলায় আরেক আসামিকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। 

পাপনের মোবাইল ছিনতাইয়ের সময় তিনি বাধা দেন। আর এ কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয় বলে তাঁরা স্বীকারোক্তিতে বলেছেন। যাঁরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁরা হলেন জুয়েল, জাহাঙ্গীর ওরফে মুটো জাহাঙ্গীর ও নুরুজ্জামান ওরফে মামুন। আর তুহিন নামের আরেক আসামিকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। 

শুক্রবার বিকেলে গ্রেপ্তার চার আসামিকে আদালতে হাজির করে তেজগাঁও থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার তিনজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে আবেদন করেন। একই সঙ্গে আসামি তুহিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনও করা হয়। 

মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তার তাঁর খাসকামরায় তিন আসামির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে আসামিরা জানান, তাঁরা একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দলের সদস্য। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, তেজগাঁও, সাতরাস্তা, হাতিরঝিল এলাকায় ছিনতাই করেন। ৫ অক্টোবর রাত ৯টার পর সোনারগাঁও ক্রসিংয়ে মেরিন রেস্তোরাঁর পাশ দিয়ে পাপন যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁরা পাপনের কাছ থেকে মোবাইল ছিনতাই করেন। পাপন একজনকে জাপটে ধরেন। তাঁকে ছাড়াতে গিয়ে হাতে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে পাপনের পেটে, বুকে ও হাতে বারবার আঘাত করা হয়। পাপন ঢলে পড়লে তাঁরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। জাহাঙ্গীর ও নুরুজ্জামান দুজনই সুইচ গিয়ার চাকু ব্যবহার করেন। তাঁরা দুজনই পাপনকে ছুরিকাঘাত করেছেন। এ সময় তুহিন পাপনের মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যান। 

আসামি জাহাঙ্গীর ও নুরুজ্জামান আদালতকে জানান, তাঁদের ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকু পুলিশ উদ্ধার করেছে। তবে মোবাইল তুহিন নামে আরেক ছিনতাইকারী নিয়েছে। আসামি জুয়েল তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এবং পাপনকে কিল-ঘুষি মেরেছেন। 

তিনজনের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। 

এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জানান, তুহিনও এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। তবে পাপনের ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফোনটি তুহিনের কাছে রয়েছে। সেটি উদ্ধারের জন্য তাঁকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। আদালত দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকা থেকে জুয়েল, বেগুনবাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর ও নোয়াখালী থেকে নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৫ অক্টোবর রাতে তেজগাঁও থানার মেরিন রেস্তোরাঁর সামনে কেশব রায় পাপনকে আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে কয়েকজন পথচারীরা তাঁকে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বুধবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন পাপনের মামা রাজধানীর মণিপুরীপাড়ার বাসিন্দা সন্তোষ কুমার সজল। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঘটনায় জড়িত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। পরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

কেশব রায় পাপন একটি কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম কাজ করতেন। ওই দিন কাজ শেষে রাতে সাইকেলে করে মণিপুরীপাড়ার বাসায় ফিরছিলেন পাপন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত