Ajker Patrika

সময় বাড়ে, হয় না সেতু

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ)
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২১, ১৯: ৩৬
সময় বাড়ে, হয় না সেতু

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মোল্লার হাটে ধলেশ্বরী শাখা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ গত তিন বছরেও শেষ হয়নি। এতে মুন্সিগঞ্জের চার উপজেলার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ নিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। সেতুটি নির্মাণ শেষ হলে ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জ জেলার মধ্যে যাতায়াত সহজতর হবে। আর এতে উপকৃত হবে মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। তাই জেলাবাসী সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।

গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ধীরগতিতে কিছু সংখ্যক শ্রমিক কাজ করছেন। এই অল্প শ্রমিক দিয়ে যদি কাজ করা হয় তবে আরও অনেক সময় লাগতে পারে ধারণা এলাকাবাসীর।

জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে মুন্সিগঞ্জের চার উপজেলার যানজটবিহীন দ্রুত যাতায়াতের জন্য ২৫২ মিটারের একটি সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করা হয়। ২০১৮ সালের ১৮ জুনে মোল্লার হাট নামক এলাকায় সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু গত তিন বছরেও এ সেতুর কাজ শেষ হয়নি। ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বরে দ্বিতীয়বারের মতো নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তৃতীয় মেয়াদের মাঝামাঝি এসে কাজ হয়েছে মাত্র ৩৪ শতাংশ। যদিও এই সেতু ব্যবহার করে সহজে ঢাকায় যেতে ১৫ বছর আগেই নির্মাণ করা হয়েছিল ১৬ কিলোমিটার পিচঢালাই সড়ক। অনেক চড়াই–উতরাই পেরিয়ে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকে কার্যাদেশের সময় তিন বছর শেষে সেতুটির আটটি খুঁটির মধ্যে মাত্র চারটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এখনো নদীর পানিতে দুটিসহ আরও চারটির কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে।

জেলা সদর, টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং ও সিরাজদিখান উপজেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষের যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির নির্মাণকাজ কয়েক বছরই বর্ষা মৌসুমে শুরুর ১৫ দিন আগে গতি পায়, কিন্তু পরে আবার তা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা চৌরাস্তা থেকে সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর চৌরাস্তা দিয়ে মোল্লার হাট সেতুর গোড়ার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। সেখান থেকে ঢাকার পোস্তগোলা সেতু পর্যন্ত সড়কপথের দূরত্ব ৬ কিলোমিটার; যা অতিক্রম করতে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট। অথচ সিরাজদিখান হয়ে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ঢাকার দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার। আর যেতে সময় লাগে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। মুন্সিগঞ্জ থেকে ৩ ঘণ্টার আগে ঢাকা যাওয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। তাই মোল্লার হাট সেতুটি নির্ধারিত সময়ে নির্মাণ না হওয়ায় দুই পাড়ের লাখ লাখ মানুষকে ঝুঁকি নিয়েই ট্রলার কিংবা নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে।

সেতুটির শেষ সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নে। আর শুরু হয় ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের সীমানা মোল্লার হাটে। ২৫২ মিটার লম্বা আর ১০ মিটার প্রস্থের সেতুটি রিভাইজার হচ্ছে ৩৫২ মিটার। এর নির্মাণ ব্যয় ৩৩ কোটি ২৭ লাখ ৪২ হাজার ২৮৪ টাকা। সুরমা এন্টারপ্রাইজ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০ ডিসেম্বর ২০২০ দ্বিতীয় মেয়াদে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা নাজমুল মোল্লা বলেন, ‘আমরা সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার অপেক্ষায় আছি। দ্রুত শেষ হলে আমাদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তা ছাড়া এ জেলার মানুষ মাত্র ২০ মিনিটে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে।’

বালুচর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের এ অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য দ্রুত ঢাকার বাজারে পৌঁছাতে সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা দরকার। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে যাতায়াত সহজ হলে কৃষকেরা উৎসাহী হবেন। তা ছাড়া এ জেলার মানুষ দ্রুত ঢাকা যেতে পারবেন।’

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহজাহান আলী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সেতুটি নির্মাণ করতে ৩৩ কোটি টাকা খরচ ধরলেও এর ব্যয় আরও বাড়বে। সেতুর অ্যাপ্রোচে কিছু ডিজাইন পরিবর্তন করা হয়েছে। যার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন, ২০২২ সালের জুন নাগাদ নির্মাণকাজ শেষ হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত