Ajker Patrika

কাটা গাছে কাফনের কাপড় জড়িয়ে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১৮: ২৮
কাটা গাছে কাফনের কাপড় জড়িয়ে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য পূর্বনির্ধারিত স্থানের ৫৬টি গাছ রাতের আঁধারে কাটা হয়েছে। এতে কাটা গাছে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার ভোররাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকার সুন্দরবন নামক স্থানে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) জন্য নির্ধারিত স্থানে গাছগুলো কাটা হয়েছে।

পরে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের নজরে এলে বেলা সোয়া ১১টার দিকে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

এ সময় ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের নামফলক ভেঙে ফেলেন ছাত্ররা। পরে সেখানে ‘গাছ কাটলে খবর আছে’ দেয়াল লিখন করা হয়। 

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বুধবার ভোররাতে ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে গাছগুলো কাটা হয়েছে এবং গাছগুলোর ডালপালা ফেলে রেখে মূল অংশ ট্রাকে তুলে অন্যত্র নেওয়া হয়েছে। সেই ট্রাকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল গেট দিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে বের হয়। সে সময় ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দুজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কেটে ফেলা হয়েছে ৫৬টি গাছ। ছবি: আজকের পত্রিকাএ ছাড়া বেলা দেড়টার দিকে আরেক দল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নতুন ১১টি গাছ লাগিয়ে দেন। এরপর বেলা ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা একটি কাটা গাছে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। 

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘অপরিকল্পিত উন্নয়ন জাহাঙ্গীরনগরে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে ভবন নির্মাণ করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।’ 

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে। অথচ সেটার অপেক্ষা না করে রাতের আঁধারে গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।’ 

রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে কাটা গাছের দায়িত্ব এস্টেট কার্যালয়ের অধীনে থাকবে। 

তবে এ বিষয়ে এস্টেট কার্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবদুর রহমান বলেন, ‘নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তার মাধ্যমে জেনেছি, সেখানে গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। এ ছাড়া কাটা গাছগুলো আমাদের এখনো বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। গাছগুলো কোথায় আছে, তা জানি না।’ 

এ দিকে মীর মশাররফ হোসেন হল গেটের দায়িত্বরত আনসার সদস্য মো. সাবিয়ার রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে গাছসহ ট্রাকটি বের হয়ে যায়। ট্রাকের সঙ্গে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সহকারী অধ্যাপক এস এম এ মওদুদ আহমেদ ও পলাশ সাহা ছিলেন।’ 

কাটা গাছে কাফন জড়িয়ে জাহাঙ্গীরনগরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকাএ ব্যাপারে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সহকারী অধ্যাপক এস এম এ মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা সকালে ব্যক্তিগত কাজে ক্যাম্পাসের বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হই। ঘটনাচক্রে যখন মীর মশাররফ হোসেন হলের গেট দিয়ে বের হতে যাই, তখন গাছের ট্রাকটিও গেট দিয়ে বের হচ্ছিল। তবে গাছ কাটা এবং সেগুলো বাইরে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত নই।’ 

ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই স্থানে ভবন নির্মাণের জন্য সাবেক উপাচার্য জায়গা বরাদ্দ দিয়েছিলেন। নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় টেন্ডার হয়েছে। যাঁরা কাজ পেয়েছেন, তাঁরা গাছগুলো কেটেছেন। গাছগুলো এস্টেট অফিসকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। গাছগুলো ক্যাম্পাসেই থাকার কথা। কোথায় রাখা আছে, তা জানি না। তবে জেনে আপনাকে জানানোর চেষ্টা করব।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘রাতের আঁধারে গাছ কাটার বিষয়টি আমরা জানি না।’ 

উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গাছ কাটার বিষয়ে কিছু জানি না। এমনকি ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকেও কিছু জানানো হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের সময় আটক তরুণ

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
রাজধানীর বিমানবন্দর গোলচত্বরসংলগ্ন এলাকা থেকে রোববার মো. শান্তকে আটক করা হয়। ছবি: র‍্যাব
রাজধানীর বিমানবন্দর গোলচত্বরসংলগ্ন এলাকা থেকে রোববার মো. শান্তকে আটক করা হয়। ছবি: র‍্যাব

রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় স্কুলপড়ুয়া এক ছাত্রের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের সময় মো. শান্ত নামের এক তরুণকে আটক করা হয়েছে।

বিমানবন্দর গোলচত্বরসংলগ্ন এলাকা থেকে আজ রোববার বেলা ৩টার দিকে তাঁকে আটক করা হয়।

র‍্যাবের হাতে আটক হওয়া শান্ত ঢাকার শাহজাহানপুরের রাজারবাগ গোলাপবাগের আক্কেল আলী ওরফে চান মিয়ার ছেলে।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১-এর সহকারী পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া অফিসার) মো. পারভেজ রানা বলেন, বিমানবন্দর এলাকায় তন্ময় (১৫) নামের স্কুলপড়ুয়া এক ছাত্রের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ছিনতাইকালে শান্ত (২১) নামের এক পেশাদার ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটি তন্ময়কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

ছিনতাইকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য তাঁকে বিমানবন্দর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পারভেজ রানা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুষ্টিয়ায় পদ্মার চরে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান, গ্রেপ্তার ৯

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 
পদ্মার চরে অভিযান চালাতে নৌপথে পুলিশের যাত্রা। ছবি: সংগৃহীত
পদ্মার চরে অভিযান চালাতে নৌপথে পুলিশের যাত্রা। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর তীরবর্তী দুর্গম চরাঞ্চলে পুলিশের ব্যাপক সাঁড়াশি অভিযান চলেছে। আজ রোববার ভোর ৪টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলা এই অভিযানে নিয়মিত মামলা, সাজা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযানকালে চরের গভীর এলাকা থেকে অপরাধীদের ব্যবহৃত দুটি অস্থায়ী তাঁবু, একটি স্পিডবোট, দুটি নৌকা, তিনটি মোটরসাইকেল, তিনটি মোবাইল ফোন ও অস্ত্র রাখার বিশেষভাবে তৈরি দুটি চেম্বার উদ্ধার করা হয়।

জেলাজুড়ে চলা অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান এবং তদারকি করেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (অপারেশন) শেখ জয়নুদ্দীন, পিপিএম-সেবা। অভিযানে জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ৩১৫ জন সদস্য অংশ নেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এর আগে গত ৩০ অক্টোবর পদ্মার চরাঞ্চলে জেলা পুলিশের নেতৃত্বে আরও একটি বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়েছিল। বর্তমানে এলাকাটিতে পুলিশি টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ‘সকাল থেকে চলা অভিযানে দৌলতপুর থানা এলাকা থেকে আমরা পাঁচজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি।’ অন্যদিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা দৌলতপুর, ভেড়ামারা ও কুমারখালী এলাকায় সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করেছি। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

পদ্মার চরের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে ১ নভেম্বর দৈনিক আজকের পত্রিকায় একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ‘কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: পদ্মার চরে সক্রিয় ডজনখানেক বাহিনী’ শিরোনামে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, দৌলতপুরের পদ্মা নদীর দুর্গম চরাঞ্চল ও ভারত সীমান্তঘেঁষা অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। কাকন ও মণ্ডল বাহিনীর পাশাপাশি টুকু, সাইদ, লালচাঁদ, রাখি, কাইগি, রাজ্জাক, বাহান্ন বাহিনীসহ ডজনখানেক সশস্ত্র দলের সক্রিয়তা রয়েছে সেখানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদ্মার চরে অপারেশন ফার্স্ট লাইট: কাকন বাহিনীর ২১ সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও বাঘা প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৫
ছবি: মিলন শেখ
ছবি: মিলন শেখ

রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ার পদ্মার চরাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়ানো ‘কাকন বাহিনী’র ২১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রোববার ভোররাত থেকে রাজশাহীর বাঘা, পাবনার আমিনপুর ও ঈশ্বরদী এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিভিন্ন চরাঞ্চলে একযোগে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিযানে পাঁচটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, মাদকদ্রব্য ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি জানান, ‘কাকন বাহিনী’ দমনে পুলিশ, র‍্যাব ও এপিবিএন সদস্যদের নিয়ে যৌথ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। এতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টিমের ১ হাজার ২০০ সদস্য অংশ নিচ্ছেন। ডিআইজি বলেন, ‘অভিযান চলাকালে পাঁচটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, দেশি অস্ত্র, মাদক ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কাকন বাহিনীর ২১ সদস্যকে। অভিযান এখনো চলছে। আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে গত ২৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী মরিচা ইউনিয়নের চৌদ্দহাজার মৌজার নিচ খানপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন। পরবর্তী সময়ে বাহিনীপ্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলায় কাকন বাহিনীর বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। কাকন বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ে গত ২৯ অক্টোবর আজকের পত্রিকায় ‘পদ্মা চরের আতঙ্ক কাকন বাহিনী’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নন-এমপিও শিক্ষকদের মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড-জলকামান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৪০
নন-এমপিও শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানের পানি নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নন-এমপিও শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামানের পানি নিক্ষেপ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা করেন নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা। এ সময় শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করা হয় বলে অভিযোগ শিক্ষক প্রতিনিধিদের। তাঁদের দাবি, এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া জলকামান থেকে পানি এবং সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করে পুলিশ।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আন্দোলনরত শিক্ষকেরা জানান, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করে আসছেন। বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাঁদের এক দফা দাবি হলো—সব স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে হবে।

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছিলাম। আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার বেলা আড়াইটার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই পুলিশ শিক্ষকদের ওপর চড়াও হয়ে লাঠিপেটা শুরু করে। এতে আমি নিজেও আহত হই। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা আহত হয়েছেন।’

সেলিম মিয়া বলেন, ‘এমন ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ শিক্ষকদের এমপিও প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক (প্যাট্রল) বুলবুল আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘নন-এমপিও শিক্ষকেরা দুপুরের দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করতে যান। সচিবালয়ের ব্যারিকেডের সামনে আমরা তাঁদের কিছুক্ষণ অবস্থান করতে অনুমতি দিই। তাঁদের প্রতিনিধি পাঠাতে চাইলে আমরা যাওয়ার ব্যবস্থা করব বলেও জানাই।’

এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিনি আরও বলেন, তাঁদের নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার প্রতিশ্রুতি দিলেও সাধারণ শিক্ষকেরা তা অমান্য করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের জলকামান ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় একটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষকেরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন, এ সময় তাঁরা কয়েকবার সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত